সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জম্মু ও কাশ্মীরে ‘অ-স্থানীয়’দের ভোটাধিকার নিয়ে সরগরম রাজনীতি। কেন্দ্রের এই নতুন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছে ন্যাশনাল কনফারেন্স ও পিডিপি। সোমবার এই বিষয়ে আলোচনার জন্য ফারুক আবদুল্লার শ্রীনগরের বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয় একটি সর্বদলীয় বৈঠক। আলোচনা শেষে কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা জানান, ভোটার তালিকায় নতুন নাম সংযোজন নিয়ে আলোচনার জন্য সেপ্টেম্বরে সর্বভারতীয় দলগুলিকে কাশ্মীরে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
সম্প্রতি এক ঐতিহাসিক ঘোষণায় নির্বাচন কমিশন জানায়, জম্মু ও কাশ্মীরে বসবাসকারী দেশের অন্যপ্রান্তের লোকজনও এবার ভোটাধিকার পাবেন। এই নয়া সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ২৫ লক্ষ নতুন নাম ভোটার তালিকায় ঢুকতে চলেছে। এই ঘোষণার পর থেকেই কেন্দ্রের মোদি সরকারের উপর খড়্গহস্ত ন্যাশনাল কনফারেন্স ও পিডিপি-সহ উপত্যকার রাজনৈতিক দলগুলি। তাদের অভিযোগ, ‘বহিরাগত’দের এনে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতেই এই পদক্ষেপ করেছে বিজেপি। এই বিষয়ে পরবর্তী কার্যপন্থা ঠিক করতে সোমবার নিজের বাসবভনে একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকেন কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পিডিপি প্রধান মেহবুবা মুফতি, সিপিআই (এম) নেতা এম ওয়াই তারিগামি, কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি ভিকার রসুল ও শিব সেনার প্রতিনিধি।
[আরও পড়ুন: CBI-এর প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে ফের দলকে চটালেন দিলীপ ঘোষ! রিপোর্ট তলব শীর্ষ নেতৃত্বের]
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এদিনের বৈঠকে উপস্থিতি ছিলেন না ‘পিপল’স কনফেরেন্সে’র নেতা সাজ্জাদ লোন ও ‘আপনি পার্টি’র আলতাফ বুখারি। ‘বাইরেরে লোক’দের ভোটাধিকার দিলে অনশনে বসার হুমকি দিয়েছেন লোন। তাঁর কটাক্ষ, “এই বৈঠক আসলে নাম্বার বাড়ানোর খেলা। তাই আমি যাইনি। এরা একে অপরকে গালাগাল করে আর এখন দেখানো হচ্ছে সব ঠিক আছে। মেহবুবা মুফতি আসলে হারানো জমি গেরত পাওয়ার চেষ্টায় এই বৈঠকের ডাক দিয়েছেন।” সবমিলিয়ে, এই ইস্যুতে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত কাশ্মীরের দলগুলি। ফলে বিশ্লেষকদের মতে, এবার সর্বভারতীয় দলগুলির কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছেন আবদুল্লা-মুফতিরা।
উল্লেখ্য, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ হওয়ার পর দেশের আর পাঁচটা রাজ্যের মতোই নিয়ম চালু হয়েছে এখানে। কিন্তু এর ফলে জনবিন্যাস ও রাজ্যের স্বকীয় পরিচয় নষ্ট হবে বলে অভিযোগ পিডিপি তথা ন্যাশনাল কনফারেন্সের মতো আঞ্চলিক দলগুলির। বিশ্লেষকদের মতে, কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদ হওয়ার পর প্রভাবশালী মুফতি ও আবদুল্লা পরিবার কার্যত কোণঠাসা। এহেন পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের নতুন ঘোষণা ও আসন পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়ার ফলে নির্বাচনে কিছুটা লাভবান হবে গরুয়া শিবির। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ করার পাশাপাশি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দু’টির জন্য নয়া ‘ডোমিসাইল’ আইন প্রণয়ন করে কেন্দ্র।