সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বড়সড় ভাঙনের মুখে যোশিমঠ (Joshimath)। ৫৬১টি বাড়িতে দেখা দিয়েছে ফাটল। যে কোনও সময় ঘটে যেতে পারে বিপর্যয়। কিন্তু পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েও লাভ হচ্ছে না। এই দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। শেষ পর্যন্ত শুরু হল যোশিমঠ খালি করে দেওয়ার কাজ। নৈশাবাসে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বহু পরিবারকে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কোনও হোটেলে থাকা যাবে না বলে পর্যটকদের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। প্রস্তুত রাখা হচ্ছে চপার।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি বলেছেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। নিজেও পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে করতে এলাকা পরিদর্শন করেছেন। চামোলি জেলার বহু এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত। আতঙ্ক গ্রাস করেছে পর্যটকদেরও। উল্লেখ্য, উত্তরাখণ্ডের ছোট্ট পাহাড়ি শহর যোশিমঠ। এটি এমনিতেই ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় অবস্থিত। তাই এখানে এর মধ্যে কোনও মাঝারি বা শক্তিশালী ভূমিকম্প হলে যে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি ঘটে যাবে, এমনই আশঙ্কা বাড়ছে।
[আরও পড়ুন: কেতুগ্রামে গা ঢাকা, আইনজীবীর পরামর্শে আত্মসমর্পণ এজলাস থেকে পালানো ধর্ষণ মামলার আসামির]
কিন্তু কেন দেখা দিচ্ছে ফাটল? গাড়োয়াল ডিভিশনের ডিভিশনাল কমিশনার সুশীল কুমারের মতে মাটির নিচ থেকে জল ওঠার কারণে কিছু ক্ষেত্রে ফাটল দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের নাইট শেল্টারে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। পর্যটকদের ক্ষতিগ্রস্ত হোটেলে থাকতে নিষেধ করা হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকেই উত্তরাখণ্ড সরকারের তরফে স্থানীয় পরিবারগুলিকে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। বৃহস্পতিবার রাতেই ৪৭টি পরিবারকে আশ্রয় শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, গাড়োয়াল হিমালয়ের এই অন্যতম জনপদ কেন ধীরে ধীরে মাটির নীচে তলিয়ে যাচ্ছে, তা দেখতে সরকারের তরফে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে।
যোশিমঠের পুরপ্রধান শৈলেন্দ্র পাওয়ার বলেন, “প্রত্যেক ঘণ্টায় যত ফাটল বাড়ছে, ততই আতঙ্ক বাড়ছে। ৫৬১টি বাড়িতে ফাটল ধরেছে। সিংধর ও মারওয়াড়ি অঞ্চলের বাড়িগুলিতেও ফাটল ধরতে শুরু করেছে। বদ্রীনাথ জাতীয় সড়কের কাছে সিংধর জৈন এলাকা ও বনবিভাগের চেকপোস্টের কাছে জেপি কোম্পানি গেট অঞ্চলে ফাটল বাড়ছে।”
[আরও পড়ুন: প্ল্যাটিনামে সম্মানিত বাংলার ‘দুয়ারে সরকার’, রাষ্ট্রপতির হাতে থেকে পুরস্কার নিলেন চন্দ্রিমা]
প্রসঙ্গত, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬ হাজার ফুটেরও বেশি উঁচুতে অবস্থিত যোশিমঠকে হিমালয় পর্বত আরোহণ অভিযান ও বদ্রিনাথের মতো তীর্থক্ষেত্রগুলির প্রবেশদ্বার ধরা হয়। ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হয় যোশিমঠ। সেই থেকে সেখানকার বাসিন্দাদের লাগাতার বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে ফাটল ঘিরে আতঙ্ক।