অভিরূপ দাস: কলকাতার জনসংখ্যার ৪ শতাংশ আক্রান্ত থ্যালাসেমিয়ায় (Thalassaemia)। আক্রান্তের সংখ্যা কমানো অসম্ভব। তবে নতুন করে আর যাতে কেউ আক্রান্ত হয় সেদিকে নজর কলকাতা পুরসভার। এবার কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে খুলছে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা কেন্দ্র। প্রথম লাইব্রেরি খোলা হল স্বাস্থ্যবিভাগে। পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, বিয়ের আগে পাত্র পাত্রী রক্ত পরীক্ষা করান না। কিন্তু সন্তান প্রসবের আগে প্রসূতির পরীক্ষা করা প্রয়োজন। কারণ মা ও বাবা দু’জনেই ওই রক্ত রোগের বাহক হলে ২৫ শতাংশ শিশুর ক্ষেত্রে তাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
থ্যালাসেমিয়া দু’প্রকার। আলফা থ্যালাসেমিয়া এবং বিটা থ্যালাসেমিয়া। বিটা থ্যালাসেমিয়ার চেয়ে আলফা থ্যালাসেমিয়া কম তীব্র। সাধারণত মা-বাবার থেকেই শিশুর মধ্যে বিটা থ্যালাসেমিয়া ছড়ায়। হাই পারফর্ম্যান্স লিকুইড ক্রোম্যাটোগ্রাফি (এইচপিএলসি) রক্ত পরীক্ষায় থ্যালাসেমিয়া রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। কিন্তু রাজ্যের মাত্র ২৩টি সরকারি হাসপাতালে টিসিইউ রয়েছে, সেখানেই একমাত্র ওই পরীক্ষা হয়। তবে এবার কলকাতা পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডেই শুরু হচ্ছে পরীক্ষা। জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছে ইকো ইন্ডিয়া। তাদের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে কলকাতা পুরসভা।
[আরও পড়ুন: ‘আমি তো সিপিএম ক্যাডারদের চাকরি খাইনি…’ নিয়োগ দুর্নীতিতে মমতার মুখে ফের ‘বাম আমল’]
মঙ্গলবারই প্রথম কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগ উদ্বোধন করল তাদের লাইব্রেরির। লাইব্রেরি উদ্বোধনে ডেপুটি মেয়র ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. সুব্রত রায়চৌধুরী, পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের উপদেষ্টা ডা. তপন কুমার মুখোপাধ্যায়। ছিলেন ইকো ইন্ডিয়ার চিকিৎসক ডা. সন্দীপ ভাল্লা। ডা. সন্দীপ ভাল্লা জানিয়েছেন, পুরসভার ১৫ জন চিকিৎসককে দিল্লি নিয়ে গিয়ে থ্যালাসেমিয়া টেস্টের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সেই চিকিৎসকদের টিম লিডার ডা. অর্পণ মিত্র। তাঁরা ফিরে এসে পুরসভার দেড়শো চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীকে ট্রেনিং দেবেন। পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগের নতুন লাইব্রেরিতে দু’লক্ষ টাকার উপর বই রয়েছে। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের উপদেষ্টা ডা. তপন কুমার মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিগত ৪১ বছর ধরে আমি পুরসভার সঙ্গে যুক্ত। এমন লাইব্রেরি তৈরি করা সম্ভব হয়েছে ডেপুটি মেয়রের উদ্যোগে লাইব্রেরির পাশেই রয়েছে রিডিং রুম।
উল্লেখ্য, থ্যালাসেমিয়া নিরাময় করতে গুরুত্ব সহকারে ভাবছে পুরসভা। ফলে নতুন প্রোজেক্টে কোনও গা ছাড়া মনোভাব বরদাস্ত করা হবে না। কলকাতা পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, যাঁরা ট্রেনিংয়ে যাবেন তাদের মুচলেখা দিতে হবে আগামী তিনবছর এই প্রোজেক্টটার সঙ্গে যুক্ত থাকার। আপাতত থ্যালাসেমিয়া হলেও আগামীদিনে পেইন ক্লিনিক বা ব্যাথা নিরাময় কেন্দ্র খুলতে চলেছে পুরসভা। তারজন্য পুরসভার চিকিৎসকদের রিউম্যাটোলজি নিয়েও ট্রেনিং দেওয়া হবে।