shono
Advertisement

Breaking News

Kali Puja 2023: ক্লাবগুলিতে থিমের ছড়াছড়ি, কালীপুজোর প্রস্তুতি জমজমাট বারাসতে

কোন ক্লাবের কী থিম, আগাম জেনে নিন।
Posted: 09:25 PM Nov 03, 2023Updated: 09:25 PM Nov 03, 2023

অর্ণব দাস, বারাসত: করোনা অতিমারীর দু বছর পর ২০২২ সাল থেকেই ফের নিজের ছন্দে ফিরেছে বারাসতের কালীপুজোর (Kali Puja) পরিবেশ। দুর্গাপুজোর আগে থেকেই জোড়কদমে শুরু হয়েছে জেলা সদরের শ্যামা আরাধনার প্রস্তুতি। শহর কলকাতার দুর্গাপুজোর (Durga Puja) মতো এখানেও থিম, আলোকসজ্জা, প্রতিমার অভিনবত্বে ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়েছে উদ্যোক্তাদের মধ্যে। তাই গত বছরের তুলনায় এবছর দর্শনার্থীদের সংখ্যা কয়েক গুণ বাড়বে বলেই আশা পুজো কমিটিগুলির।

Advertisement

জেলা সদর বারাসতের (Barasat) ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন বেশ কয়েকটি বড় বড় পুজো রয়েছে। তাই পুজোর সময় ভিড় সামলাতে যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকে এই জাতীয় সড়কে। কলকাতা থেকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে কৃষ্ণনগরের দিকে যেতে ১১ নম্বর রেলগেট সংলগ্ন সন্ধানী ক্লাবের পুজো প্রথম। এ বছর তাদের ৬৩তম বর্ষের পুজোর মণ্ডপ তৈরি হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার বালির (Bali) একটি মন্দিরের আদলে। উচ্চতা প্রায় ৫০ ফুট। মণ্ডপের চারদিকে থাকছে দুশো ফুট চওড়া জলাশয়। ভিয়েতনামের গোল্ডেন ব্রিজের আদলে জলাশয়ের উপরে তৈরি হচ্ছে ব্রিজ। দুটি হাতের উপর তৈরি এই ব্রিজটি পেরিয়ে মণ্ডপকে প্রবেশ করে দেখা যাবে থিমের আদলে তৈরি প্রতিমা। পুজোর কর্মকর্তা তথা বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল অভিজিৎ নাগ চৌধুরী বলেন, “বারাসতেরই শিল্পী তারক পাল প্রতিমা তৈরি করছে। আলোকসজ্জা থাকছে শ্যামনগরের।”

১১ নম্বর রেলগেট পেরিয়ে ৩৪নম্বর জাতীয় সড়ক (NH 34) ধরে আর একটু এগোলেই তরুছায়ার ক্লাবের ৫৪তম বর্ষের কালীপুজো। তাদের এবারের থিম আন্দামানের আদিবাসী সম্প্রদায়ের জীবনশৈলী এবং শিল্পকলা। মণ্ডপ তৈরি হয়েছে হোগলা পাতা, কদবেল, ঝিনুক, পাটকাঠি, চটা দিয়ে। মণ্ডপে অধিষ্ঠিত থিমের আদলে তৈরি মা কালীর জিভ থাকছে এক হাত লম্বা। এর পরেই রয়েছে সাউথ ভাটরাপল্লীর কালীপুজো। ৩৪তম বর্ষের তাদের থিম ‘উৎসর্গ’। সঠিক সময়ে ঋতু পরিবর্তন না হওয়ায় ধান উৎপাদনে কৃষকদের সমস্যায় পড়তে হয়। এই ভাবনা থেকেই উদ্যোক্তারা মা কালীর কাছে ধান, চাষে ব্যবহৃত লাঙল, কাস্তে-সহ অন্যান্য সামগ্রী উৎসর্গ করছে। মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে গ্রামবাংলার আদলে। মাতৃ প্রতিমা থাকছে গ্রামের সাজে।

[আরও পড়ুন: মহুয়াকে ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ’ এথিক্স কমিটির, তৃণমূল সাংসদের পাশে অধীর, ইয়েচুরি]

আর একটু এগিয়ে কলোনি মোড় সংলগ্ন নবপল্লী সার্বজনীনের পুজো। গত বছর তাদের তৈরি কেদারনাথ মন্দিরে ভিড় উপচে পড়েছিল দর্শনার্থীদের। এই ভাবনা থেকেই উত্তরাখণ্ডের চার ধামের আরেকটি বদ্রীনাথ মন্দিরের আদলে ৪৪তম বর্ষের মণ্ডপ তৈরি করছেন উদ্যোক্তারা। প্রায় ৯৫ ফুট চওড়া এবং ৭০ ফুট উচ্চ মণ্ডপের চারিদিক থাকছে পাহাড় ঘেরা। মণ্ডপের থাকছে মহাশক্তিরূপের মাতৃ প্রতিমা। পুজো কমিটির কর্মকর্তা চয়ন দাস বলেন, “মাতৃ প্রতিমায় থাকছে বিশেষত্ব। মায়ের দশ হাত, দশ পা, দশ মাথা। মণ্ডপের ভিতরে থাকবে বিষ্ণুর দশ অবতারের মূর্তি।”

এর পরই নবপল্লী সার্কুলার রোড ধরে গেলেই পরবে নবপল্লী বয়েজ স্কুল সংলগ্ন ‘আমরা সবাই’ ক্লাবের পুজো। সপ্তম বর্ষের তাদের এই পুজো বারাসাতের অন্যতম কালীপুজোর মধ্যে একটি। এবছর তাদের মন্ডপ তৈরি হচ্ছে মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদের কৈলাশার ইলোরা গুহা। দু’হাজার বছর আগে তৈরি এই ইলোরায় ১০২টি গুহা রয়েছে। তার মধ্যে এখন ৩২টি তেই মানুষ প্রবেশ করতে পারে। এরমধ্যে ১৬নম্বর গুহার আদলে তৈরি মণ্ডপের বাইরের অংশ। আর মণ্ডপের অন্তরসজ্জা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ১০নম্বর গুহার আদলে। পুজো কমিটির কর্মকর্তা তথা পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল অরুণ ভৌমিক বলেন, “মন্ডপ চাওয়ায় ১২৮ফুট এবং উচ্চতা ৭৫ফুট। মন্ডপের ভিতরে ২৯ ফুট উচ্চতার একটি রুপালি সিংহাসন থাকবে। এই সিংহাসনে তিনটি রূপে মাতৃ প্রতিমা থাকবে।”

[আরও পড়ুন: দূষণে ধুঁকছে দিল্লি, অথচ অকেজো ২০ কোটি টাকার স্মোগ টাওয়ার]

এই পুজো দেখে সোজা বারাসত রেল স্টেশনের পৌঁছলেই রয়েছে বারাসতের পাইওনিয়ারের পুজো। এবছর তারা ৫১বর্ষের পুজোয় থিম হিসেবে বেছে নিয়েছে হ্যারি পটারের জাদু নগরী। থিমকে ফুটিয়ে তোলার জন্য থাকছে লাইট, সাউন্ডের এফেক্ট। মণ্ডপ চওড়ায় প্রায় ১২০ ফুট। থাকছে চন্দননগরের আলোকসজ্জা। মন্ডপের ভিতরে তিনটি রূপে থাকছে মা কালীর অধিষ্ঠান। থাকছে যন্ত্রচালিত বিভিন্ন প্রতিকৃতী। মূল প্রতিমার উচ্চতা ১৪ ফুট। তিনটি প্রতিমা মিলিয়ে চওড়ায় ২১ ফুট। পুজো কমিটির কর্মকর্তা কাউন্সিলর দেবব্রত পাল বলেন, “জেলার দুস্থ পরিবারের বাচ্চারা খরচ করে পার্কে গিয়ে বিনোদন করতে পারে না। তাদের কথা ভেবেই এই থিম।” এই পুজো দেখে বেরিয়ে ফের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক এসে হেলাবটতলামোড় পেরিয়ে একটু এগোলেই জাতীয় সড়কের ধারেই রেজিমেন্ট ক্লাবের শ্যামা আরাধনা। এবারের ৬৭তম বর্ষের পুজোর মন্ডপ তৈরি হয়েছে মহাভারতের সময়কালের রাজধানী হস্তিনাপুরের অনুকরণে। মন্ডপের দৈর্ঘ্য ৫৫ফুট, উচ্চতা ৬০ ফুট। মন্ডপের ভিতর সাবেকি প্রতিমা তৈরি করছেন কৃষ্ণনগরের শঙ্কর পাল। আলোকসজ্জা থাকছে চন্দননগরের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement