রমেন দাস: যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় এবার আরও ‘কড়া’ অবস্থান নিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নদিয়ার বাসিন্দা, বাংলা বিভাগের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত ৬ জনের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করল কর্তৃপক্ষ। একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যতদিন না অভিযুক্তরা আইনের চোখে নির্দোষ প্রমাণিত হবেন, ততদিন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রবেশ করতে পারবেন না তাঁরা! শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল থেকে শুরু করে সর্বত্র ‘নিষিদ্ধ’ ওই অভিযুক্তরা। রেজিস্ট্রার অফিস থেকে প্রকাশিত এই বিজ্ঞপ্তি ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৬ সেপ্টেম্বরের অসমাপ্ত কার্যনির্বাহী সমিতির বৈঠক ফের বসে অক্টোবরের ১০ তারিখে। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যে অভিযুক্তরা এখন জেলবন্দি সেই ৬ জনের জন্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। অর্থাৎ দীপশেখর দত্ত, মনোতোষ ঘোষ, আসিফ আফজাল আনসারি, সত্যব্রত সরকার, অঙ্কন সরকার, মহম্মদ আরিফ- এই ৬ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। যদিও মেন হস্টেলে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত সৌরভ চৌধুরীর নাম ওই বিজ্ঞপ্তিতে নেই। কারণ, সৌরভ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ছাত্র নন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে দাবি, এই বিষয়টি খুব একটা অভিনব নয়, তবে আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি জানানো প্রয়োজন ছিল। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একাংশ বলছেন, বারবার নাটক না করে আসল ব্যবস্থা নিক কর্তৃপক্ষ।
[আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে নরকঙ্কাল! তদন্ত শুরু করল পুলিশ]
উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলের এ-১ ব্লকে মৃত্যু হয় বাংলা বিভাগের এক নবাগত ছাত্রের। তারপরেই ওঠে একাধিক অভিযোগ। ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয় রাজ্য। দেশজুড়ে সমলোচনার মুখে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়। ছাত্রকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে বারবার। উত্তাল পরিস্থিতিতেই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হন ১২ জন। অন্যতম অভিযুক্ত হিসাবে নাম জড়ায় সৌরভ চৌধুরী-সহ একাধিক বর্তমান ছাত্রের।
[আরও পড়ুন: সংসার খরচের টাকায় সন্তানের দুধ কেনার ‘শাস্তি’, তরুণীকে বিবস্ত্র করে মার শাশুড়ি ও ননদের]
বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও উঠে আসে একাধিক বিস্ফোরক তথ্য। যদিও নয়া অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউয়ের তত্ত্বাবধানে ফের তৈরি হয় নতুন ‘অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াড’। সেখানেও শুরু হয় বিতর্ক। ইসি অর্থাৎ কার্যনির্বাহী সমিতির বৈঠকেও শুরু হয় উত্তেজনা। রাতভোর নাটকের পর অমীমাংসিত ভাবেই শেষ হয় ওই বৈঠক। ফের একই ইস্যুতে বসে বৈঠক। সেখানেও বাধে গন্ডগোল। খোদ উপাচার্যই বসেন অবস্থানে।
ছাত্রমৃত্যু এবং একাধিক প্রশ্নের মধ্যেই ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে এমন বিজ্ঞপ্তি আলোচনার পরিধি বাড়িয়েছে খানিকটা, এমনও বলছেন কেউ কেউ।