সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নেতাজির ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান। সেখানে প্রধানমন্ত্রী মোদির উপস্থিতিতেই তাল কাটে অনুষ্ঠানের। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে মঞ্চে উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (CM Mamata Banerjee) উদ্দেশ্য করে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান এবং তা নিয়ে সাম্প্রতিক উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এই অবস্থায় দলমত নির্বিশেষে অনেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে এই ঘটনাকে সামগ্রিকভাবে বাংলার অপমান বলে নিন্দা জানিয়ে ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নিলেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ, সংগীতশিল্পী কবীর সুমন (Kabir Suman)। রবিবার সকালে তিনি গড়িয়াহাট মোড়ে পোস্টার নিয়ে এককভাবেই প্রতিবাদে শামিল হলেন। পোস্টারে লেখা – জয় বাংলা। এই প্রতিবাদকে তিনি ‘সত্যাগ্রহে’র সঙ্গে তুলনা করলেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কবীর সুমনের সম্পর্কের কথা অবিদিত নয় কারও। দলের সাংসদ থাকাকালীন উভয়ের মধ্যে যে শ্রদ্ধা-স্নেহের বন্ধন তৈরি হয়েছিল, তা অটুট রয়েছে আজও। ২১ জুলাই যুব তৃণমূলের অনুষ্ঠান মঞ্চে কবীর সুমনের উপস্থিতি প্রতি বছরের পরিচিত ছবি। নিজের তাগিদেই দু, এক কলি গানও তিনি গেয়ে থাকেন একুশের মঞ্চে। আর নিজের অনুষ্ঠানে অন্তত একবার হলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা শোনা যায় কবীর সুমনের বক্তব্যে।
[আরও পড়ুন: আচমকাই অসুস্থ রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়, ভরতি হাসপাতালে]
এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি আর পাঁচজনের মতো ‘অপমান’ বলেই মনে করছেন সংগীতশিল্পী। শনিবার রাতে ফেসবুক পোস্টে তৃণমূল নেত্রীর প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে প্রতিবাদের সুর চড়িয়েছিলেন।
কিন্তু রবিবার পথে নেমে তাঁর প্রতিবাদ শুধুই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি সমর্থন নয়, বরং সামগ্রিকভাবে বাংলা সংস্কৃতির প্রতি অবমাননা বলেই মনে করেন। নেতাজির মতো মনীষীর জন্মদিনে কেন ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি? এই প্রশ্ন তুলে গড়িয়াহাট মোড়ে কবীর সুমন একাই ‘জয় বাংলা’ পোস্টার হাতে প্রতিবাদে নামলেন। পথচলতি উৎসুক মানুষজনকে বোঝালেনও তাঁর প্রতিবাদের যথার্থতা। কেউ কেউ তাঁর একক প্রতিবাদে যোগও দিলেন। বেলা পর্যন্ত সত্তরোর্ধ্ব কবীর সুমনকে এভাবেই দেখা গেল গড়িয়াহাটে।
[আরও পড়ুন: মোদির কলকাতা সফরে সাক্ষাৎ, ভিক্টোরিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর পা ছুঁয়ে প্রণাম শুভেন্দুর]
সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ”গণতান্ত্রিক দেশ, যে যার মতো কথা বলতেই পারেন। কিন্তু নেতাজির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যা হল, সেটা ফ্যাসিস্টদের আচরণ। জয় বাংলা – এই বাংলায় অন্য কোনও কিছুর জয় নয়, শুধু বাংলারই জয় হবে। আমাদের প্রতিবাদ সত্যাগ্রহের মতো।”