সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনাকালে ব্যপক দুর্নীতির অভিযোগ কর্নাটকের তৎকালীন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে। মাস্ক, ওষুধ, অক্সিজেন সিলিন্ডার-সহ একাধিক ক্ষেত্রে ৭২২৩.৬৪ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতেই এবার সিট গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিলেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া।
ক্ষমতায় আসার পরই প্রাক্তন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কোভিড ফান্ডে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল সিদ্দারামাইয়ার সরকার। কংগ্রেস দাবি করে, কোভিডের সময় ১৩ হাজার কোটির ফান্ড দেওয়া হয়েছিল তৎকালীন বিএস ইয়েদুরাপ্পা সরকারকে। এই টাকায় মাস্ক, ওষুধ, পিপিই কিট, অক্সিজেন সিলিন্ডার-সহ নানা মেডিক্যাল ডিভাইস কেনা হয়। যাতে বিপুল টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তোলে কংগ্রেস। বহু সামগ্রী সরকারি অনুমতি ছাড়াই কেনা হয়। এমনকী মৃত্যুর সংখ্যাও লুকনো হয়।
কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জন মাইকেল ডি কুনহার নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে। সেই কমিটি সম্প্রতি রিপোর্ট পেশ করে সিদ্দারামাইয়া সরকারকে। যেখানে দাবি করা হয়, কোভিডকালে ৭২২৩.৬৪ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। এর পরই এই ইস্যুতে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী। এবং গোটা ঘটনার তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয় (সিট)। কর্নাটকের আইন ও পরিষদীয় মন্ত্রী এইচ কে পাটিল বলেন, ওই রিপোর্টে প্রায় ৫০০ কোটি তোলাবাজিরও অভিযোগ রয়েছে। করোনা মহামারি চলাকালীন পিপিই কিট ও চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যের অর্থ দপ্তরের এক বরিষ্ঠ আধিকারিককে চাকরি থেকে বরখাস্তও করা হয়।
তবে প্রাক্তন বিজেপি সরকারের উপর দুর্নীতির অভিযোগ তুললেও জমি দুর্নীতি মামলায় নিজেও যথেষ্ট চাপে সিদ্দারামাইয়া। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। আর্থিক তছরুপ মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। জমি বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়ার স্ত্রী পার্বতী এবং শ্যালক মল্লিকার্জুনের বিরুদ্ধে প্রথমে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। সেই সূত্রে সিদ্দারামাইয়ার নাম জড়ায় এই মামলায়। সেই মামলায় বিচার প্রক্রিয়া শুরুর অনুমোদন দেন কর্নাটকের রাজ্যপাল থাওয়ার চাঁদ গেহলট। এর পর কর্নাটকের লোকায়ুক্ত আদালতের নির্দেশে সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেওয়া হয়। বিপাকে পড়ে রাজ্যপালের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী। যদিও হাই কোর্টের রায় সিদ্দারামাইয়ার বিপক্ষে যায়। সেই মতো তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে ইডি।