অভিরূপ দাস: পুজোর কলকাতায় একটুকরো চিন। সূদূর দক্ষিণ চিন সাগর, বঙ্গোপসাগর পেরিয়ে তিলোত্তমায় ‘সার্পি লাইট’। প্রথম যা দেখা গিয়েছিল চিনের (China) জিনতাই প্রদেশের ডান্স ফেস্টিভ্যালে।এরপর দক্ষিণ কোরিয়ার ‘ফেস্টিভ্যাল অফ লাইটস’-এ আলো চোখ ধাঁধিয়ে দিয়েছিল সক্কলের। তাই এবার দেখা যাবে বাজে কদমতলা ঘাটের গঙ্গা আরতিতে। আরতির তালে তালে যা নাচবে। ঘুরবে তিনশো ষাট ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে।
ইতিমধ্যেই বাজে কদমতলা ঘাটের গঙ্গা আরতিতে শুরু হয়েছে আলোর ট্রায়াল। একাধিক আন্তর্জাতিক উৎসবে এ আলোর ব্যবহার হয়। সূদূর চিন থেকে আলো নিয়ে এসেছে কলকাতা পুরসভা (Kolkata Corporation)। ১৬ কেজির এই লাইটের লেজার বিমের ক্ষমতা প্রশ্নাতীত। এ আলো আনার পরিকল্পনা এল কীভাবে?
[আরও পড়ুন: ‘খাবার-জল-বিদ্যুৎ সব বন্ধ’, গাজা দখলের নীল নকশা প্রস্তুত ইজরায়েলের]
মেয়র পারিষদ তারক সিং কর্মসূত্রে ঘুরেছেন বিদেশের একাধিক জায়গায়। সেখানেই দেখেছেন এমন আলো। তবে দেশে এই আলো পাওয়া যায় না। চিন থেকে আমদানি করতে হয়। স্বাভাবিকভাবে দামও আকাশছোঁয়া।
তারক সিংয়ের কথায়, ‘‘খোঁজ নিয়ে জানতে পারি দেশীয় যে সমস্ত কোম্পানি আমদানি করে তাদের কাছ থেকে এ আলো কিনতে গেলে এক একটা আলোর দাম পড়ে যাবে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার।’’ কিন্তু চিন থেকে সরাসরি এ আলো কিনলে পাওয়া যাবে এক একটা এক লক্ষ টাকায়।’’ সেখানে সমস্যা একটাই। সাড়ে ছ’হাজার কিলোমিটার পেরিয়ে আলো আনবে কে?
মেয়র পারিষদ জানিয়েছেন, ‘‘খোঁজ পাই একজনের। চেনা জানা একজন ব্যবসার সূত্রে চিন গিয়েছিল। জাহাজে করে তারই কন্টেনার আসার কথা ছিল শহরে।’’ সে জাহাজে তাকেই আলো আনার বন্দোবস্ত করতে বলেন মেয়র পারিষদ। মেয়র পারিষদের অনুরোধে চিন থেকে আলো কিনে জাহাজে করে নিয়ে আসেন ওই ব্যক্তি।
[আরও পড়ুন: ‘প্রত্যেক হামলার পালটা দিতে পণবন্দি খুন করব’, ইজরায়েল সেনাকে হুঁশিয়ারি হামাসের]
শহরে স্থায়ী ভাবে সার্পিলাইটের ব্যবহার এই প্রথম। ফি দিন প্রায় সাড়ে তিন হাজার লোকের ভিড় হচ্ছে গঙ্গা আরতিতে। পুজোয় (Durga Puja) সেই ভিড় পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলেই আশা করছেন পুরকর্তারা। পুজোর মুখে জায়ান্ট স্ক্রিন লাগছে গঙ্গা আরতিতে। ভিআইপিদের জন্য করা হচ্ছে বিশেষ আসনের ব্যবস্থাও। পুজোয় নবমী পর্যন্ত টানা চলবে গঙ্গা আরতি। বিসর্জনের কারণে বিজয়া দশমী থেকে পুজো কার্নিভাল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে তা। এখনও পর্যন্ত চিন থেকে আনা চারটি সার্পিলাইট লাগানো হয়েছে বাজে কদমতলা ঘাটে। যার লেজার বিম আকাশ ছুঁতে চাইছে। ষোলোটি ইস্পাতের বেদি, সেই বেদির উপর দাঁড়িয়েই হাতে একশো আটটা করে প্রদীপ তুলে গঙ্গা আরতি করেন পুরোহিতরা। পুজোর সময় সন্ধে ছ’টা থেকে শুরু হবে গঙ্গা আরতি। চলবে এক ঘণ্টা পর্যন্ত।