shono
Advertisement

কবিতার প্রত্যুত্তরে কবিতা, রবীন্দ্র রচনায় বৃদ্ধার প্রশংসার উত্তর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

সাক্ষী থাকলেন আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী, আদালতকর্মীরা।
Posted: 02:31 PM Jan 20, 2023Updated: 02:47 PM Jan 20, 2023

গোবিন্দ রায়: ৫৭ বছর ধরে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন প্রাক্তন শিক্ষিকা শ্যামলী ঘোষ। মামলায় জিতে টাকা ফিরে পেয়েছেন। সেখানেই থেমে থাকেননি তিনি। শিক্ষাদপ্তরের যাঁদের জন্য ভোগান্তি, তাঁদের শাস্তি চেয়ে নতুন মামলা করেছেন। বৃহস্পতিবার তার শুনানিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ‌্যায়কে কবিতা শোনালেন শিক্ষিকা। কবিতাতেই উত্তর দিলেন বিচারপতি। সাক্ষী থাকলেন আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী, আদালতকর্মীরা।

Advertisement

শিক্ষিকা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূরবী কবিতা থেকে ‘অবহেলায় দেখেছ খেলায়, সারা হয়ে একদিন’– আওড়াতেই বিচারপতি বলেন, ‘এখনই অন্ধ বন্ধ কোরো না পাখা।’ শুনানি শেষে বৃদ্ধা চোখের জল ফেলে বিচারপতিকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘‘আপনি আইনের যোদ্ধা।’’ বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘আমি কিছু নই। আইন আপনাকে গাছ তলায় দাঁড় করিয়ে ছিল। সেই আইনই আপনাকে প্রাপ্য সম্মান, অর্থ ফিরিয়ে দিয়েছে।’’ বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনার মতো প্রবীণ মানুষদের এজলাসে দেখলে খারাপ লাগে। পাওনা তো পেয়ে গিয়েছেন। কেন কষ্ট করে আদালতে আসেন?’’

হাতজোড় করে বৃদ্ধা বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশে আপনার জন্যই সব বকেয়া পেয়ে গিয়েছি জীবনের সায়াহ্নে। কিন্তু যারা আমার চাকরি কেড়ে নিয়েছিল, তাদের যেন উপযুক্ত শাস্তি হয়, সেই আবেদন নিয়ে এসেছি।’’ বিচারপতি বলেন, ‘‘প্রবীণরা আদালতে এলে খারাপ লাগে। কষ্ট করে আসবেন না। প্রয়োজনে ডেকে পাঠাব।’’ বৃদ্ধা বলেন, ‘‘যারা আমায় কষ্ট দিয়ে জীবন দুর্বিষহ করেছে, তাদের শাস্তি চাই।’’ বিচারপতি জানান, ‘‘বিচার হবে। আপনার বয়স হয়েছে বলেই বলছি।’’

[আরও পড়ুন: পুঁচকে পুঁচকে অক্ষরে নয়, প্যাকেটের গায়ে MRP লিখতে হবে বড় করে, নির্দেশ রাজ্যের]

অবসরপ্রাপ্ত ওই শিক্ষিকার বকেয়া পেনশন মামলায় আগেই উলুবেড়িয়ায় জেলার অতিরিক্ত স্কুল পরিদর্শকের বিরুদ্ধে কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তি রয়েছে কিনা, খতিয়ে দেখতে ভিজিল্যান্স কমিশন গঠনের নির্দেশ দেন বিচারপতি। স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব দিয়ে হলফনামাও চাওয়া হয়েছে। ওই মামলায় রাজ্য ভিজিল‌্যান্স কমিশন বনমালী হাজরার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মুখবন্ধ খামে জমা দেয়।

বিচারপতির নির্দেশ, এই বনমালী বৃদ্ধাকে ভুগিয়েছে। ভিজিল‌্যান্স তিন সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা সচিবের কাছে রিপোর্ট দেবে এবং দফতরকে জানাতে হবে ব্যবস্থা নিতে। শেষে শ্যামলী বলেন, ‘‘একদিন ওই কবিতা কবিগুরু লিখেছিলেন কাদম্বিনীর উদ্দেশে। আমিও শেষ বয়সে বিচার পেয়ে সন্তুষ্ট।’’ বনমালী জানার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, আদালতের নির্দেশ মতো সমস্ত নথি জমা করার সত্ত্বেও মামলাকারী শ্যামলী ঘোষকে বারাবর ডেকে ওই শিক্ষিকার কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা চান।

[আরও পড়ুন: খড়গপুর IIT-তে ছাত্র মৃত্যু: নির্দেশ সত্ত্বেও রিপোর্ট পেশ করেননি ডিরেক্টর, ক্ষুব্ধ বিচারপতি মান্থা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement