সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কে চন্দ্রশেখর রাও (K Chandrashekar Rao)। তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী। ক’দিন আগে পর্যন্ত নিজেকে বিকল্প জোটের অন্যতম মুখ হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছিলেন। সেই কেসিআর যেন এখন সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে। বিজেপির সঙ্গে তাঁর ‘আকস্মিক নৈকট্য’ ভীষণভাবে দৃশ্যমান। যা দেখে কংগ্রেস বলছে, “কেসিআরের আচরণেই স্পষ্ট যে তিনি বিজেপির সঙ্গে জোট চাইছেন।”
বস্তুত, কেসিআরের নিজের রাজ্য তেলেঙ্গানায় (Telengana) তাঁর দল ভারত রাষ্ট্র সমিতির মূল প্রতিপক্ষ কংগ্রেস। তাই BRS-এর পক্ষে কংগ্রেসের সঙ্গে একমঞ্চে আসাটা বেশ কঠিনই ছিল। কিন্তু ২০১৯ লোকসভার পর তেলেঙ্গানায় হঠাৎ শক্তি বাড়ানো শুরু করে বিজেপি (BJP)। কংগ্রেস এবং বিআরএসের বিক্ষুব্ধরা যোগ দেওয়া শুরু করেন বিজেপিতে। গেরুয়া শিবিরের আকস্মিক উত্থানে ভীত তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে সরাতে অকংগ্রেসি-অবিজেপি শক্তিগুলিকে একজোট করার চেষ্টা শুরু করেন। সেই সঙ্গে নিজের দলকে তেলেঙ্গানার গণ্ডি পেরিয়ে গোটা দেশে সংগঠন ছড়াতে উদ্যোগ নেন।
[আরও পড়ুন: একাধিক বেনিয়মের অভিযোগ, অ্যাক্সিস-সহ ৩ ব্যাংককে জরিমানা করল RBI]
কিন্তু কর্ণাটক বিধানসভার (Karnataka Assembly Election) ফলাফলের পর তেলেঙ্গানার রাজনীতি পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। তেলেঙ্গানাতেও বিজেপি মিইয়ে পড়েছে। উলটোদিকে চাঙ্গা কংগ্রেস গা-ঝাড়া দিয়ে উঠেছে। ফের সেরাজ্যে কংগ্রেসের পক্ষে হাওয়া বইতে শুরু করেছে। রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) বারবার হুঙ্কার ছাড়ছেন, তেলেঙ্গানাতেও কংগ্রেসই ক্ষমতায় আসবে। এই পরিস্থিতিতে ফের বেগতিক দেখে বিজেপির প্রতি নরম ভাব দেখানো শুরু করেছে কেসিআরের দল। এমনকী, শুক্রবার যখন পাটনায় ১৭টি বিজেপি বিরোধী দল একত্রিত হল, তখনই কেসিআরের ছেলে কে টি রামা রাও দিল্লিতে গিয়ে দেখা করে এলেন রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে।
[আরও পড়ুন: মণিপুরে পাঠানো হোক সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল, শাহী বৈঠকে দাবি তৃণমূলের]
কংগ্রেসের তেলেঙ্গানার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মানিকরাও ঠাকরে বলছেন, “কেসিআরের আচরণেই স্পষ্ট বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন তিনি। শুক্রবার দিল্লিতে বিজেপি এবং বিআরএসের যে বৈঠক হয়েছে, সেটা আসলে সেই জোট নিয়েই আলোচনার জন্য। শুধু মুখে বলা হচ্ছে, তেলেঙ্গানার উন্নয়ন নিয়ে বৈঠক। ওরা আসলে তেলেঙ্গানায় পরিকল্পিতভাভবে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই করতে চাইছে, যাতে কংগ্রেসকে হারানো যায়। সেকারণেই বিজেপি কেসিআরের মেয়েকে দিল্লির মদ কেলেঙ্কারিতে গ্রেপ্তার করছে না।” বস্তুত হায়দরাবাদের রাজনীতির কারবারিরাও বলছেন, কংগ্রেসের এই অভিযোগ একেবারে ফেলনা নয়। কর্ণাটক বিধানসভার ফলাফলের পর সেরাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণে বড়সড় বদল এসেছে।