বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: কল্যাণী এইমসে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতিতে তাঁর পুত্রবধূর সঙ্গে কথা বলার জন্য সিআইডি (CID) নদিয়ার (Nadia) চাকদহ বিধানসভার বিজেপি (BJP) বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষকে (Bankim Ghosh) চিঠি পাঠিয়েছিল আগেই। সেই মতো বুধবার সিআইডি-র ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল বঙ্কিম ঘোষের হরিণঘাটা থানার বড়জাগুলির বাড়িতে যান। বেলা বারোটা নাগাদ সিআইডি-র প্রতিনিধি দল নেতার বাড়িতে ঢোকে। প্রায় দেড় ঘণ্টা ছিলেন তাঁরা। পুত্রবধূ অনুসূয়া ঘোষকে এইমসে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলেই অনুমান করা হচ্ছে। যদিও বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ ও তাঁর বাড়ির লোকেরা সংবাদ মাধ্যমের সামনে এই বিষয়ে মুখ খোলেননি।
উল্লেখ্য, নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে বিজেপির দুই সাংসদ এবং দুই বিধায়ক-সহ মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে নদিয়ার কল্যাণীর এইমসে নিজেদের আত্মীয়দের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ৮ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে এফআইআর (FIR)। কল্যাণী থানায় প্রথমে এফআইআর দায়ের হওয়ার পর সেই দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের ভার নিয়েছে সিআইডি। কল্যাণী থানার পক্ষ থেকে অভিযোগ সংক্রান্ত নথিপত্র সিআইডিকে হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এফআইআরে নাম রয়েছে বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার (Subhash Sarkar), রানাঘাট লোকসভার সাংসদ জগন্নাথ সরকার, বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা, চাকদহ বিধানসভার বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ, কল্যাণী এইমসের এক্সেকিউটিভ ডিরেক্টর রামজি সিং সহ মোট ৮ জনের। এফআইআর করেছিলেন শরিফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। ওই এফআইআরে দুর্নীতি, প্রতারণা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মতো ৪টি ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘বিজেপি থেকে ফেরা নেতারা সুবিধাভোগী-ধান্দাবাজ’, মন্তব্য তৃণমূল বিধায়কের]
এদিন সেই সংক্রান্ত তদন্তেই বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষের হাজির হয় সিআইডি। এর আগে সিআইডি-র চিঠি আসার পর সংবাদমাধ্যমকে বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ বলেন, “এইমসে দুটি ঠিকাদারি সংস্থার মাধ্যমে নিয়োগ হয়। তাদের দেওয়া বিজ্ঞাপন দেখে আমার পুত্রবধূ অনলাইনে আবেদন করেন। অ্যাডমিট কার্ড এসেছিল। পুত্রবধূ পরীক্ষায় বসেছিলেন। দেড় মাস পরে ওঁকে ডেকে নেওয়া হয়। আমি এটাও জানি, এইরকমভাবে অনেকেরই চাকরি হয়েছে। এভাবে অন্য রাজনৈতিক দলের লোককেও চাকরি দেওয়া হয়েছে। দরকার হলে সেটা দেখাব। তদন্ত হোক। আমাদের কাছে লুকোচুরির কিছু নেই। আমার পুত্রবধু চুরিও করেনি, ডাকাতিও করেনি।”
[আরও পড়ুন: পকেটে স্ত্রীর প্রেমিকের নাম লেখা চিরকূট, গাছ থেকে ঝুলছে দেহ, মুর্শিদাবাদে রহস্যমৃত্যু যুবকের]
যদিও এদিন বিধায়কের বাড়িতে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাঁর বাড়ির লোকজন কেউ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলেননি। বিধায়কের নিরাপত্তা রক্ষী জানিয়েছেন, বুধবার সকাল থেকে বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ বাড়িতে ছিলেন না। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁর ফোনও ছিল সুইচড অফ। সিআইডির প্রতিনিধি দলের তার বাড়িতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসার কথা থাকলেও, এফআইআরে তাঁর নাম থাকা সত্ত্বেও তিনি কেন বাড়িতে ছিলেন না, তা স্পষ্ট হয়নি। সিআইডির ৪ সদস্যও সংবাদমাধ্যমকে কিছু বলতে চাননি।