গোবিন্দ রায়: সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে অস্বস্তি বাড়িয়েছেন হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যেখানে তাঁর মুখে উঠে এসেছিল নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মন্তব্য। যার জেরে গত শুক্রবার ওই সংক্রান্ত দু’টি মামলা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরানোর নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশ মতো সোমবার তাঁর এজলাস থেকেও সরে দুটি মামলা। এবার যা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত, সেই কুন্তলের চিঠি প্রসঙ্গে মুখ খুললেন হাই কোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
এদিন হাই কোর্ট থেকে বেরনোর সময় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার যত দূর মনে পড়ে, আমার কাছে যে ডকুমেন্ট জমা পড়েছিল, তাতে কুন্তল নিজে অভিষেকের নাম করেন। এ তো আমার বানানো বা আকাশ থেকে পেড়ে আনা কোনও নাম নয়!’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তৃণমূল টিনোমূল বলে কোনও কিছু আমার কাছে নেই। যখন এ ধরনের মামলার বিচার করতে বসি, তখন দেখতে চাই দুর্নীতি আছে কি না।’’ বিচারপতির আরও সংযোজন, “কোনও রাজনৈতিক দলের নাম বা প্রসঙ্গ বা কোনও সুবিধা নেওয়া- এ সব তো আসে না। সেই মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম আসবে কেন? সে তো কুন্তল ঘোষ নিজে তুলেছেন।”
[আরও পড়ুন: লালন শেখের মৃত্যু মামলার তদন্তে রাজ্যের উপর আস্থা, SIT গঠন করল হাই কোর্ট]
শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে থাকা দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা, ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে সম্প্রতি আলিপুর আদালত ও হেস্টিংস থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ধৃত জলবন্দি কুন্তল ঘোষ। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে কুন্তলের অভিযোগ, শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলানোর জন্য তাঁর উপর চাপ দিচ্ছে ইডি ও সিবিআই আধিকারিকরা। গত কয়েক দিন ধরে করা এই অভিযোগ লিখিত আকারে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে গত ১ এপ্রিল হেস্টিংস থানায় ও আলিপুর আদালতে দাখিল করেন কুন্তল ঘোষ।
আবার গত মাসেই শহিদ মিনারে এক জনসভায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেককে বলতে শোনা যায়, কুণাল ঘোষ, মদন মিত্ররা জেলে থাকার সময় তাঁদেরও অভিষেকের নাম বলার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। সেই সূত্র ধরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ ছিল, বিষয়টি বিস্তারিত জানতে অভিষেক ও কুন্তলকে একসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা যেতে পারে। সেই প্রসঙ্গেই এদিন আদালত থেকে বেরিয়ে মুখ খুললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।