শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: প্রায় ৪৮ ঘণ্টা ধরে থমকে আউটডোর পরিষেবা। ঝুলছে তালা। জরুরি বিভাগেও আটকে কাজ। বিভিন্ন ওয়ার্ডেও রোগী দেখছেন না জুনিয়র ডাক্তাররা। সবমিলিয়ে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে বিপাকে রোগীরা। হয়রানির শিকার হচ্ছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগী ও তাঁর পরিজনেরা।
শুক্রবারের পর শনিবারও হাসপাতালে জরুরি বিভাগের বাইরে অবস্থান বিক্ষোভে হাসপাতালের মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তাররা। অভিযোগ, বহির্বিভাগ বা আউটডোরে(ওপিডি) তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়ার্ডের রোগী দেখাও বন্ধ রেখেছেন। হাসপাতাল সূত্রে বিস্ফোরক দাবি, জরুরি বিভাগের সামনে বিক্ষোভ চলাকালীন নিজেরা খাওয়া দাওয়া করলেও রোগী বা অন্যান্য চিকিৎসকদের খেতে দেওয়া হচ্ছে না। হাসপাতাল চত্বরে প্রচুর রোগী ভিড় জমালেও মিলছে না পরিষেবা। কোন কারণে বিক্ষোভ?
[আরও পড়ুন: মেসির চোটের সঙ্গে আর্জেন্টিনার চিন্তা বাড়াচ্ছেন কোচও, পেরু ম্যাচে নেই স্কালোনি]
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে পেটে ব্যথার অসহ্য যন্ত্রণায় সার্জিকাল ওয়ার্ডের শয্যায় দীর্ঘক্ষণ ধরে ছটফট করছিল বছর দেড়েকের এক শিশু। অথচ অবলা একরত্তি শিশুর চিকিৎসা পরিষেবার বদলে নির্বিবাদে মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে খেলা দেখতে মগ্ন কর্মরত জুনিয়র ডাক্তার (ইন্টার্স)। এমনই অভিযোগ জানাতে গিয়ে রোগীর পরিবারের পড়শি প্রাক্তন পুরকাউন্সিলর তথা মহিলা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রীর সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারের তুমূল বচসা। কয়েক মুহূর্তে দলে দলে জুনিয়র ডাক্তাররা ঘটনাস্থলে পৌঁছে রোগীর পরিজনদের সঙ্গে হাতাহাতি-ধ্বস্তাধস্তিতে জড়িয়ে কার্যত তপ্ত হয়ে উঠল রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ক্যাম্পাস। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্ষিপ্র দুইপক্ষকে সামলাতে গিয়ে রীতিমতো নাজেহাল হতে হয় পুলিশ সহ কেন্দ্রীয় বাহিনী। ঘটনায় জখম একাধিক জুনিয়ার ডাক্তার সহ মহিলা নেত্রী ও রোগীর পরিবারের সদস্যরা। এই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল থেকেই বহির্বিভাগ (ওপিডি) এ তালা ঝুলিয়ে পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়ার্ডের রোগী দেখা বন্ধ রেখে জরুরি বিভাগের মূল ফটকের সামনে ওই মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্স এবং হাউসস্টাফদের নেতৃত্বে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে পোস্টার প্লাকার্ড হাতে নিয়ে অবস্থান বিক্ষোভে সরব হন।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাতে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদিন সিজেএম আদালতে দুজনকে পেশ করা হয়। তাদের সঙ্গে দেখা করতে আদালতে আসেন তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী। তাঁর নামও ছিল এফআইআরে। এদিন তিনি আত্মসমর্পণ করেন। যদিও বিচারক তাঁকেও জামিন দিয়ে দেন।