সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের (Joe Biden) আক্রমণের মুখে পড়লেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। ব্রিটেনে কর্পোরেট কর কমানোর সিদ্ধান্ত একেবারেই খারাপ ছিল বলে দাবি করেছেন বাইডেন। প্রসঙ্গত, এই কর কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েই প্রবল চাপের মধ্যে রয়েছেন ট্রাস (Liz Truss)। চলতি সপ্তাহেই প্রধানমন্ত্রীর কুরসিও ছেড়ে দিতে হতে পারে তাঁকে। এহেন পরিস্থিতিতে মিত্ররাষ্ট্র আমেরিকার তরফ থেকেও সমালোচনার মুখে পড়তে হল লিজ ট্রাসকে। সব মিলিয়ে ঘরে বাইরে একেবারে নাজেহাল দশা ব্রিটেনের সদ্য নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর (British PM)।
আমেরিকার একটি প্রদেশে সফর করতে গিয়ে ট্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়ে মুখ খুলেছেন বাইডেন। তিনি বলেছেন, “উচ্চবিত্তদের করের বোঝা লাঘব করতে কর্পোরেট ট্যাক্স কমানোর সিদ্ধান্ত একেবারেই সঠিক ছিল না। আমি একাই এই কথা বলছি সেরকমটাও নয়।” বাইডেন সেই সঙ্গে আরও বলেছেন, “এই নীতির সঙ্গে আমি কিছুতেই একমত হতে পারিনি। তবে এটা ব্রিটেনের নিজস্ব বিষয়। আমি এই প্রসঙ্গে কথা বলার কেউ নই।” বিশ্ব রাজনীতিতে কার্যত একসঙ্গে মিলেই কাজ করে আমেরিকা ও ব্রিটেন। কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ নীতি নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করবেন না অপর দেশের নেতা, এমনটাই সাধারণত হয়ে থাকে। কিন্তু ট্রাসের ক্ষেত্রে এই প্রথার ব্যতিক্রম ঘটালেন বাইডেন।
[আরও পড়ুন: ভারতে নেই আইনের শাসন! মার্কিন সংবাদমাধ্যমের বিজ্ঞাপনে মোদি সরকারের নিন্দা, বিতর্ক তুঙ্গে]
উচ্চবিত্তদের জন্য কর ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়েও মাত্র দশ দিনের মধ্যে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হয়েছিল লিজ ট্রাসকে। তাঁর এহেন সিদ্ধান্তের জেরে বিশ্ববাজারে ঐতিহাসিক ভাবে কমে গিয়েছিল পাউন্ডের দাম। ব্রিটেনের আর্থিক পরিস্থিতির সংকটের মুখে পড়ে। প্রবল চাপের মধ্যে অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ারটেংকেস সরিয়ে দিতে বাধ্য হন ট্রাস। নিজের দলের মধ্যেও তুমুল বিরোধিতার মুখে পড়েন তিনি। নির্বাচনের আগে সাধারণ মানুষের উপর থেকে করের বোঝা কমিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ট্রাস। কিন্তু সেই কথা রাখার আগেই সম্ভবত মসনদ থেকে সরে যেতে হবে তাঁকে।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এই সপ্তাহের মধ্যেই ট্রাসকে কুরসি থেকে সরিয়ে দেওয়ার তোড়জোড় করছেন টোরি পার্টির এমপিরা। দলের কমিটির প্রধানের কাছে ট্রাসের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চলেছেন কনজারভেটিভ পার্টির শতাধিক এমপি। প্রয়োজন পড়লে প্রথা ভেঙে ফের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্যও আবেদন জানানো হবে। আপাতত পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন ভারতের জামাই ঋষি সুনাক। ব্রিটেনের রাজনীতিতে আগামী কয়েকদিন প্রচুর ডামাডোল চলবে, সেকথা বলাই বাহুল্য।