সুমন করাতি, হুগলি: ক্যানসার আক্রান্ত স্ত্রীকে নিয়ে হুগলির শ্যামাপ্রসাদ হালদার যাচ্ছিলেন মুম্বই। চোখের সামনে নিমেষে ওলট-পালট হয়ে গিয়েছে সব পরিকল্পনা। দেশলাইয়ের বাক্সের মতো লাইন থেকে ছিটকে গিয়েছে অভিশপ্ত হাওড়া-মুম্বই মেল। কার্যত মৃত্যু মুখ থেকে ফিরেছেন যাত্রীরা। দুর্ঘটনার মুহূর্তের সেই অভিজ্ঞতার কথা জানালেন শ্যামাপ্রসাদ।
সোমবার ভোর রাতে চক্রধরপুরে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে হাওড়া-মুম্বই মেল। সেই ট্রেনেই ছিলেন হুগলির খামারগাছির বাসিন্দা দম্পতি শ্যামাপ্রসাদ হালদার ও অঞ্জনা হালদার। অঞ্জনা হালদার চন্দননগর কমিশনারেটে কর্মরত। তিনি ক্যানসার আক্রান্ত। তাঁরই চিকিৎসার জন্যই যাওয়া হচ্ছিল মুম্বই। কিন্তু যাওয়া হল না। শ্যামাপ্রসাদ বলেন, "বি ২ কামরার নয় ও দশ নম্বর বার্থে আমরা ছিলাম। তখন ভোর ৩ টে ৩৫। হঠাৎ ঝাঁকুনি আর প্রচণ্ড শব্দ হয়। আচমকা ট্রেনের কামরা হেলে পড়ে। আমার স্ত্রী চিৎকার করতে থাকে। উঠে দেখি ট্রেন হেলে গিয়েছে। সকলে চিৎকার চেঁচামেচি করছেন।" তাঁর কথায়, চক্রধরপুরের কাছে ওই লাইনের পাশে আরও একটি লাইন তৈরি হচ্ছে। সেই লাইনের নিচে গভীর খাদ। সেখানে পরে গেলে হতাহতের সংখ্যা হত বহু।
[আরও পড়ুন: গরুপাচার কাণ্ড: CBI মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের জামিন, জেলমুক্তি হবে?]
শ্যামাপ্রসাদবাবু জানিয়েছেন, প্রবল ঝাঁকুনিতে তাঁর মাথায় আঘাত লেগেছে। তা সত্ত্বেও কোনওরকমে ট্রেন থেকে নেমেছেন। কেউ আবার নামতে গিয়ে চোট পেয়েছে। সকলেরই প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অভিশপ্ত ট্রেনের এই যাত্রীর কথায়, "দুর্ঘটনার পর রেলের তরফ থেকে জল, বিস্কুট, অ্যাম্বুল্যান্স, এবং মুম্বই পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিশেষ ট্রেনেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন এই মৃত্যুমিছিল আর কতদিন চলবে?" ঘটনার আতঙ্কে কাঁটা ওই ট্রেনের সকলই যাত্রীই।