শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের বিচারের নামে সালিশি সভা। যুগলের মাথা নেড়া করে, হাত-পা বেঁধে মারধরের পর রাস্তায় ঘোরাল স্থানীয় 'মাতব্বর'রা! একবিংশ শতকেও এমনই ঘটনার সাক্ষী রইল উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর। সোমবার এই ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতেই তুমুল চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। অভিযোগের তির রুইয়া গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য -সহ তৃণমূলের একদল কর্মীর বিরুদ্ধে।
ইসলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রুইয়া আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই গ্রামের বাসিন্দা এক বিবাহিত মহিলার সঙ্গে গ্রামের এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এর পর তিনি নিজের স্বামী-সহ চার সন্তানকে ছেড়ে ওই যুবকের ভালোবাসার টানে পালিয়ে যান। দুদিন পর ওই বধূকে খুঁজে গ্রামে নিয়ে আসেন গ্রামবাসীরা। সালিশি সভার আয়োজন করা হয়। সভায় হাজির করা হয় ওই প্রেমিককেও। সালিশি সভায় নিদান দেওয়া হয়, যুগলের মাথার চুল পুরোপুরি কেটে হাত বেঁধে গোটা গ্রামের রাস্তায় ঘোরানো হয়। তার পর প্রকাশ্যে মারধর দিয়ে হাত-পা দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। সালিশি সভার সিদ্ধান্ত যে কার্যকর করা হল, তার প্রমাণ রাখতে ওই যুগলের মাথার চুল কেটে নেড়া করে বেঁধে রাখার প্রতিটি মুহূর্ত ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়। ভিডিওটি ভাইরাল। যদিও তার সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল।
ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার। ভিডিও ভাইরাল হতেই এলাকা জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠতে শুরু করেছে। পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য মহম্মদ নাসিফ আলমের সাফাই, ''চার ছেলেমেয়ের মা কীভাবে অন্য পুরুষের সঙ্গে চলে যায়? তবে ঘটনার সময় আমি উপস্থিত থাকলে হয়ত অন্য ঘটনা ঘটত। পরে সব জানতে পেরেছি।" আক্রান্ত আদিবাসী বধূর পরিবার ইসলামপুর থানায় অভিযোগ জানিয়েছে সোমবার। তাঁর স্বজনদের অভিযোগ, "আমাদের পরিবারে কোনও মহিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে আমরাই বিচার করব। কিন্তু সেখানে সালিশি সভায় এরকম অসভ্যতায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।" ইসলামপুর পুলিশ সুপার জবি থমাস বলেন,"অভিযোগ জমা পড়লে অবশ্যই তদন্ত করা হবে।"