সোমনাথ রায়, দিল্লি: বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিলের প্রতিবাদে সোমবার দেশজুড়ে বন্ধ ডেকেছে কৃষক সংগঠনগুলি। দেশের একাধিক জায়গায় তার প্রভাবও পড়েছে। দিল্লি (Delhi) সীমান্তে গুরগাঁও এবং নয়ডাতে ব্যাপক যানজট দেখা দিয়েছে। পুলিশ ও আধা সেনা জওয়ানরা প্রতিটি গাড়ি পরীক্ষা করে দেখছেন। ভারত বন্ধের জেরে কয়েকটি ট্রেনও বাতিল করা হয়েছে। একাধিক হাইওয়ে অবরোধও করেছেন কৃষকরা। তবে অ্যাম্বুল্যান্স, চিকিত্সক ও জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী সকলকেই যাতায়াত করতে দেওয়া হচ্ছে। এদিকে, এর মধ্যেই সিঙ্ঘু বর্ডারে আন্দোলনকারী ৫৪ বছর বয়সি এক কৃষক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন।
বেশ কয়েকদিন আগেই ভারত বন্ধের কথা ঘোষণা করেছিলেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। সেই মতো এদিন সকাল থেকেই দিল্লি-সহ একাধিক জায়গায় পথ অবরোধ করেন কৃষক সংগঠনের কর্মীরা। তবে তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন, বিরোধী দলের কর্মীরাও। হরিয়ানা-পাঞ্জাবের একাধিক পথও অবরোধ করেন তাঁরা। কিন্তু কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত দাবি করেন, তাঁরা কোনও রাস্তাই বন্ধ করেননি। অ্যাম্বুল্যান্স, চিকিত্সক ও জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী সকলকেই যাতায়াত করতে দেওয়া হচ্ছে। রাকেশ টিকায়েতের কথায়, “আমরা কিছুই বন্ধ করিনি। আমরা কেবল একটি বার্তা দিতে চেয়েছি।” দোকানদারদের উদ্দেশে তাঁর আহ্বান, “দোকান বন্ধ রাখুন। বিকেল চারটে পর্যন্ত দোকান খুলবেন না।”
[আরও পড়ুন: দেশের প্রত্যেক মানুষ ডিজিটাল হেলথ কার্ড পাবেন, ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী মোদির]
এদিকে, কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারকে তোপ দাগেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। ‘IStandWithFarmers’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে রাহুলের টুইট, “কৃষকদের অহিংস সত্যাগ্রহ আজও অটুট কিন্তু শোষক সরকার এটা পছন্দ করে না। সেজন্যই ভারত বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে।” টুইটে সমর্থন জানিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও।
পাঞ্জাবে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি নভজ্যোত্ সিং সিধু দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছেন, বন্ধকে সমর্থন করুন। টুইটে তিনি বলেন, ”প্রদেশ কংগ্রেস দৃঢ়ভাবে কৃষক ইউনিয়নগুলির ডাকা ভারত বন্ধের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে। যখন ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে লড়াই হয়, তখন কেউ নিরপেক্ষ থাকতে পারে না।”
উত্তরপ্রদেশে বহুজন সমাজ পার্টির প্রধান মায়াবতী বলেছেন, তাঁর দল শান্তিপূর্ণ ভারত বন্ধ সমর্থন করবে। তাঁর কথায়, ”আমাদের দেশের কৃষকরা তিনটি কৃষি আইন মেনে নেননি। তাঁরা গত ১০ মাস ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।” কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল বলেছেন, ”কালা কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আমরা কৃষকদের পাশে আছি।” রবিবার রাকেশ টিকায়েত বলেন, ”কৃষকরা প্রয়োজনে ১০ বছর ধরে আন্দোলন করবেন। সরকারকে আমাদের কথা শুনতেই হবে।”
এদিকে, সংযুক্ত কিষান মোর্চার পক্ষ থেকে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, কেরল, বিহার-সহ একাধিক রাজ্যে বন্ধে স্বতঃস্ফূর্ততা দেখা গিয়েছে। এছাড়া রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, তেলেঙ্গানাতেও কৃষকদের ডাকা ভারত বন্ধে আংশিক সাড়া মিলেছে।