অংশুপ্রতীম পাল, খড়গপুর: একজনের প্রাণ নেওয়ার পর করোনা এবারে হানা দিল খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের অন্দরে। এবারে করোনায় আক্রান্ত হলেন হাসপাতালের হেঁশেলের এক ঠিকাদার কর্মী। সোমবার রাতে ১৯ বছরের এই হেঁশেল কর্মীর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট হাসপাতালে পৌঁছেছে। বাড়ি খড়গপুর গ্রামীণ থানার লছমাপুর এলাকায়। বিষয়টি মঙ্গলবার প্রকাশ্যে আসার পর থেকে গোটা হাসপাতাল চত্বরে ব্যাপক আতঙ্ক ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর সোমবার রাত থেকে হাসপাতালের হেঁশেলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালের হেঁসেল স্যানিটাইজেশন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে খড়গপুর মহকুমা শাসক বৈভব চৌধুরি অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল, হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান নির্মল ঘোষ ও খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ হাসপাতালে যান। গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন।তখন উপস্থিত ছিলেন হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়। মহকুমা শাসক বৈভব চৌধুরি জানিয়েছেন হাসপাতালের কিচেনের এক কর্মীর COVID-19 পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের কিচেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে মঙ্গলবার এই কর্মীর সংস্পর্শে আসা হাসপাতালের হেঁশেল চালানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার ও দশজন কর্মী-সহ মোট ১৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এইদিন। হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া কর্মীকে এইদিন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়ার বড়মা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর হেঁশেল কর্মীর সংস্পর্শে আসা ১৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: অতিমারী আতঙ্কে কুসংস্কার! শিলিগুড়ি ও রায়গঞ্জে দল বেঁধে ‘করোনা মাতার’ পুজো]
বুধবার থেকে হাসপাতালের কর্মীদের নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু হবে। এছাড়া কিচেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে হাসপাতালের রোগীদের খাবার সরবরাহ ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে বিকল্প হিসাবে শহরের একটি ক্যাটারিং সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন হাসপাতালের কিচেনের সমস্ত কর্মীর রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত এই ব্যাবস্থা চলবে। জানা গিয়েছে, গত ২২ মে হেঁশেলের এই কর্মীর সামান্য জ্বর ও গলায় ব্যথা শুরু হয়। তারপরের দিন ২৩ মে এই কর্মীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেই নমুনা সংগ্রহের রিপোর্ট ১০ দিন পরে সোমবার রাতে হাসপাতালে পৌঁছায়। আর রিপোর্ট পৌঁছানোর আগের দিন সোমবার বিকাল পর্যন্ত এই কর্মী গোটা হাসপাতাল ঘুরে বেড়িয়েছেন। বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে খাবার বিতরণ করেছেন। ফলে হাসপাতালে এই নিয়ে একটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি অনেকের অভিযোগ নমুনা সংগ্রহের পর অসুস্থ অবস্থায় এই কর্মীকে কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে। যদিও ঠিকাদার প্রশান্ত ঘোষ বলেছেন, ২১ তারিখে এই কর্মী অসুস্থ হওয়ার পর থেকে আর কাজ করানো হয়নি। তবে হাসপাতালের কর্মীরা জানিয়েছেন ২৩ তারিখের পরেও এই কর্মীকে কাজ করতে দেখা গিয়েছে। পাশাপাশি জানা গিয়েছে এই কর্মী বাড়িতে যেত না। হাসপাতালেই দিনরাত থাকত।
[আরও পড়ুন: বিলাসবহুলভাবে কোয়ারেন্টাইন যাপনের হাতছানি, এলাহি আয়োজন শিলিগুড়ির হোটেলে]
The post করোনা আক্রান্ত হেঁশেলের কর্মী, চরম আতঙ্ক খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে appeared first on Sangbad Pratidin.