অভিরূপ দাস: দু’বার সাবধান করার পরেও কথা শুনছেন না বাসিন্দা। বাড়ির আশপাশে ফুলের টবে, ভাঙা আসবাব পত্রে জমে রয়েছে জল। সেখানে গিজগিজ করছে ডেঙ্গু (Dengue) মশার লার্ভা! এমন অবাধ্য বাসিন্দার বিরুদ্ধে এবার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে মামলা করবে পুরসভা (Kolkata Municipality)। শুনানির পর দোষী সাব্যস্ত হলে দিতে হবে এক লক্ষ টাকা! এক দু’জন নয়। গত পাঁচ মাসে ৩৫ জনকে দিতে হয়েছে মোটা টাকা জরিমানা।
সোমবারই বর্ষা প্রবেশ করেছে বঙ্গে। বাড়িতে জমা জল ঠেকাতে তৎপর পুরসভার আধিকারিকরা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চরিত্র বদলেছে ডেঙ্গুর বাহক এডিস ইজিপ্টাই। আগে এডিস মশা পরিষ্কার জলে ডিম পাড়ত। বাড়ির আনাচে কানাচে, পরিত্যক্ত পাত্রে জমে থাকা জলে জন্ম হত এডিস মশার। এখন নোংরা জলেও জন্মাচ্ছে এডিস মশা। বিপদ সেখানেই। বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখেন না অনেকেই। শহর কলকাতায় খোলা ড্রেনও রয়েছে কিছু বাড়িতে। নালার সেই জমে থাকা জলও এখন এডিসের বংশবিস্তারের জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বারংবার তাই বাসিন্দাদের সতর্ক করছে পুরসভা। না হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তা ঠেকাতে বাড়ি তো বটেই। তিলোত্তমার তালাবন্ধ বাড়িগুলিকেও নজরে রেখেছে পুরসভা। শহর কলকাতার বহু বাড়ি বন্ধ। বাড়ির মালিক থাকেন প্রবাসে। প্রায়ই পুরসভায় ফোন আসে, ‘‘এমন বন্ধ বাড়ির ছাতে টবের জমা জলে মশার উৎপাত।’’ অনধিকার প্রবেশ করতে পারছেন না পড়শিরা। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, যদি তালাবন্ধ কোনও বাড়িতে মশার বাড়বাড়ন্ত দেখা যায় সেক্ষেত্রে স্থানীয় পুলিশের সাহায্য নিয়ে তালা ভেঙে বাড়ি, ফ্ল্যাটে ঢোকা হবে।
[আরও পড়ুন: পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে ওড়ানো যাবে না ড্রোন, রথযাত্রার আগে কড়া নিষেধাজ্ঞা পুলিশের]
সপ্তাহে দু’দিন করে ১৪৪টি ওয়ার্ডের প্রতিটি বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে পুরসভা। লক্ষ একটাই। কোথাও আর্বজনা জমা রয়েছে কি না দেখা। যা ডেঙ্গুর মশার বংশবিস্তারের পক্ষে সহায়ক। পুরসভা সূত্রে খবর, এমনটা দেখা গেলে প্রাথমকিভাবে সতর্ক করা হবে বাসিন্দাকে। তা না শুনলে দ্বিতীয় ধাপে কেএমসি অ্যাক্টের ৪৯৬এ ধারায় নোটিস দেওয়া হবে। সাতদিন পর ফের একবার পরিদর্শনে যাবে পুরসভার টিম। যদি দেখা যায় সতর্কতার পরেও উদাসীন বাসিন্দা, সেক্ষেত্রে মিউনিসিপ্যাল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে মামলা করা হবে ওই বাসিন্দার বিরুদ্ধে। দু’পক্ষকেই হাজিরা দিতে হবে মামলা চলাকালীন। কোর্ট যদি মশার লার্ভা জন্মানোর জন্য ওই বাসিন্দাকে দোষী সাব্যস্ত করে দিতে হবে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা। নির্মীয়মাণ আবাসনেও যাচ্ছে পুরসভার টিম। কলকাতা পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস জানিয়েছেন, অনেক নির্মীয়মাণ আবাসনে মশার লার্ভা মিলছে। প্রাথমিকভাবে সতর্ক করা হচ্ছে। তা না শুনলে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ বন্ধ করে দিচ্ছে নির্মাণকাজ।