অর্ণব আইচ: ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস বিধায়কদের (Jharkhand Congress MLA) কাছ থেকে নগদ উদ্ধারের তদন্ত শুরু হতেই উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রাথমিক তদন্তের পর সিআইডির (CID) দাবি, হাওয়ালার মাধ্যমে লক্ষাধিক টাকা এসেছিল ওই তিন বিধায়কের কাছে। আর কলকাতায় বসেই সেই হাওয়ালা চক্র চালাচ্ছিলেন লালবাজারের এক ব্যবসায়ী। হাওড়ায় কালো গাড়ির ডিকি থেকে টাকা উদ্ধারের পরই চম্পট দিয়েছেন তিনি। তবে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে রাজি নয় সিআইডি। হাওয়ালা ব্যবসায়ীর খোঁজ শুরু করেছে তারা। সেই ব্যবসায়ীর খোঁজে মঙ্গলবার হেয়ার স্ট্রিটের বিকানের বিল্ডিংয়ে হানা দিয়েছে সিআইডি। হাওয়ালা সংক্রান্ত কোনও নথি, কংগ্রেস বিধায়কদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া টাকার কোনও নথি সেখান থেকে পাওয়া যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন সিআইডি কর্তারা। অফিসে তালা ঝুলিয়ে চম্পট দিয়েছেন ওই হাওয়ালা কারবারি। চাবিওয়ালা ডেকেও চাবি খোলা যায়নি। শেষপর্যন্ত তালা ভেঙে অফিসে ঢোকে সিআইডি। প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত হাওয়ালা কারবারির অফিসের তল্লাশি চলছে।
[আরও পড়ুন: ‘এটা বাংলার মানুষের ক্ষোভ’, SSC দুর্নীতিতে ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জুতো মেরে বলছেন শুভ্রা]
সিআইডি সূত্রের খবর, জেরার মুখে ধৃত বিধায়করা দাবি করেছেন, গত ২০ জুলাই প্রথম অসমে যান দুই ঝাড়খণ্ডের বিধায়ক রাজেশ কাচ্ছাপ ও ইরফান আনসারি। এক মধ্যস্থতাকারীর উপস্থিতিতে তাঁদের সঙ্গে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে বৈঠক হয়। জুলাইয়ের শেষে, গত শুক্রবার রাজেশ কাচ্ছাপ ও নমন কোঙ্গারি অন্য বিধায়ক ইরফান আনসারিকে নিয়ে ফের গুয়াহাটি যান, সেখানে দেনাপাওনা নিয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু এত টাকা একসঙ্গে বিমানে আনলে বিমানবন্দরে প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে আশঙ্কা করে সিদ্ধান্ত হয়, টাকা হাতবদল হবে কলকাতায়। আর কলকাতা থেকে সেই টাকা গাড়ি করে ‘পাচার’ হবে ঝাড়খণ্ডে। সিআইডির কাছে খবর, অসম থেকেই এই টাকার লেনদেন হয় হাওয়ালা মারফত। মধ্য কলকাতার ব্যবসায়ী, যিনি হাওয়ালা কারবারের সঙ্গেও যুক্ত, তাঁর মাধ্যমেই টাকা হাতবদলের পরিকল্পনা করা হয়।
সিআইডি মারফত পাওয়া খবর অনুযায়ী, আরেক যুব কংগ্রেস নেতা প্রতীক কুমার সদর স্ট্রিটের হোটেলে এক কর্মচারীর স্কুটি নিয়ে ওই হাওয়ালা কারবারির কাছ থেকে টাকা আনতে গিয়েছিলেন। পরে সদর স্ট্রিটের ওই হোটেলের পানশালাতেও সেই টাকার হাতবদল হয়েছিল বলেই উঠে আসছে প্রাথমিক তদন্তে।