সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিক্ষাক্ষেত্রে হিজাব পরা নিয়ে কয়েক মাস আগেই উত্তপ্ত হয়েছিল কর্ণাটকের রাজ্য-রাজনীতি। এবার বিতর্ক দানা বাঁধল স্কুলে গণেশ চতুর্থী আয়োজন নিয়ে। আগামী ৩১ আগস্ট সাড়ম্বড়েই স্কুলে গণেশ পুজো করার অনুমতি দেন সে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী বিসি নগেশ। আর তারপর থেকেই শুরু যাবতীয় বিতর্ক।
কেন স্কুলে গণেশ চতুর্থীর (Ganesh Chaturthi) পালিত হবে? এ প্রশ্ন উঠতেই শিক্ষামন্ত্রীর যুক্তি, “স্বাধীনতা সংগ্রামের যুগ থেকেই বিভিন্ন স্থানে গণেশ চতুর্থী পালনের রীতি রয়েছে। বাল গঙ্গাধর তিলকই স্কুল, হস্টেল, বিশ্ববিদ্যালয়-সহ পাড়ায় পাড়ায় গণেশ পুজো শুরু করেছিলেন। কোনও সরকার ক্ষমতায় এসে এই প্রথা চালু করেনি।” আর এই যুক্তিতেই স্কুলে গণেশ উৎসব হতে পারে বলে মত শিক্ষামন্ত্রীর।
মাস কয়েক আগে হিজাব বিতর্ক নিয়ে কর্ণাটক হাই কোর্ট (Karnataka High Court) জানিয়েছিল, হিজাব, গেরুয়া শল-সহ সমস্ত ধর্মীয় প্রতীককে শিক্ষাঙ্গনের বাইরে রাখতে হবে। ধর্মকে ক্লাসরুম থেকে দূরে রাখার পক্ষেই রায় দিয়েছিল উচ্চ আদালত। কিন্তু বিসি নগেশ জানাচ্ছেন, আগের মতোই স্কুলে গণেশ চতুর্থীর আয়োজন করা যেতে পারে। তাতে কোনও বাধা নেই। কিন্তু অন্য কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হবে না বলেও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়। আর এতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
কর্ণাটক ওয়াকফ বোর্ড স্কুলে গণেশ চতুর্থী পালন নিয়ে কোনও আপত্তি জানায়নি। কিন্তু তাদের পালটা দাবি, তাহলে স্কুল চত্বরে নমাজ পড়া এবং ইদ পালনের অনুমতিও দিতে হবে। ওয়াকফ বোর্ডের যুক্তি, স্কুলে সব ধর্মের ছাত্রছাত্রীরাই পড়াশোনা করে। তাই একপেশে সিদ্ধান্তে পড়ুয়াদের উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। বেঙ্গালুরুর বাসিনদা আকিব খান জানাচ্ছেন, তাঁর ছেলে স্কুলে সব ধর্মের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মেশে। ধর্মের বেড়াজাল ভেঙে সমস্ত উৎসবেই মেতে ওঠে। কিন্তু শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উৎসবই যদি স্কুলে পালিত হয়, তা বাকিদের মন খারাপের কারণ হয়ে উঠতেই পারে। আর এই কারণেই শিক্ষামন্ত্রীর পক্ষপাতদুষ্ট মন্তব্যের নিন্দা করেছে ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া (Campus Front of India)। এমন মন্তব্যের জন্য মন্ত্রীর ইস্তফাও দাবি করেছে এই ছাত্র সংগঠন। এবার দেখার, এই ঘটনার জল কোন দিকে গড়ায়।