অর্ণব আইচ: আনিসুর ও আলিফকে 'ব্যাঙ্ক' হিসাবে ব্যবহার করেছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক? রেশন দুর্নীতির প্রায় ২০ কোটি টাকা তাঁদের কাছে গচ্ছিত রেখেছিলেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী? এসএসকেএমে বসে একটি চিঠি লেখেন জ্যোতিপ্রিয়। ওই চিঠি চলে আসে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে। সেই চিঠির বয়ান ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে।
ইডি সূত্রের খবর, এসএসকেএম বসে পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিতে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক শেখ শাহজাহান, শংকর আঢ্যদের নাম উল্লেখ করেন। এছাড়া উল্লেখ রয়েছে মুকুলদা ও বিদেশের নাম। বলে রাখা ভালো, বিদেশ হলেন আনিসুর এবং মুকুল বলতে আলিফের কথা বলেছেন জ্যোতিপ্রিয়। ইডি সূত্রে খবর জ্যোতিপ্রিয়র বয়ান অনুযায়ী চিঠিতে বলা হয়েছে, “টাকার দরকার পড়লে শাহজাহান, শংকর আঢ্য, মুকুল দেবেন। মুকুলদা মাসে মাসে ১০ লক্ষ টাকা দেবেন। এটা সুদের টাকা। প্রিন্সিপাল অ্যামাউন্ট মুকুলের কাছেই থাকবে। সেটা কোনওমতে নেবে না।" তদন্তকারীদের দাবি, ব্যাঙ্ক আমানতে উপর সুদের হার ৬ শতাংশ। মাসে মাসে ১০ লক্ষ টাকা করে সুদ দিতে বলা হয়েছে। সেই হিসেবে ধরলেই বোঝা যাচ্ছে আনিসুর ব্রাদার্সের কাছে অন্তত ২০ কোটি টাকা গচ্ছিত রেখেছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সে কারণে তাঁদের থেকে মাসে মাসে ১০ লক্ষ টাকা সুদ দিতে বলা হয়েছিল।
[আরও পড়ুন: বেলা বাড়লে আবহাওয়া বদল? জেনে নিন কী বলছে হাওয়া অফিস]
আনিসুর এবং আলিফও জ্যোতিপ্রিয়কে টাকা পাঠান, সে তথ্যও ইডির হাতে রয়েছে। আনিসুর ও আলিফ রেশন দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি বাকিবুর রহমানের মামাতো ভাই। তার জেরে খুব সহজে বাকিবুরের মাধ্যমে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ‘ঘনিষ্ঠ’ হয়ে ওঠে দুজনে। ইডি সূত্রে খবর, আনিসুর ও আলিফ নগদে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে টাকা পাঠান। আর্থিক লেনদেনের পরিমাণ প্রায় আড়াই কোটি টাকা। নগদে কমপক্ষে ৯৪ লক্ষ টাকা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে পাঠান বলেই মনে করা হচ্ছে। এছাড়া আনিসুররা তাদের সংস্থার অ্যাকাউন্ট থেকে জ্যোতিপ্রিয়র কোম্পানির অ্যাকাউন্টে ৭০ লক্ষ টাকা পাঠান। বাকিবুর রহমানের কোম্পানির অ্যাকাউন্ট থেকেও ৯০ লক্ষ টাকা আনিসুর ও আলিফদের অ্যাকাউন্টে পাঠানোর প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে বলেই দাবি ইডির।