সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে…’, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বর্তমানে মহিলারাও যেভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করে চলেছেন, জয়ের নিশান উড়িয়ে চলেছেন, তার সাম্প্রতিক উদাহরণ ইসরোর ৫৪ জন মহিলা বিজ্ঞানী, যাঁরা চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3) অভিযানের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। সেই মহিয়সীদের পোশাকবিধি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া-তরজা ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। মানুষ চাঁদে পৌঁছে গেলেও সমাজের একাংশের মন-মানসিকতা যে এখনও ঘুণধরা, তার প্রমাণ সমাজমাধ্যমের ‘রদ্দিমার্কা’ পোস্টের পাহাড়! নেটপাড়ার একাংশ যখন আধুনিকতার সংজ্ঞা শেখাতে ব্যস্ত মহিলাদের, তখন সেসব নীতিপুলিশদের হয়েই সুর চড়ালেন কঙ্গনা রানাউত (Kangana Ranaut)।
ইসরোর মহিয়সী বিজ্ঞানীদের ছবি পোস্ট করে লিখলেন, “ওঁরা প্রত্যেকেই ভারতের প্রথম সারির বিজ্ঞানী, যাঁরা টিপ, সিঁদুর, মঙ্গলসূত্র পরে সহজসরল জীবনযাপনে বিশ্বাসী। প্রকৃত অর্থে ভারতীয়।” তাঁর এমন পোস্ট থেকেই সৃষ্টি হয়েছে বিতর্কের।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য, ইসরোর (ISRO) মহিলাদের জন্য আলাদা করে কোনও পোশাকবিধি নেই। তাঁরা কী পরবেন, কখন পরবেন? সেটা একান্তই তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়। সেখানে আগ বাড়িয়ে অনধিকার চর্চার কোনও প্রয়োজন না থাকলেও ইসরোর মহিলাদের সাফল্যের থেকে তাঁদের পোশাক বিধিটাই বর্তমানে আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে! বিক্রমের অভিযান যে সফল হবে, সেই আত্মবিশ্বাসের জোরেই তাঁরা শাড়ি-গয়না, খোপায় ফুল জড়িয়ে সেজে এসেছিলেন। তবে সেই বিষয়টাকে বর্তমানে অতিরিক্ত চড়া ‘মেক-আপে’ সাজিয়ে এমনভাবে তুলে ধরা হচ্ছে, যেন ভারতের সংবিধানে আজই মহিলাদের জন্য ‘পোশাকবিধির বিশেষ বিধান’ লেখা হবে। বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতও সেই দলেই যোগ দিয়ে সুর চড়ালেন।
[আরও পড়ুন: মমতাকে আমন্ত্রণ বাংলার ‘ধন্যি মেয়ে-জামাই’য়ের! মুম্বইতে জয়া-অমিতাভের সঙ্গে দেখা করবেন ‘দিদি’?]
প্রসঙ্গত, ইসরোর ১৬ হাজার কর্মীর মধ্যে ২৫ শতাংশ মহিলা। তাঁরা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, হেঁশেলের হাতা-খুন্তি নাড়ার বাইরেও মহাকাশ বিজ্ঞানের মতো জটিল বিষয়র গবেষণায় মহিলারা প্রাণপাত করতে পারেন। হোমি জাহাঙ্গির ভাবা, বিক্রম সারাভাই, এপিজে আবদুল কালামের মতোই ভারতগৌরব এই মহিয়সীরা। বিক্রমের আদিত্য-জয়ের এই অভিযানে ৫৪ জন মহিলা বিজ্ঞানীর মধ্যে বিশেষভাবে নেতৃত্বে দিয়েছিলেন যে ৭ জন, তাঁদের মধ্যে এক বঙ্গললনাও রয়েছেন।