অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার দায় এড়াতে এবার যাত্রীকে ব্যবহার রেলের! না জানিয়েই চৈতালি মজুমদার নামী এক যাত্রীর নাম ব্যবহার করে মালগাড়ির চালক ও সহকারী চালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের অভিযোগ উঠল রেলের বিরুদ্ধে। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই কি রেল কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপ? উঠছে প্রশ্ন। কারণ চৈতালিদেবী নিজেই বলছেন তিনি এব্যাপারে কিছুই জানেন না। তিনি কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। তাঁর বাবা চিন্ময় মজুমদারও একই কথা জানান। যদিও জিআরপির দাবি, ওই মহিলা যাত্রী এখন মিথ্যা বলছেন।
নিজবাড়ির কাছে সোমবার সকালে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে পিছন থেকে ধাক্কা মারে মালগাড়ি। ওইসময় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে কলকাতা যাচ্ছিলেন লেকটাউনের চৈতালি মজুমদার। তিনি এস-৬ কামরাতে ছিলেন। যখন ধাক্কা লাগে তখন তিনিও আঘাত পেয়ে জ্ঞান হারান। চিকিৎসার জন্য নিউ জলপাইগুড়ি রেলওয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চৈতালিদেবী জানিয়েছেন, ওই সময় জিআরপি কর্মীরা এসে তাঁর খোঁজ খবর নেন। বাড়ির ঠিকানা নেন। পাশাপাশি তাঁকে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষরও করিয়ে নেন। এর পর তাঁর স্বাক্ষর ব্যবহার করেই মালগাড়ির মৃত চালক অনিল কুমার ও সহকারী চালক মন্নু কুমারের নামে অভিযোগ দায়ের করে বলে দাবি।
[আরও পড়ুন: গ্রামের দখল কার হাতে? লাগাতার বোমাবাজি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত পাড়ুই]
চৈতালি মজুমদার বলেন, "আমার পায়ে খুব লেগেছিল। আমি আতঙ্কের মধ্যে আছি এখনও। আমি ট্রেনের ভেতরে থেকে বুঝব কী করে ট্রেনে কে ধাক্কা মারল। যে মারা গিয়েছে তাঁকে আমি চিনি না। তাঁর বিরুদ্ধে খামোখা অভিযোগ দায়ের করতে যাব কেন! আমি যখন ভর্তি ছিলাম তখন আমি শুধু ঘটনার বর্ণনা দিয়েছি। তারপর একটা সাদা কাগজে আমার নাম, ঠিকানা লিখে স্বাক্ষর করেছি। আমার নামে যা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন।" একই কথা বলেন চৈতালীর বাবা চিন্ময় মজুমদার। তিনি বলেন, "ঘটনার পর সে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল। চালক ও সহকারী চালককে সে চিনত না, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবে কেন? অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। মেয়ের কাছে যখন জিআরপি এসেছিল তখন আমি ওখানেই ছিলাম। ও এরকম কিছুই করেনি।"
যদিও চৈতালিরা সবটাই মিথ্যা বলছে বলে দাবি জিআরপি-র রেলওয়ে পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগানের। তিনি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তিনি নিজেই আমাদের কাছে অভিযোগ তুলেছেন, এবং আমাদের কাছে তার প্রমাণ রয়েছে। তার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলার তদন্ত ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।"