shono
Advertisement

Breaking News

Taliban Terror: ‘ভাবিনি দেশে ফিরতে পারব’, অশান্ত আফগানিস্তান থেকে ফিরে মন্তব্য কাটোয়ার যুবকের

আতঙ্কের সেই স্মৃতি কিছুতেই ভুলতে পারছেন না চন্দন নন্দী।
Posted: 10:27 AM Aug 28, 2021Updated: 10:27 AM Aug 28, 2021

ধীমান রায়, কাটোয়া: তালিবানি তাণ্ডবে (Taliban Terror) কাঁপছে আফগানিস্তান। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো হয়ে উঠেছে ISIS। এমন পরিস্থিতিতে প্রাণ বাঁচিয়ে ‘কাবুলিওয়ালার দেশ’ থেকে ফিরেছেন কাটোয়ার যুবক চন্দন নন্দী। “ভাবিনি দেশের মাটিতে পা রাখতে পারব”, নিজের বাড়িতে বসে জানালেন তিনি।

Advertisement

কাটোয়ার (Katwa) গাঁফুলিয়া গ্রামের নিতান্ত সাধারণ এক পরিবারের সন্তান চন্দন নন্দী। বাবা লক্ষীকান্ত বাড়িতে মুদিখানা দোকান চালান। ২০১৩ সালে বিয়ে হয়েছিল চন্দনবাবুর। তাঁর তিন বছরের মাথায় (২০১৬ সালে) তিনি আফগানিস্তানে (Afghanistan) অবস্থিত ডেনমার্ক ও নরওয়ের দূতাবাসে নিরাপত্তারক্ষীদের সুপারভাইজার পদে চাকরি শুরু করেন। একটি বৃটিশ সংস্থার অধীনে কাজ করতেন চন্দনবাবু। যখন চাকরিতে যোগ দিতে আফগানিস্তানে রওনা দিয়েছিলেন, তখন তাঁর স্ত্রী রিয়া ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা। একমাত্র ছেলে রেয়নের বয়স এখন প্রায় ৫ বছরের।

১৭ আগস্ট দূতাবাসের আবাসন থেকে বেরিয়ে পড়েন চন্দনবাবু ও তাঁর কিছু সঙ্গী। একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করে বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তবে মাঝে বেশ কয়েকবার আটকে পড়েন। শেষে ২০ তারিখ রাতে কোনওক্রমে বিমানবন্দরে পৌছাতে পারেন। দিল্লিতে ফিরেছিলেন দিন পাঁচেক আগে। সেখানে এক বন্ধুর বাড়িতে কাটানোর পর বৃহস্পতিবার রাতে কাটোয়ার গাঁফুলিয়া গ্রামে বাড়িতে ফিরেছেন চন্দন নন্দী। তাঁর কথায়, “তালিবানরা ভারতীয় শুনে আপাতভাবে ভাল ব্যবহার করলেও আশঙ্কা থেকেই গিয়েছিল। ভাবছিলাম কীভাবে দেশের মাটিতে পা রাখতে পারব?”

[আরও পড়ুন: Afghanistan Crisis: তালিবানের হাতেই কাবুল বিমানবন্দর তুলে দিতে চলেছে আমেরিকা!]

আফগানিস্তানে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে কাটোয়া যুবক বলেন, “সেদিন ১২ আগস্ট ছিল। সারাদিন ডিউটি করেছি। পরেরদিন সকাল ছ’টা থেকে আবার শিফট শুরু। তাই রাত্রে ঘুমোচ্ছিলাম। মাঝরাতে হঠাৎ অফিসের লোকজন ডাকাডাকি করতে থাকেন। তাঁরাই জানান তালিবানরা চলে এসেছে। আর এখানে থাকা যাবে না। তারপর অফিস থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়, যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের বলা হবে কেউ যেন বাইরে বের না হই।”

চন্দনবাবু জানান ওই রাতেই অফিসের বেশ কয়েকজন দূতাবাস ছেড়ে চলে যান। থেকে যান প্রায় ৯০ জন। আর আবাসন থেকে বের হয়ে চন্দনবাবুরা কয়েকজন দেখতে পান দূতাবাসের অফিস দাউদাউ করে জ্বলছে। দূতাবাস খালি করার আগেই যাবতীয় তথ্য পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ১৪ আগস্ট তাঁদের আবাসনে ঢুকে পড়ে তালিবানরা। প্রত্যেকের হাতে ছিল অত্যাধুনিক অস্ত্র। বিনা বিবাদে চন্দনবাবুরা গেটের দরজা খুলে দেন। তালিবানরা সকলের পাসপোর্ট চেক করে। “তালিবানরা আমাদের আশ্বস্ত করে আমরা যেন নির্ভয়ে থাকি।” বললেন চন্দন নন্দী।

তবে কাটোয়ার বাসিন্দা আর আফগানিস্তানে ফিরতে চান না। তিনি বলেন, “আমার যে কয়েকজন আফগান সহকর্মী ও বন্ধু ছিলেন তারা সপরিবারে ডেনমার্ক চলে গিয়েছেন। কাদির, হায়দররা খুব ভাল আছে। ওঁদের সঙ্গে আমার ফোনে যোগাযোগ হয়। আর আফগানিস্তানে ফিরতে চান না। আমিও দু’মাস পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাবো। তারপর রাজ্যের মধ্যেই কিছু একটা কাজের সন্ধান করব। কিন্তু আফগানিস্তানে আর ফিরতে চাই না।”

[আরও পড়ুন: বদলা নিল আমেরিকা, মার্কিন ড্রোন হানায় নিকেশ কাবুল হামলার মূলচক্রী ISIS-K জঙ্গি ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement