সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়েও কর্ণাটকের মসনদে বসছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথও নিয়ে ফেলেছেন বিজেপি পরিষদীয় দলনেতা বিএস ইয়েদুরাপ্পা। স্বাভাবিকভাগেই খুশিতে ডগমগ গেরুয়া শিবির। কিন্তু এ হেন খুশির খবরের মধ্যেই এবার দুঃশ্চিন্তার কালো মেঘ। কর্ণাটকের পথ ধরেই নতুন করে গোয়াতে সরকার গড়ার দাবি জানাতে চলেছে কংগ্রেস। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গোয়ার রাজ্যপাল মৃদুলা সিনহার কাছে বিজেপি সরকার ভেঙে দিয়ে নতুন করে কংগ্রেসকে সরকার গড়ার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানাতে চলেছে রাহুল গান্ধীর দল। বিহারেও একই দাবি জানাচ্ছে লালুপ্রসাদ যাদবের দল আরজেডি। লালুপ্রসাদের ছেলে তথা বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব জানিয়েছেন কর্ণাটকে গণতন্ত্রের হত্যার প্রতিবাদে একদিনের ধরনা কর্মসূচি পালন করবে তাঁর দল । সেই সঙ্গে বিহারে নীতিশ কুমারের সরকার ভেঙে দিয়ে আরজেডিকে সরকার গড়ার সুযোগ দেওয়ার দাবিও জানাবেন তাঁরা।
[আরএসএস যা করছে তা পাকিস্তানে হয়, মুখ খুলেই বিস্ফোরক কংগ্রেস সভাপতি]
কিন্তু হঠাৎ কোন যুক্তিতে এই দাবি বিরোধীদের? গতবছরই বিধানসভা নির্বাচন হয়ে গিয়েছে গোয়ায় । ৪০ আসন বিশিষ্ট গোয়া বিধানসভায় ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছতে পারেনি কোনও দলই। ১৭ টি আসন জিতে একক বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে এসেছিল কংগ্রেস। ১৩টি আসন নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে বিজেপি। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে ছোট স্থানীয় দল এবং নির্দলদের সমর্থনে ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছে যায় গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে একক বৃহত্তম দল হিসেবে সরকার গড়ার দাবি জানায় কংগ্রেসও। তখন অবশ্য কর্ণাটকের পদ্ধতি না মেনে বিজেপি জোটকেই সরকার গড়ার জন্য আহ্বান জানান রাজ্যপাল। কংগ্রেসের নেতাদের দাবি, কর্ণাটকে যে নিয়ম মেনে একক বৃহত্তম দল না হওয়া সত্ত্বেও বিজেপিকে সরকার গড়ার সুযোগ দেওয়া হল, সেই নিয়ম মানলে গোয়াতে সরকার গড়ার অধিকার রয়েছে তাদেরই। একজন বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় গোয়ায় আপাতত কংগ্রেসের হাতে রয়েছে ১৬ জন বিধায়ক। ম্যাজিক ফিগারের চেয়ে ৫ জন কম। তবে, এখনও একক বৃহত্তম দল কংগ্রেসই। তাই তাঁদের দাবিতে যৌক্তিকতা আছে বলেই দাবি স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের । মণিপুরেও ছবিটা একই, একক বৃহত্তম দল হিসেবে উত্তরপূর্বের এই রাজ্যেও নতুন করে সরকার গড়ার দাবি জানানোর ছক কষছে কংগ্রেস।
[অতীতের পরাজয় ভোলেননি ভালা! কর্ণাটকে দেবগৌড়ার চালেই মাত দিলেন তাঁকে]
এদিকে বিহারে কংগ্রেসের দেখানো পথে হাঁটতে চলেছে আরজেডি। ২০১৫ বিধানসভা নির্বাচনে একক বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে এসেছিল লালুপ্রসাদের দল , নীতিশ কুমারের জেডিইউ এবং কংগ্রেসের সঙ্গে মিলে সরকারও গড়েছিল তারা। কিন্তু গতবছর আরজেডির সঙ্গ ছেড়ে বিজেপির সমর্থনে নতুন করে সরকার গড়েন নীতিশ। আরজেডি নেতৃত্বের দাবি, বিহারে তারাই বৃহত্তম দল, তাই সরকার গড়ার অধিকার তাঁদেরই পাওয়া উচিত ছিল। এই দাবি নিয়েই রাজ্যপাল সত্যপাল সিংয়ের দ্বারস্থ হতে চলেছেন তেজস্বী। যদিও, এতদিন পর নতুন করে সরকার গড়ার দাবি কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে সন্দিহান রাজনৈতিক মহল। সাংবিধানিকভাবে তা সম্ভব কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কংগ্রেস এবং আরজেডির এই অবস্থানকে তাই অনেকে রাজনৈতিক গিমিক হিসেবে দেখছেন। সে যায় হোক, দুই রাজ্যে বিরোধীদের এই পালটা চালে আপাতত কিছুটা হলেও চাপে বিজেপি।
The post বুমেরাং কর্ণাটকের রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত! দুই রাজ্যে সরকার গড়ার দাবি বিরোধীদের appeared first on Sangbad Pratidin.