‘মণিকর্ণিকা: দ্য কুইন অফ ঝাঁসি’ মুক্তি পাচ্ছে আজ। কৃষ-কঙ্গনা পরিচালিত এবং কঙ্গনা রানাওয়াত অভিনীত এই ছবি শুরু থেকেই আলোচনার কেন্দ্রে। আর ‘মণিকর্ণিকা’-তেই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলার যিশু সেনগুপ্ত। মহারাজা গঙ্গাধর রাওয়ের চরিত্রে তিনি। যে রাজার আগ্রহ ছিল শিল্প-সংস্কৃতি, থিয়েটার এবং মিউজিকে। আবার স্বামী হিসেবে ছিলেন যত্নবান, স্ত্রী মণিকর্ণিকার প্রতি অত্যন্ত সাপোর্টিভ। উদারমনা এই রাজা উৎসাহ দিতেন মণিকর্ণিকার যোদ্ধাসত্তাকে। সেই সময় স্ত্রীর জন্য এদেশে প্যালেসের মধ্যে বৃহত্তম গ্রন্থাগার করে দিয়েছিলেন তিনি। কারণ, মণিকর্ণিকা বই পড়তে ভালবাসতেন। ছবি রিলিজের মুখে সেই রাজা গঙ্গাধর অর্থাৎ যিশুকে ধরা গেল। লিখলেন শম্পালী মৌলিক।
রাষ্ট্রপতি ভবনে সম্প্রতি ‘মণিকর্ণিকা’র স্পেশাল স্ক্রিনিং হয়ে গেল। আপনি যাননি?
যিশু: না, আমার তো মৈনাকের ছবিটার শুটিং চলছে। মানে ‘বর্ণ পরিচয়’-এর শুটিং।
মিস করলেন যে, আফসোস হচ্ছে না?
যিশু: না, আফসোস নেই। আই ডোন্ট রিগ্রেট এনিথিং ইন লাইফ।
কতটা এক্সাইটেড এই ছবিটা নিয়ে?
যিশু: অ্যাম ভেরি মাচ এক্সাইটেড।
এক্সাইটমেন্টের কারণগুলো কী কী?
যিশু: প্রথমত, ইট ইজ ওয়ান অফ দ্য বিগেস্ট ফিল্ম অফ দ্য ইয়ার। যেখানে আমার খুব ইম্পর্ট্যান্ট একটা চরিত্র রয়েছে। যেটা হল, মহারাজা গঙ্গাধর রাও…
আর কঙ্গনা রানাওয়াতের অপোজিটে স্ক্রিন শেয়ার করা, সেটা বলবেন না?
যিশু: হ্যাঁ, ডেফিনিটলি। কঙ্গনা একজন ফ্যানটাস্টিক অ্যাক্টর অ্যান্ড লাভলি হিউম্যান বিইং। আমার সঙ্গে ওর খুবই ভাল বন্ডিং হয়ে গিয়েছিল শুটের সময়। হ্যাঁ, ওর সঙ্গে কাজ করা ব্রিলিয়ান্ট অভিজ্ঞতা। জানে ঠিক কী চায়। ভীষণ ফোকাস্ড। কোনওদিন ওর অপোজিটে বাংলা ছবিতে কাজ করতে পারলেও ভাল লাগবে। শি আন্ডারস্ট্যান্ডস গুড সিনেমা অ্যান্ড হ্যাজ অ্যান আই ফর ক্রিয়েটিভিটি।
যতদূর জানি এই ছবির পিছনে আপনার প্রচণ্ড পরিশ্রম রয়েছে।
যিশু: হ্যাঁ, ‘মণিকর্ণিকা’র সঙ্গে সাইমালটেনিয়াসলি আমি ‘এক যে ছিল রাজা’ও শুট করেছিলাম। তখন রাজস্থানে দিনেরবেলা প্রায় চল্লিশ ডিগ্রি। রাতে সেটাই নেমে আসে আঠেরোয়। পরপর ফ্লাই করে দুটো শুটিং লোকেশনে যাওয়া-আসা। কখনও ‘এক যে ছিল রাজা’-য় মাইনাস ফাইভে শুট করছি, ওদিকে ‘মণিকর্ণিকা’র জন্য প্রচণ্ড গরম রাজস্থানে ছুটছি। তার ওপর নীতা লুলার কস্টিউম। জামাকাপড়ের ওজনই প্রায় ছিল পনেরো কেজি মতো। আবার ‘এক যে ছিল’-তে খালি গায়ে শুটিং। দুটোই রাজা কিন্তু পোল্স অ্যাপার্ট (হাসি)।
মহারাজা গঙ্গাধর রাও-এর রোলের জন্যও কি ঘোড়ায় চড়া ইত্যাদি শিখতে হয়েছিল?
যিশু: আসলে তখন আমি অলরেডি ঘোড়ায় চড়ার ট্রেনিং করছিলাম ‘এক যে ছিল রাজা’-র জন্য। সেটা ‘মণিকর্ণিকা’তেও কাজে এসেছে। এখানে যে মারাত্মক ঘোড়ায় চড়া ছিল তা নয়, কিন্তু যেটুকুই ছিল, কাজে লেগেছে।
[ দেশভক্তিকে উসকে দিয়ে ‘ভারত’-এর ভূমিকায় অবতীর্ণ সলমন খান ]
সোর্ড ফাইট বা ওই জাতীয় কিছু ছিল না?
যিশু: হ্যাঁ, সোর্ড ফাইট আছে। কিন্তু কোথায় আছে সেটা বলব না। ওটা ছবিটার খুব ইন্টারেস্টিং জায়গা।
২০১৯-টাও আপনার দারুণ শুরু হচ্ছে বলব। একদম ন্যাশনাল রিলিজ দিয়ে।
যিশু: হ্যাঁ, অলরেডি ‘এনটিআর’ রিলিজ করে গিয়েছে। খুব ভাল রিভিউস পাচ্ছি। লোকে জিজ্ঞেস করছে যে, ‘এল ভি প্রসাদ কে?’ বা ‘যে করেছে খুব ভাল করেছে।’ কৃষ ছাড়াও অন্য পরিচালকেরা ফোন করেছিলেন।
‘মণিকর্ণিকা’র পরিচালকও তো কৃষ।
যিশু: হ্যাঁ, কৃষ এবং কঙ্গনা। তো বছরের প্রথম রিলিজ হল তেলুগু ফিল্ম। সেকেন্ড রিলিজ হচ্ছে হিন্দি ফিল্ম। থার্ড আসছে ‘মুখোমুখি’। তারপর বোধহয় মার্চে ‘মহালয়া’।
কিন্তু এবার আপনার তো ডেট পাওয়া যাচ্ছে না, এত ব্যস্ততা।
যিশু: (হাসি)…. ওই আর কী।
আর ইউ এনজয়িং?
যিশু: ইয়া…. মানে শেষ একবছরে প্রায় প্রত্যেকদিন কাজ করেছি। দু’টো হিন্দি ছবি করলাম। একটা ওয়েব সিরিজ করছি হিন্দিতে। তারপর বাংলার কাজ করছি। অপর্ণা সেনের সঙ্গে কাজ করলাম। এখন ‘বর্ণপরিচয়’-এর শুটিং করছি। ২০১৯-এ প্রথম যে অ্যাওয়ার্ড শো-টা হল ডব্লুবিএফজেএ, সেখানে ‘বেস্ট অ্যাক্টর’-এর অ্যাওয়ার্ডটা পেলাম। থ্যাঙ্কস টু সৃজিত। যে, ‘এক যে ছিল রাজা’-তে এরকম একটা রোল দিয়েছে।
এখন তো যে রোলই পাচ্ছেন ফাটিয়ে দিচ্ছেন!
যিশু: না, না, করার মতো জায়গাও চাই। টাচ উড। দশ মিনিটের পার্ট হলেও সেটা ইম্পর্ট্যান্ট হতে হবে আমার কাছে।
ওয়েব সিরিজ করছেন কার?
যিশু: সুজয় ঘোষের ওয়েব সিরিজে করছি। প্ল্যাটফর্ম এখনই বলছি না (হাসি)।
নতুন বছরে আর কিছু ইন্টারেস্টিং?
যিশু: কথাবার্তা চলছে।
চন্দ্রিল ভট্টাচার্যর ছবিটা কি করতে পারছেন? ‘এনআইডিয়াজ’ থেকে যেটা হওয়ার কথা?
যিশু: হ্যাঁ, করার তো ইচ্ছে আছে ডেফিনিটলি। এখনও ডেট বুঝতে পারছি না। মে মাসের আগে পর্যন্ত অ্যাম লিটল ব্লকড। মে মাসে আবার আমি বাচ্চাদের নিয়ে বেড়াতে যাব। ২০১৭-র পর আর ওদের নিয়ে কোথাও যেতে পারিনি। তো ওদের সামার ভেকেশনে কোথাও না নিয়ে গেলে গলা কাটা যাবে। মোস্ট প্রব্যাবলি উই উইল গো টু লন্ডন। ফলে ডেট বের করা চাপ হচ্ছে। হলে জুন-জুলাই হবে। কিন্তু সেই ডেট এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ডেফিনিটলি আমি চন্দ্রিলদার সঙ্গে কাজ করতে চাই। হি ইজ আ ফ্যাবুলাস রাইটার। একটা ভিশন আছে।
[ ‘জিনস প্যান্ট পরেছ কেন?’ সঞ্চালিকার পোশাক নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে মৌসুমি ]
‘শাহজাহান রিজেন্সি’ কি দেখলেন?
যিশু: এখনও সময় সুযোগ করতে পারিনি। এখন আমার নিজের ছবিও হলে গিয়ে দেখা হয় না।
‘শাহজাহান’ ছেড়েছিলেন বলে এখন আফসোস হচ্ছে না তো?
যিশু: আমার তো কোনওদিনই আফসোস হয় না। ওই যে বললাম, আই ডোন্ট রিগ্রেট এনিথিং (হাসি)।
The post ‘জীবনে কোনও অনুতাপ নেই’, পেশাগত জীবন নিয়ে অকপট যিশু appeared first on Sangbad Pratidin.