সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বসন্তে পলাশ ফুটল দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (JNU)। ছাত্র সংগঠনের ক্ষমতা দখল করেছে বামপন্থীরা। নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (ABVP)। সংসদের একাধিক পদে জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন বামেরাই। ভোটের ফলপ্রকাশের পর দেখা গিয়েছে, চারটি আসনেই পরাজিত হয়েছে গেরুয়া শিবির। সভাপতি পদে এবিভিপি-র উমেশচন্দ্র আজমিকে পরাস্ত করেন বাম প্রার্থী ধনঞ্জয়। ৩০ বছর পর দলিত প্রার্থী হিসেবে জেএনইউ-র ছাত্র সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হলেন ধনঞ্জয়।
১৯৯৬-৯৭ সালে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (JNU) ছাত্র সংগঠনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন দলিত ছাত্র বাট্টি লাল বাইরওয়া। তিন দশক পরে ওই পদে এলেন ধনঞ্জয়। উমেশচন্দ্র আজমিকে ৯২২ ভোটে হারালেন তিনি। বিহারের গয়ার বাসিন্দা ধনঞ্জয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা বিভাগের পিএইচডি পাঠরত। উল্লেখ্য, সভাপতি ছাড়াও সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম সম্পাদক – এই চার আসনে জয়ী হয়েছেন বাম প্রার্থীরা।
[আরও পড়ুন: মহাকাল মন্দিরের গর্ভগৃহে আগুন, ঝলসে গেলেন অন্তত ১৩ জন]
বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে প্রায় পাঁচ বছর পর নির্বাচন হল দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে। আসন্ন লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election 2024) আবহে যে দিকে নজর ছিল গোটা দেশের। চার পদের লড়াইয়ে প্রথমে পিছিয়ে পড়লেও পরে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে প্রতিটি আসনেই এগোতে শুরু করেন বাম ছাত্র সংগঠনের প্রার্থীরা। শেষমেশ জয় ছিনিয়ে নেন তাঁরাই। ভোটদানের হার মোট ৭৩ শতাংশ, যা গত এক যুগের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
কোভিডের (COVID-19) জন্য ২০১৯ সালের পর থেকে নির্বাচন হয়নি জেএনইউ-তে। শেষ নির্বাচনে এসএফআই নেত্রী ঐশী ঘোষের নেতৃত্বে ক্ষমতায় এসেছিলেন বামেরা। গত কয়েকবছর ধরেই ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দাবিতে সরব হয়েছে বাম সংগঠনগুলি। নির্বাচনের আগে আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন এবিভিপির প্রত্যক্ষ মদতে বহিরাগতদের সাহায্যে পড়ুয়াদের আক্রমণের অভিযোগ করেছে বাম ছাত্র নেতৃত্ব। দীর্ঘদিন বাদে হওয়া এবারের নির্বাচনে ভরপুর উৎসাহে অংশ নিয়েছিলেন JNU পড়ুয়ারা।
[আরও পড়ুন: ফের লাল পতাকা উড়ল জেএনইউ-তে, ছাত্র সংসদের ভোটে ভরাডুবি গেরুয়া শিবিরের]
দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির তুলনায় বরাবরই খবরের শিরোনামে জেএনইউ, কখনও শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁদের অবদানে। বেশিরভাগ সময়ই বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুতে তাদের জোরদার অবস্থানের কারণে। প্রায় বেশিরভাগ সময়ই বামদুর্গ হিসাবেই থেকে গিয়েছে জেএনইউ। ক্ষমতার রাশ তুলতে না পেরে বিজেপি, আরএসএস-এর (RSS) মতো সংগঠন জেএনইউ-র পড়ুয়াদের কখনও ‘টুকরে টুকরে গ্যাং’, কখনও ‘শহুরে নকশালে’র (Urban Naxal) তকমা লাগিয়েছে। জেএনইউ-কে ‘জাহাঙ্গির ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’ নাম দিয়ে ৫ এপ্রিল মুক্তি পেতে চলেছে বিনয় শর্মা পরিচালিত ছবি।