দেব গোস্বামী, বোলপুর: দুবছর পর বোলপুরে তৃণমূল কার্যালয়ের কালীপুজোয় অংশ নেবেন অনুব্রত মণ্ডল। কেষ্টর অনুপস্থিতিতে জেলা কমিটির সদস্য ও সমর্থকদের মধ্যে চাঁদা তুলেই জাঁকজমকহীনভাবে হয়েছে পুজোর আয়োজন। ছিল না বিপুল খাওয়া-দাওয়া বা গয়না পরানোর ব্যাপার। প্রতিমাকে যৎসামান্য গয়না পরিয়েই হয়েছে দলীয় কার্যালয়ে কালীপুজো। তবে এবছর অনুব্রত মণ্ডলের উপস্থিতি এবং অনুগামীদের উৎসাহ অন্যমাত্রা পেয়েছে। কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দলীয় কার্যালয়ে কালীপুজোকে ঘিরেই তুমুল ব্যস্ততা। মহিলা সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্ততায় চলছে আলপনা আঁকার কাজও। দলীয় কার্যালয়ে ঢোকার মুখেই আলোকসজ্জার গেট-সহ যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ।
মহিলা সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্ততায় চলছে আলপনা আঁকার কাজও। নিজস্ব চিত্র।
লাভপুরে বিজয়া সম্মেলনীর মঞ্চ থেকে অনুব্রত মণ্ডল জানান,তাঁর কাকার মৃত্যুর জন্য অশৌচ চলছে। দলীয় কার্যালয়ে পুজোয় শামিল হবেন। তবে কালীপ্রতিমাকে নিজের হাতে গয়না পরানো থেকে পুষ্পাঞ্জলি কোনও কিছুতেই অংশগ্রহণ করবেন না। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সেখানে আসার জন্য আবেদন জানিয়েছেন অনুব্রত।
সাজানো হচ্ছে তৃণমূল কার্যালয়। নিজস্ব চিত্র।
এবার কি এবছর বিপুল গয়না দিয়ে ফের সাজানো হবে প্রতিমাকে? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে দলীয় কর্মী থেকে জেলার বাসিন্দাদের মধ্যে। কারণ অনুব্রতর কালীভক্তি এবং বোলপুরের দলীয় কার্যালয়ে কালীপুজো অন্যান্য কালীপুজোর মতই সুখ্যাত। মায়ের সাজ, আয়োজন, জাঁকজমক সবই নজরকাড়া। দলীয় কর্মীদের দাবি,কালীপ্রতিমার গয়না দু-এক ভরি নয়। গয়না প্রায় ৫৭০ ভরি সোনা রয়েছে। কিন্তু পরানো হবে নামমাত্র গয়না। অনুব্রত অবশ্যই নিজেই জানিয়েছেন, "গত বছর যা পরানো হয়েছিল তাই এ বছরও পরানো হবে। যাঁরা আগের বছর গয়না পরিয়েছিলেন তাঁরাই মাকে গয়না পরাবেন। তবে কী পরিমান গয়না ছিল আমি জানি না।"
দলীয় কার্যালয়ে ঢোকার মুখেই আলোকসজ্জার গেট-সহ যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ। নিজস্ব চিত্র।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে কালীপুজোয় সোনার গয়না ছিল ১৮০ ভরি, ২০১৯ সালে ২৬০ ভরি, ২০২০ সালে ৩৬০ ভরি। আর ২০২১ সালে একলাফে বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৫৭০ ভরি। সেই গয়না নিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা একসময় তৎপর হয়ে উঠেছিল। তা বার বার চর্চায় উঠে এসেছে। তবে সেই গহনা বাজেয়াপ্ত হয়নি, ব্যাংকের লকারেও নেই বলে আগেই দাবি করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাহলে কোটি কোটি টাকার গয়না কোথায়? জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী জানান,"গত বছরগুলির মতই আয়োজন করা হচ্ছে কালীপুজোর। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষজন দলীয় কার্যালয়ে আসবেন। প্রসাদেরও বন্দোবস্ত করা হয়েছে।" তবে কত ভরি সোনা এবছর কালী প্রতিমাকে পড়ানো হবে স্পষ্ট করেননি কেউই।