shono
Advertisement

‘ইংরেজি জানি না স্যর’, শুনেই ক্ষুব্ধ বিচারপতি শিক্ষককে বললেন, ‘গেট আউট’

আদালতের নতুন প্রশ্নের মুখে প্রাথমিকে নিয়োগ।
Posted: 01:34 PM Feb 25, 2023Updated: 06:42 PM Feb 25, 2023

স্টাফ রিপোর্টার: এবার নতুন করে ২০১৬ সালের প্রাথমিক নিয়োগে বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ উঠল কলকাতা হাই কোর্টে। আদালতের প্রশ্ন, ৪২ হাজার ৫০০ পরীক্ষার্থী, যাদের নম্বর বাড়ানো হয়েছে, তাঁদের নম্বর বাড়াল কে? পাশাপাশি, পরীক্ষার ইন্টারভিউ ও অ্যাপটিটিউট টেস্ট নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ ওঠে। তা সত্ত্বেও তাঁরা নিয়োগ পেলেন কী করে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল আদালত।

Advertisement

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সরাসরি মন্তব্য করেন, “অ্যাপটিটিউড টেস্ট যে নেওয়া হয়নি তার প্রমাণ মিলেছে। পর্ষদের হলফনামাও সেই কথাই বলছে।” বিচারপতি এই নিয়ে নিশ্চিত হতে যাঁরা টেস্ট নিয়েছিলেন বলে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ দাবি করেছিল, তাঁদেরই ডেকে রুদ্ধদ্বার কক্ষে জেরা করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁরা সেখানে উপস্থিত হয়ে জানিয়ে দেন তাঁরা কোনও অ্যাপটিটিউড টেস্টই নেননি। বিনা পরীক্ষায় নম্বর যুক্ত করে অন্তত ২৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হয় বলে দাবি করা হয়েছে। আর সেখানেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

[আরও পড়ুন: তাঁর নাম আরমান, বিয়ে হয় হৈমন্তীর সঙ্গেও, প্রকাশ্যে এসে আর কী বললেন গোপাল দলপতি?]

এদিকে, এক ইন্টারভিউয়ার তথা উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষক, যিনি ২০১৪ সালের প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন অথচ ইংরেজিতে প্রশ্ন শুনে তিনি বলেন, “ইংরেজি জানি না, বাংলায় বলব।” রুদ্ধদ্বার শুনানিতে বিচারপতিকে এমনই জবাব দিয়েছিলেন। যার প্রেক্ষিতে শুক্রবার হাই কোর্টে এসে ‘গেট আউট’ শুনতে হল ওই ইন্টারভিউয়ারকে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রীতিমতো তিরস্কার করে তাঁকে এজলাস থেকে বের করে দেন। যা নজিরবিহীন। শুধু তাই নয়, তিনি আর স্কুলে শিক্ষকতা করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে এদিনই বোর্ডকে সুপারিশপত্র পাঠাবেন বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন তাঁর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষকতা করছেন, অথচ ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন না! ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটুকু যোগ্যতা নেই, তিনি কী ইন্টারভিউ নেবেন?’’

এদিন পুনরায় ওই মামলার শুনানিতে সেদিনের সমস্ত ইন্টারভিউয়ারদের সঙ্গে ওই তাঁকেও দেখা যায়। অন্যদের মতো তিনিও এদিন এজলাসে হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আর তাঁকে দেখেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। রীতিমতো ভর্ৎসনার সুরে বিচারপতি তাঁকে দেখা মাত্রই বলেন, ‘গেট আউট।’ বিচারপতির একথা শোনার পরেও অবশ্য ওই ইন্টারভিউয়ার এজলাস ছাড়েননি। তখন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আরও ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, “শেরিফ ডেকে বের করে দেব।” এরপরই ওই ইন্টারভিউয়ার এজলাস ছেড়ে বেরিয়ে যান।

[আরও পড়ুন: যৌনসুখের বিনিময়ে পাক চরকে মিসাইল টেস্টের তথ্য পাচার, গ্রেপ্তার DRDO আধিকারিক]

প্রসঙ্গত, অ্যাপটিটিউড টেস্ট না নিয়েই মূল পরীক্ষায় কম নম্বর থাকাদের একাংশকে ইচ্ছেমতো নম্বর দিয়ে চাকরির সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে বলে আগেই অভিযোগ ওঠে। তঁাদের প্রত্যেককে অতিরিক্ত নম্বর দেওয়া হয়েছে বলে আদালতে দাবি করেন মামলাকারীর আইনজীবীরা। যদিও হলফনামা দিয়ে পর্ষদ আদালতে জানায়, এঁদের প্রত্যেকের টেস্ট নিয়ে নম্বর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যাঁরা যাঁরা এই টেস্ট নিয়েছিলেন বলে পর্ষদ জানায় তাঁদের সাক্ষ্য নেন। উপস্থিত ৩০ জন পরীক্ষক প্রত্যেকেই জানান, তাঁরা কেউই এই টেস্ট নেননি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement