সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দ্বিতীয়বারের নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠক। সোমবার বিকেল ৫টায় আন্দোলনকারীদের সময় দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বার বার আবেদন করেছেন অনশন প্রত্যাহার করে বৈঠকে যোগ দেওয়ার। এই মর্মে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের তরফ থেকে জুনিয়র চিকিৎসকদের কাছে ই-মেলও পাঠানো হয়েছে। তবে তা সত্ত্বেও 'শর্ত' না মেনেই বিকেলে নবান্নের হাইভোল্টেজ বৈঠকে যোগ দিতে যাবেন জুনিয়ররা। দাবিদাওয়া পূরণ না হলে অনশন চলবে এবং মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ধর্মঘটের সিদ্ধান্তেও অনড় আন্দোলনকারীরা। কাটবে স্বাস্থ্য-জট, সেদিকেই তাকিয়ে গোটা রাজ্য।
রবিবার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিজেদের মধ্যে দীর্ঘ বৈঠক করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। বৈঠক শেষে জুনিয়র ডাক্তাররা দেবাশিস হালদার স্পষ্ট জানান, বৈঠকে যোগ দেবেন ঠিকই। কিন্তু অনশন তুলবেন না। ১০ জন প্রতিনিধিকে বৈঠকে ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের নাম আগাম পাঠাতেও বলা হয়েছিল। কিন্তু রবিবার নিজেদের বৈঠক সেরে যে ই-মেল মুখ্যসচিবকে পাঠিয়েছে জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট, তাতে সেই প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি। সর্বোপরি, অনশন না তুলেই যে তাঁরা বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন, তাও জানানো হয়নি। আদতে রাজ্য প্রশাসনকে চাপে ফেলতে বাম এবং অতিবাম রাজনৈতিক নেতাদের মদতে একের পর এক উটকো দাবি পেশ করে আন্দোলনরত ডাক্তাররা প্রাসঙ্গিক থাকার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে চিকিৎসকদেরই একাংশ তথা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলের অভিমত। এই পরিস্থিতিতে আলোচনার মাধ্যমে অচলাবস্থার অবসান ঘটানোর সদিচ্ছা আন্দোলনকারীদের আছে কি না, তা নিয়েও সংশয় দানা বাঁধছে বলেই মনে করছে ওই মহল।
এদিকে,স্বাস্থ্যসচিবের নারায়ণ স্বরূপ নিগমের নামে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠায় সিনিয়র ডাক্তারদের যৌথ মঞ্চ জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন বিভিন্ন ইস্যুতে এর আগে স্বাস্থ্যসচিবকে অভিযোগ করেছেন। আরটিআইও করা হয়েছে। কিন্তু তিনি নীরবই থেকেছেন। দেখা গিয়েছে, সন্দীপ ঘোষের বদলির দুদিনের মাথায় ফের তাঁকে ফিরিয়ে আনার নোটশিটে স্বাস্থ্যসচিবই প্রস্তাবক। আবার কোভিড কোটায় গ্রামীণ এলাকার বাইরে মেডিক্যাল কাউন্সিলের এক প্রভাবশালী সদস্যকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নেপথ্যেও সক্রিয় স্বাস্থ্যসচিবই। আরও উল্লেখ করা হয়েছে, স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপার্চাযর বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের যে অভিযোগ উঠেছে, তাও হয়েছে স্বাস্থ্যসচিবের মদতেই।
এরকমই আরও কয়েকটি অভিযোগ তুলে জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্সের বক্তব্য, স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রধান হিসাবে এই বেনিয়মের কোনও দায়ই এড়াতে পারেন না স্বাস্থ্যসচিব। তাই তাঁর অপসারণ প্রয়োজন। জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে পাঠানো দাবিদাওয়ায় নির্বাচিত রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন গঠন, স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিক্যাল কাউন্সিলের দুর্নীতির প্রসঙ্গও উত্থাপন করা হয়েছে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী শনিবার দুপুরে ফোনে কথোপকথনের সময়েই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, স্বাস্থ্যসচিবের অপসারণ কোনওভাবে এই মুহূর্তে সম্ভবপর নয়।