সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বৃহস্পতিবার চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে নামতেই কঙ্গনা রানাউতকে (Kangana Ranaut) সপাটে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে কুলবিন্দর কৌর নামে এক মহিলা জওয়ানের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে রীতিমতো সরগরম সোশাল মিডিয়া! কুলবিন্দরের বুকের পাটা দেখে ধন্য ধন্য করছে সিংহভাগ নেটবাসিন্দারা। তবে চণ্ডীগড়ের সেই চড় কাণ্ড দিল্লিতে পা রাখার পরও পিছু ছাড়ল না কঙ্গনার! বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বিমানবন্দরে নামতেই মাণ্ডির নবনির্বাচিত 'ক্যুইন'কে প্রায় ছেঁকে ধরলেন সকলে। তার পর?
দিল্লি বিমানবন্দর থেকেই ভাইরাল কঙ্গনা রানাউতের এক ভিডিও। যেখানে দেখা যাচ্ছে কড়া নিরাপত্তাবেষ্টনীকে টপকেই একের পর এক প্রশ্নবাণের মুখোমুখি হতে হচ্ছে অভিনেত্রীকে। উপস্থিত পাপ্পারাজ্জিদের একটাই প্রশ্ন- 'ম্যাম, চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে কী ঘটেছে?' চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে যা ঘটেছে, সেটা নিয়ে যদিও অবগত গোটা দেশ। এমনকী কঙ্গনা রানাউত নিজে পর্যন্ত এক ভিডিওবার্তায় ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেছেন, “আমি উদ্বিগ্ন পাঞ্জাবে বাড়তে থাকা সন্ত্রাস নিয়ে। কী করে এদের সামলাব আমরা?” তবুও দিল্লি বিমানবন্দরে বারবার এহেন তীর্যক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় মাণ্ডির ভাবী সাংসদকে। কঙ্গনা রানাউত কি সেখানে মুখ খুললেন? আজ্ঞে না! বরং সাংবাদিকদের এড়িয়ে গিয়ে সোজা গাড়িতে উঠে পড়লেন কোনওরকম বাক্যব্যায় না করে।
কঙ্গনাকে চড় মারা ওই কর্তব্যরত জওয়ান আদতে পাঞ্জাবের কাপুরথালার বাসিন্দা। কৃষক আন্দোলনকে ‘খলিস্তানি’ বলে আক্রমণ করার জেরেই কঙ্গনা রানাউতকে তিনি চড় মেরেছেন বলে জানিয়েছেন। ঘটনার পরই কুলবিন্দরকে বরখাস্ত করা হয়েছে তাঁর চাকরি থেকে। খোদ মহিলা কমিশনের প্রধান রেখা শর্মার হস্তক্ষেপে এই কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে। যার জেরে রেখাকেও বিস্তর সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে বর্তমানে। কেন এমন কাণ্ড ঘটালেন কুলবিন্দর কৌর? প্রশ্নের মুখে পড়তেই তাঁর সপাট জবাব, "কঙ্গনা বলেছিলেন ১০০ টাকার জন্য কৃষকরা ওখানে বসে আছে। উনি কি গিয়ে বসেছিলেন সেখানে? কঙ্গনা যখন এহেন কটুক্তি করছিলেন কৃষক আন্দোলন নিয়ে, তখন আমার মা শামিল ছিলেন ওই প্রতিবাদে।" বোনের সমর্থনে মুখ খুলেছেন তাঁর ভাই শের সিং মহিবালও। তাঁর কথায়, "কঙ্গনার পার্স চেকিংয়ের সময়ই ঘটনাটা ঘটেছে বলে জানতে পারলাম। উনি বলেছিলেন, পাঞ্জাবের আন্দোলনরত মহিলারা ১০০ টাকায় বিক্রি হয়ে গিয়েছে। বাকবিতণ্ডার মাঝে মাথা ঠান্ডা না রাখতে পেরেই হয়তো আমার বোন চড় কষিয়েছে।"
[আরও পড়ুন: ‘পাঞ্জাবে সন্ত্রাস বাড়ছে’, চড় কাণ্ডে বিস্ফোরক কঙ্গনা! ‘ক্যুইন’-এর পাশে মাণ্ডির পরাস্ত ‘রাজা’ বিক্রমাদিত্য]
একুশ সালে মাসখানেক ধরে জারি থাকা দিল্লির রাজপথে পাঞ্জাবের কৃষক আন্দোলনের বিরোধিতা করে পর পর আক্রমণাত্মক টুইট করেছিলেন কঙ্গনা রানাউত। আন্দোলনরত কৃষকদের কখনও ‘খলিস্তানি’, কখনও ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলেও তোপ দেগেছিলেন। এমনকী, বিতর্কিত তিন কৃষি বিল প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা যখন ঘোষণা করলেন নরেন্দ্র মোদী, তখনও কৃষকদের ‘জিহাদি’ বলে আক্রমণ করেন বলিউড অভিনেত্রী। আর সেই প্রেক্ষিতেই কঙ্গনার বিরুদ্ধে বেজায় চটেছিলেন শিখ সম্প্রদায়ের একাংশ। যার জেরে অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছিল এফআইআর। শুধু তাই নয়, পাঞ্জাবে গিয়ে কৃষকদের বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছিল কঙ্গনাকে। তাঁর গাড়ি ঘেরাও করে সেইসময়ে বিক্ষোভ প্রদর্শনও করেন কৃষকরা। সেই রাগের বশেই কঙ্গনাকে সপাটে চড় মারেন চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে কর্তব্যরত মহিলা CISF জওয়ান।