সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আম আদমি পার্টির সঙ্গ ত্যাগের পর কৈলাস যে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন এ জল্পনা ছিলই। সোমবার সেই জল্পনাকে বাস্তবায়িত করে গেরুয়া শিবিরে পা রাখলেন আন্না হাজারের আন্দোলন সঙ্গী তথা আপ সরকারের মন্ত্রী কৈলাস গেহলট। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর দলত্যাগের কারণ স্পষ্ট করে প্রথমবার মুখ খুললেন তিনি। দলত্যাগের জন্য তাঁর উপর 'চাপ' সৃষ্টি করা হয়েছে বলে যে দাবি করা হচ্ছিল তা উড়িয়ে দিলেন নিজেই।
আবগারি দুর্নীতি মামলায় ইডির স্ক্যানারে ছিলেন কৈলাস। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাঁকে তলবও করেছিল। সেই ঘটনার মাঝেই রবিবার আপের আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে চিঠি লিখে দল ছাড়ার কথা জানান কৈলাস। নিজের পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেন, ‘দিল্লিতে এখন বহু লজ্জার বিতর্ক সামনে চলে আসছে। যাতে নিজেকে প্রশ্ন করতে হচ্ছে, আমরা কি এখনও আম আদমি থাকায় বিশ্বাস রাখি?’ কৈলাস বলেন, আপ এখন আম আদমির এজেন্ডা ভুলে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রাখার লড়াই করছে। এভাবে মানুষের ন্যূনতম চাহিদা পূরণ করাও সম্ভব হচ্ছে না। চিঠিতে দিল্লির মন্ত্রী বলেন, ‘আপ সরকার যেভাবে কেন্দ্রের সঙ্গে নিত্য ঝামেলা করে চলেছে, তাতে মানুষের উন্নয়ন সম্ভব নয়। সরকার বেশিরভাগ সময় ব্যয় করছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এভাবে মানুষের চাহিদা পূরণ হয় না। তাই কোনও বিকল্প না দেখেই আমাকে আপ ছাড়তে হল।’
তবে আপের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে পদত্যাগ করলেও শোনা যায় বিজেপির চাপের মুখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কৈলাস। এর আগে ইডি এবং আয়কর দফতর তাঁর বাড়িতে হানা দিয়েছিল। এজেন্সির নজরদারিতেও ছিলেন তিনি। তবে সে অভিযোগ খারিজ করে সোমবার কৈলাস বলেন, "আপ ছাড়া আমার পক্ষে সহজ ছিল নয়া। একেবারে প্রথম দিন থেকে আপের সঙ্গে ছিলাম আমি। আন্না হাজারের আন্দোলনেও যুক্ত ছিলাম। অনেকে মনে করছেন রাতারাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিংবা কোনও চাপের মুখে পড়ে আপ ছেড়েছি। আমি তাঁদের বলতে চাই, কোনও চাপ ছিল না।" এদিকে কৈলাসের বিজেপি যোগ প্রসঙ্গে অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, 'উনি এখন মুক্ত, যেখানে খুশি যেতে পারেন।'
উল্লেখ্য, ৫০ বছর বয়সি কৈলাশ গেহলট পেশায় আইনজীবী। তিনি নাফাজগড় বিধানসভার বিধায়ক এবং দিল্লির বিধানসভার পূর্ণ মন্ত্রী। অতীতে দিল্লির পরিবহন ও পরিবেশ মন্ত্রক সামলেছেন। অতিশী মন্ত্রিসভারও সদস্য তিনি। কেজরিওয়াল জেলে থাকাকালীন আপের বহু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন। বস্তুত আপ শীর্ষ নেতৃত্ব যখন আবগারি কেলেঙ্কারিতে জেলে তখন আপে তাঁর গুরুত্ব অনেকটাই বেড়েছিল। গত মার্চ মাসে তিনিও আবগারি দুর্নীতিতে ইডির স্ক্যানারে চলে আসেন। তাঁকে তলব করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তার মাস ছয়েক বাদেই দিল্লির শাসকদলের সঙ্গ ছেড়ে বিজেপিতে গেলেন তিনি।