অভিরূপ দাস: মশা ঠেকাতে চিনা মডেলেই ভরসা রাখছে কলকাতা পুরসভা। ২০২১-এ যে মশারি ব্যবহার করে ম্যালেরিয়া মুক্ত হয়েছে চিন। তা এবার এল কলকাতায়। রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তর এবং কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ এই মশারি দেওয়া হবে ম্যালেরিয়া অধ্যুষিত এলাকায়। পুরসভা সূত্রে খবর, ফুটপাথবাসী, বস্তিবাসী ছাড়াও নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের দেওয়া হবে এই মশারি।
জানা গিয়েছে, এই মশারির গায়ে মশা একবার বসলে মারা যাবে সেকেন্ড তিনেকের মধ্যেই। মশাখেকো এ মশারির নাম ‘লং লাস্টিং ইনসেক্টিসাইডাল ট্রিটেড মসকিউটো নেট’ সংক্ষেপে বা ‘এলএলআইএন’। পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস জানিয়েছেন, এই মশারির জাল ১০০ শতাংশ পলিয়েস্টার দিয়ে তৈরি। তাতে মেশানো রয়েছে ডেল্টামেথ্রিন নামে এক ধরনের রাসায়নিক। তাই মশারির গায়ে বসলে মশার উড়ে যাওয়া অসম্ভব। শহরজুড়ে ৩০ হাজার এমন মশারি দেওয়া হবে। তার মধ্যে ৬ হাজার চলে এসেছে শনিবার। আজ মঙ্গলবার থেকে তার বণ্টন শুরু হবে। মশারির জালে লাগানো ডেল্টামেথ্রিনের কার্যকারিতা তিন থেকে পাঁচবছর।
[আরও পড়ুন: অবিলম্বে ছাত্রভোট করাতে হবে, রাজ্যকে নির্দেশ হাই কোর্টের]
পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাসের কথায়, সাধারণত মশার চরিত্রগত বৈশিষ্ট্যই হল তারা ঘরে ঢুকে আগে মশারির গায়ে বসে। এরপর সাধারণ মশারিতে ঢুকতে না পেরে কিছুক্ষণ পর উড়ে যায়। কিন্তু এই মশারিতে সেই উড়ে যাওয়ার সময়টুকু পাবে না মশা। বসার দু-তিন সেকেন্ডের মধ্যেই মরে যাবে। শুধু চিন নয়, ২০১৬ সালে শ্রীলঙ্কাও ব্যবহার করেছে এই বিশেষ মশারি। ফল পেয়েছে হাতেনাতে। মশা ঠেকাতে সিঙ্গাপুরের সরকারও ব্যবহার করেছে এই মশারি।
ভারত সরকারের ডাইরেক্টরেট অফ ন্যাশনাল ভেক্টর বর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগাম অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে ম্যালেরিয়া মুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তারই পদক্ষেপ হিসাবে এই মশারি এনেছে বাংলা। কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের উপদেষ্টা তপনকুমার মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, অনেকেই মশারি না টাঙিয়ে এখন কীটনাশক তরল জ্বালিয়ে ঘুমাচ্ছেন। কিন্তু তাতে সম্পূর্ণ নিরাপদে থাকা যায় না। এই মশারি ম্যালেরিয়া থেকে একশো শতাংশ নিরাপত্তা দেবে।