সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মসূচি চলাকালীন কুড়মি বিক্ষোভে গড় শালবনিতে ধুন্ধুমার। এই ঘটনার পর তৎপর প্রশাসন। ইতিমধ্যেই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে পুলিশ। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর এবং খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক ধারায় মামলা শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। এখনও পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের তিনদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
শুক্রবার সন্ধেয় অভিষেকের সভায় যোগ দিতে গোপীবল্লভপুরের দিকে যাচ্ছিলেন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান তুলে একদল কুড়মি বিক্ষোভকারী তাঁর উপর হামলা চালায় বলেই অভিযোগ। রাতে গোপীবল্লভপুরের অধিবেশন থেকে কড়া বার্তা দেন অভিষেক। বিজেপিকে নিশানা করে এই ঘটনায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কুড়মি সমাজের পক্ষ থেকে বিবৃতি দাবি করেন। বলেন, “আপনারা যদি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিবৃতি না দেন, তাহলে ধরে নেব এই ঘটনা কুড়মি সমাজ ঘটিয়েছে। আপনি আন্দোলন করছেন পাটকেল মেরে! তাহলে সিপিএমের হার্মাদ আর বিজেপির জহ্লাদদের সঙ্গে আপনাদের পার্থক্য কোথায়? আমি বিশ্বাস করি এই ঘটনার মধ্যে কুড়মি সমাজ নেই। তাদের মুখোশধারী কোনও রাজনৈতিক দল রয়েছে।”
[আরও পড়ুন: হিন্দু প্রেমিকার সঙ্গে নৈশভোজে যাওয়ায় বেধড়ক মারধর মুসলিম যুবককে, বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত ২]
এরপরই বিজেপির উদ্দেশে আরও বলেন, “এটা কি জহ্লাদদের উল্লাসমঞ্চ? আদিবাসী কুড়মি সমাজ বলে যদি তাঁরা নিজেদের দাবি করেন। তবে তাঁদের মুখে জয় শ্রীরামের স্লোগান কেন? যদি কেউ ভাবে আদিবাসী কুড়মিদের পতাকা নিয়ে বিজেপির ক্ষোভ তৃণমূলের বিরুদ্ধে উগরে দেব, আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভয় দেখাব, তাদের বলব আমি ময়দানে আছি। কোন নেতার মদত রয়েছে সেই তথ্য আমি নিয়েছি। একজনকেও রেয়াত করা হবে না। আগামিদিনে এই বিজেপির আবর্জনাকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করার দায়িত্ব আমার।” কুড়মিদের উদ্দেশে একইসঙ্গে বলেন, ‘‘আপনারা তফশিলি উপজাতি মর্যাদা চাইছেন, আর একজন তফশিলি উপজাতির মহিলা মন্ত্রীর উপরই হামলা করছেন।’’ ঘটনার খবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ সুপারের কাছেও প্রশাসনিক স্তরে বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।
অভিষেকের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, “খেলা তুমি শুরু করেছো। আমি শেষ করব। যারা করেছে তাদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করেছি। আমি যখন হাঁটছিলাম, দেখলাম রাস্তার ওপার থেকে মদের বোতল ছুঁড়ে মারা হচ্ছে। আশা করব আদিবাসী কুড়মি সমাজের মাথার উপর যাঁরা রয়েছে, তাঁরা বিবৃতি দিয়ে স্পষ্ট করবে আজকের ঘটনার সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ আছে কিনা। যারা উন্মত্তভাবে গুণ্ডামি করেছে, মস্তানি করেছে, তাদের সঙ্গে কুড়মিদের যোগাযোগ আছে কি নেই।”
তিনি বলেন, “আমি তো ভদ্রতার খাতিরে নেমে গেলাম। আমি যেই এগোচ্ছি, ওরা পিছোচ্ছে। আমি দেড় কিলোমিটার হেঁটেছি। বললাম তো কী সমস্যা বলুন। এই বিক্ষোভের নাটক কারা করেছে, এর পিছনে কে রয়েছে সেটা খুঁজে বার করবই। আমাদের অনেক কর্মী আক্রান্ত। আপনারা শান্তি, সৌহার্দ্য বজায় রাখুন।” তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ রাতে টুইটে লেখেন, ‘‘নবজোয়ার যাত্রাকে ভয় পেয়ে বিঘ্ন ঘটানোর নানা অপচেষ্টা। বিজেপির পরিকল্পনায় অশান্তির চেষ্টা। বীরবাহার মতো জঙ্গলকন্যার বিরুদ্ধেও চক্রান্ত। তৃণমূলকর্মীরা সহিষ্ণুতা, সংযম, শৃঙ্খলা দেখাচ্ছেন।’’
দেখুন ভিডিও: