সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠেকিয়েছিলেন নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলাতেও দারুণ কাজ করেছিলেন। এই অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে প্রশংসাও কুড়িয়েছিলেন কেরলের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা (K K Shailaja)। এবার তিনিই দুর্নীতির অভিযোগে কাঠগড়ায়।
অভিযোগ, কোভিডকালে কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালীন PPE কিট এবং অন্যান্য মেডিক্যাল সামগ্রী কেনার নামে সরকারি কোষাগারের অর্থ তছরূপ করেছেন তিনি। যে PPE কিটের মূল্য মাত্র ৫০০ টাকা সেটি তিনি কিনেছেন ১৫০০ টাকায়। সব মিলিয়ে প্রায় ১৬০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে তাঁর আমলে। এই অভিযোগে কে কে শৈলজাকে তলব করেছেন কেরলের লোকায়ুক্ত (Lok Ayukta)। আগামী ৯ ডিসেম্বর শৈলজাকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কে কে শৈলজার বিরুদ্ধে অভিযোগটি করছেন স্থানীয় এক কংগ্রেস (Congress) নেত্রী। লোকায়ুক্তের দাবি, নিজের অভিযোগের স্বপক্ষে নাকি প্রমাণও দিয়েছেন তিনি। এই গোটা দুর্নীতির কথা নাকি মুখ্যমন্ত্রীও জানতেন।
[আরও পড়ুন: রোহিত শর্মার ভক্তকে খুন বিরাট অনুরাগীর! গ্রেপ্তার করা হোক কোহলিকে, সরব সোশ্যাল মিডিয়া!]
কয়েক বছর আগে কেরলে বিদ্যুতের গতিতে নিপা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল। সুদক্ষ প্রশাসনিক দক্ষতায় পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছিলেন তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা। তবে তিনি আন্তর্জাতিক স্তরে পরিচিতি পান কোভিড সামাল দিয়ে। সংক্রমণ কমানোর ক্ষেত্রে একসময় গোটা দেশের কাছে মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছিল কেরল। আর সবটাই হয়েছিল কে কে শৈলজার হাতযশে। ব্রিটেন, আমেরিকা থেকেও তাঁকে কুর্নিশ জানিয়েছেন বহু মানুষ। এমনকী তাঁকে ম্যাগসাইসাই পুরস্কারের জন্যও মনোনীত করা হয়েছিল। যদিও সেই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেন শৈলজা। এ হেন মহিলার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ। আত্মপক্ষ সমর্থনে শৈলজা বলছেন, এতে দুর্নীতির কিছু নেই। খুব সচেতনভাবে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ নিয়েই তিনি বেশি দাম দিয়ে PPE কিট কিনেছিলেন।
[আরও পড়ুন: ‘আমাদের তিন স্ত্রী থাকলেও সবাইকে সম্মান করি, কিন্তু হিন্দুরা…’, মিম নেতার মন্তব্যে তুঙ্গে বিতর্ক]
কেরলের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দাবি, পিপিই কিটের স্টক শেষ হয়ে যাওয়ার জন্যই ৫০০ টাকার জিনিস ১৫০০ টাকায় কিনতে হয়েছে তাঁকে। কারণ বেশি দাম দিয়ে কিট না কিনলে চিকিৎসকদের প্রাণ সংশয়ে পড়ে যেত। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেই তিনি বাড়তি দামে কিট কেনার সিদ্ধান্ত নেন। মোট ১৫ হাজার কিট তিনি বেশি টাকা দিয়ে কিনেছেন। পরে দাম কমে যাওয়ায় ৫০ হাজার কিটের অর্ডার বাতিল করে দিয়েছিল কেরল সরকার। যদিও শৈলজার এই সাফাই কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে কেরলের (Kerala) শাসক শিবিরের অন্দরেই। উল্লেখ্য, কোভিড রুখে দিয়ে প্রশংসা পেলেও শৈলজাকে দ্বিতীয়বার নিজের মন্ত্রিসভায় রাখেননি বিজয়ন। সেটা কি তবে এই দুর্নীতির অভিযোগের জন্যই? উঠছে প্রশ্ন।