সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুদিনের দীর্ঘ আলোচনা, বিতর্কের পর লোকসভায় বুধবার পাশ হয়ে গেল মহিলা সংরক্ষণ বিল। এদিন সংসদের নিম্ন কক্ষে বিরোধীদের নিরঙ্কুশ সমর্থনে বিলটি পাশ হয়ে যায়। বিলটির পক্ষে ভোট দেন ৪৫৪ জন সাংসদ। বিপক্ষে পড়ে মাত্র দুটি ভোট। এবার সেই ইস্যুতেই ফের মোদি সরকারের প্রশংসা করে মুখ খুললেন কঙ্গনা রানাউত (Kangana Ranaut)।
প্রসঙ্গত, কঙ্গনা বরাবরই গেরুয়া শিবিরের হয়ে সওয়াল করে বিরোধী দলগুলিকে কটাক্ষ করেছেন। এযাবৎকাল বহু ইস্যুতেই অভিনেত্রীর মন্তব্য পরখ করে তাঁকে ‘স্বঘোষিত বিজেপি সমর্থক’ অভিনেত্রী বলে তকমা সেঁটেছেন নেটপাড়ার একাংশ। এবার মঙ্গলবার নতুন সংসদ ভবনে পয়লা অধিবেশনের সাক্ষী থেকে ফের মোদিবন্দনা করতে শোনা গেল কঙ্গনা রানাউতকে।
মহিলা সংরক্ষণ বিল (Women’s Reservation Bill) নিয়ে অভিনেত্রীর মন্তব্য, “এটা একটা ঐতিহাসিক দিন। এই নতুন সংসদ ভবন অমৃতকালের প্রতীক। এই গুরুত্বপূর্ণ দিনে বিজেপি যে কোনও ইস্যু বা বিল নিয়ে মন্তব্য পেশ করতে পারত। তবে ওরা নারী ক্ষমতায়নের বিষয়টিকেই বেছে নিল। এটাই বিজেপির আগামী দিনের চিন্তাভাবনা এবং মানসিকতাকে বুঝিয়ে দিল। আমাদের দেশ যোগ্য হাতেই রয়েছে।”
এখানেই অবশ্য থামেননি কঙ্গনা রানাউত। মহিলা সংরক্ষণ বিলের সঙ্গে নারীকেন্দ্রিক সিনেমার প্রসঙ্গও টেনে আনেন অভিনেত্রী। কঙ্গনা বলেন, “আমরা বর্তমানে মহিলাদের সেনাবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর মতো অনেক ক্ষেত্রেই সক্রিয় ভূমিকায় দেখতে পাই। আমার আগামী ছবি ‘তেজস’-এও আমি বায়ুসেনার পাইলটের চরিত্রে অভিনয় করেছি। তাই আমার ধারণা, এক নতুন যুগ বা অধ্যায়ে আমরা প্রবেশ করতে চলেছি।”
[আরও পড়ুন: ‘জওয়ানি বের হবে থানায়’! সলমনের পোস্টার ছেড়ায় শাহরুখ-ভক্তদের শাস্তি পুলিশের]
উল্লেখ্য, অতীতে একাধিকবার এই মহিলা সংরক্ষণ বিলের বিরোধিতা হয়েছে। মূলত সমাজবাদী পার্টি এবং আরজেডির এই বিলে প্রবল আপত্তি জানিয়ে এসেছে। ১৯৯৮ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের আমলে লোকসভায় ওই বিল পেশ করেছিলেন তৎকালীন আইনমন্ত্রী এম থাম্বিদুরাই। কিন্তু সেই বিলের কপি ছিঁড়ে ফেলেন আরজেডির এক সাংসদ। কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর উদ্যোগে, ২০০৮ সালে রাজ্যসভায় ওই বিল পাশ করানোর চেষ্টা হয়। সেবারেও বিরোধিতা করে আরজেডি এবং সমাজবাদী পার্টি। বস্তুত, এর আগে যতবার এই বিল পাশ করানোর চেষ্টা হয়, প্রতিবারই বাধা দেয় আরজেডি এবং সমাজবাদী পার্টি।
এবার এই বিলটি রাজ্যসভায় পেশ করা হবে। লোকসভায় যেভাবে বিরোধীরা বিলটির পাশে দাঁড়িয়েছে, তাতে রাজ্যসভাতেও এটি পাশ হয়ে যাওয়ার সম্যক সম্ভাবনা রয়েছে। বিলটি পাশ হলে দেশের সব বিধানসভা এবং লোকসভায় ৩৩ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।