সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোটা দেশের চোখ যখন দিল্লি সীমান্তে নতুন কৃষি আইন নিয়ে কৃষকদের বিক্ষোভের দিকে, তখনই কৃষকদের ‘কাপুরুষ’ বলে বসলেন কর্ণাটকের (Karnataka) কৃষিমন্ত্রী বিসি পাটিল (BC Patil)। দাবি করলেন, যে কৃষকরা (Farmer) আত্মহত্যা (Suicide) করেন, তাঁরা সকলেই কাপুরুষ। কৃষকদের আত্মহত্যার স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘‘যে কাপুরুষরা নিজের স্ত্রী ও সন্তানদের দায়িত্ব নিতে পারেন না, তাঁরাই আত্মহত্যা করেন।’’
কর্ণাটকের কোড়াগু জেলার পোন্নাম্পেটে কৃষকদের জন্য আয়োজিত এক সভায় বিস্ফোরক ভঙ্গিতে বিসি পাটিল আরও বলেন, ‘‘জলে পড়ে গেলে আমাদের সাঁতরাতে হয়। তবেই জেতা সম্ভব হয়ে ওঠে।’’ এদিনের সভায় বাঁশের উৎপাদন কতটা লাভজনক, সে বিষয়ে সওয়াল করার সময়ই তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে কৃষকদের আত্মহত্যার বিষয়টি। তখনই ওই বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন কৃষিমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: ‘করোনা ও লালফৌজ, জোড়া চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় অবিচল আমরা’, চিনকে হুঁশিয়ারি নৌসেনা প্রধানের]
ইতিমধ্যেই এমন মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। রাজ্যের কংগ্রেস মুখপাত্র ভিএস উগরাপ্পা পাটিলের এহেন মন্তব্যটির তীব্র নিন্দা করে বলেন, এমন মন্তব্য করে তিনি কৃষকদের অপমান করেছেন। এবং এর জন্য তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও কৃষকই নিজের জীবন শেষ করতে চায় না। খরা কিংবা বন্যার মতো নানা কারণ রয়েছে, যেগুলির এখনও সমাধান করা যায়নি। সমস্যাটির গুরুত্ব না বুঝেই উনি এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যটি করেছেন।’’
গত তিরিশ বছর ধরেই কৃষক আত্মহত্যা এদেশের একটা জ্বলন্ত সমস্যা। ঋণের বোঝায় জর্জরিত কৃষকরা বহু ক্ষেত্রেই কীটনাশক খেয়ে বা অন্যভাবে নিজেদের জীবনকে শেষ করে দিতে বাধ্য হন। ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো’-র হিসেব বলছে, কেবল ২০১৯ সালেই ১০ হাজার ২৮১ জন কৃষক সারা দেশে আত্মহত্যা করেছেন। গত সপ্তাহেই ওড়িশায় তিন কৃষকের আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। ঋণের অনিয়ম ও কৃষি আইন নিয়ে প্রতিবাদের কারণেই তাঁরা ওই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই কর্ণাটকের বিজেপি নেতার এমন বিতর্কিত মন্তব্য সামনে এল।