ফারুক আলম, বিধাননগর: নিউ টাউনের কাছে ঘুনি বসতিতে অগ্নিকাণ্ডের (New Town Fire) ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। বুধবার সন্ধ্যায় সেখানে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনের গ্রাসে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায় একাধিক ঝুপড়ি। শতাধিকেরও বেশি পরিবার এক রাতের আগুনে মাথার ছাদ হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন ত্রাণ শিবিরে। ঘটনাকে ঘিরে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। যদিও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরেই দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুকে ফোন করে বিস্তারিত খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, পূর্ণাঙ্গ তদন্তেরও নির্দেশও দেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর এহেন নির্দেশের পরেই আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঘুনি বসতির বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন জেলাশাসক শশাঙ্ক শেট্টি-সহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। পাশাপাশি ক্যাম্পে থাকা মানুষজনের সঙ্গেও তাঁরা কথা বলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধ্বংসী এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ৩০০টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে গোটা পরিস্থিতি জানার চেষ্টা করেন জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের আধিকারিকরা। অন্যদিকে ভয়াবহ আগুনের গ্রাসে পুড়ে গিয়েছে বাসিন্দাদের সমস্ত নথি। এক কাপড়ে সব ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হয়েছে তাঁদের।
একদিকে মাথার ছাদ, অন্যদিকে এসআইআর (SIR in Bengal) আবহে নথি পুড়ে যাওয়ায় আতঙ্কে সেখানকার মানুষরা। যদিও এই অবস্থায় সবরকমভাবে মানুষের পাশে থাকার আশ্বাস জেলা প্রশাসনের। জানা গিয়েছে, খুব শীঘ্রই একটি অভিযোগ দায়ের করা হবে। তার ভিত্তিতে দ্রুত একটি নির্দেশিকা জারি করে যাতে দ্রুত নথি তৈরি করে দেওয়া সম্ভব হয়, তা করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
বলে রাখা প্রয়োজন, বুধবার নিউটাউন ইকোপার্কের পিছনে জনবসিপূর্ণ ঘিঞ্জি ঘুনির ঝুপড়ি বসতিতে এই বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ আগুনের গ্রাসে কার্যত পুড়ে ছাই রাজারহাটের জ্যাংড়া–হাতিয়াড়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত অধীনস্থ ওই বসতি। স্থানীয় সূত্রে খবর, আগুনে বাঁশের কাঠামো, ত্রিপলের ছাউনিতে অস্থায়ী প্রায় ৭০–৮০ টি ঝুপড়ি বাড়ি সম্পন্নভাবে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে।
বিধ্বংসী আগুনের এভাবেই পুড়ে গিয়েছে সমস্ত জিনিস।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে ঝুপড়ির একটি বাড়িতে লাগে আগুন। ওই বস্তিতে বসবাসকারী অধিকাংশ বাসিন্দা প্লাস্টিক ও কাগজ কুড়িয়ে জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করেন। ফলে রোজকার দাহ্য পদার্থ ঢাঁই হয়ে থাকে সেখানে। ফলে উৎসস্থল থেকে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকে পাশের বাড়িতে মজুত রাখা একের পর এক গ্যাস সিলেন্ডার বিস্ফোরণে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। আগুনের তীব্রতা আরও বাড়তে লাগে। দমকলের ১০টিরও বেশি ইঞ্জিন কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। যদিও আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নতুন করে বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গিয়েছে। ঘটনাস্থলে রয়েছে দমকল।
