shono
Advertisement

Breaking News

কোলন ক্যানসার কী এবং কেন? এর চিকিত্‍সাই বা হবে কীভাবে?

কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিত্‍সকরা। The post কোলন ক্যানসার কী এবং কেন? এর চিকিত্‍সাই বা হবে কীভাবে? appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 02:22 PM Apr 18, 2017Updated: 12:46 PM Jul 11, 2018

প্রতিদিনই পশ্চিমি দুনিয়া ঘেঁষা লাইফস্টাইল পালন করে থাকেন? তাহলে সাবধান। কারণ এই লাইফস্টাইলের কারণেই বাড়ছে কোলন (মলাশয়) ক্যানসারের ঝুঁকি৷ আর জিনঘটিত হলে রোগীর নিকটাত্মীয়কে আগাম সতর্ক থাকতেই হবে৷ এই বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন অ্যাপোলো গ্লেনিগলস হসপিটালের মেডিক্যাল অঙ্কোলজিস্ট ডা. ইন্দ্রনীল ঘোষ৷ লিখছেন পৌষালী দে কুণ্ডু

Advertisement

ভারতে ১০০ জন ক্যানসার আক্রান্ত পুরুষের মধ্যে সাতজন কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হন৷ মহিলাদের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা পাঁচ৷ এত্ত কম! ভেবে নিশ্চিন্ত হলেই ভুল করবেন৷ কারণ, এতদিন ভারতে খুব বেশি মানুষের কোলন ক্যানসার হত না ঠিকই৷ কিন্তু গত পাঁচ বছরে হঠাত্‍ করে কোলন ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে৷ যার জন্য দায়ী করা যায় আধুনিক লাইফস্টাইল, প্যাকেটজাত খাবার খাওয়ার প্রবণতা দিন দিন বেড়ে যাওয়াকে৷ বিশেষ করে ৪০-৬০ বছর বয়সিদের মধ্যে কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে৷ আমেরিকায় মোট ক্যানসার আক্রান্তদের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ মানুষই কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত৷

[মুসলিমরা হিন্দু মেয়েদের ছুঁলে জবাব দেবে তরোয়াল: হিন্দু যুবা বাহিনী]

মলাশয়ে অনিয়ন্ত্রিত হারে কোষের বৃদ্ধিই হল কোলন ক্যানসার৷ খাবার হজমের পর পাইপের মতো দেখতে বৃহদন্ত্রের মধ্য দিয়ে মলদ্বারে পৌঁছয়৷ তারপর সেখানে সেটি মল হয়ে বেরিয়ে যায়৷ বৃহদন্ত্রের অংশই হল কোলন৷ কোলনের পাইপের ভিতরে ক্যানসার হলে মলত্যাগে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়৷ সে ক্ষেত্রে পাইপের পথে পলিপের মতো কোনও ব্লক হয়ে পেট পরিষ্কার হতে বাধা দিতে পারে৷ যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য (কনস্টিপেশন) হয় কিংবা নিয়মিত মলত্যাগ হয় না৷ পাইপের ভিতর ব্লক না হলে ঘন ঘন পায়খানা হয়ে ডায়েরিয়াও হতে পারে৷ আবার পাইপের ভিতরে ক্যানসারযুক্ত পলিপ থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে৷ তখন মলের সঙ্গে রক্ত বেরোয়৷ শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে অ্যানিমিয়া হয়৷

কাদের কাদের ঝুঁকি রয়েছে:

  • জিনঘটিত কারণে কোলন ক্যানসার হলে রিস্ক জোনে থাকেন রোগীর নিকটাত্মীয়রাও৷
  • আধুনিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত হলে৷ অতিরিক্ত মোটা বা ওবেসিটি-তে আক্রান্ত হলে৷ বেশিক্ষণ বসে বসে কাজ করলে৷
  • ঘন ঘন রেড মিট, প্যাকেটজাত প্রসেসড খাবার খেলে৷ অতিরিক্ত প্রাণীজ প্রোটিন ও হাই-ক্যালোরির খাবার খেলে৷
  • নিয়মিত শরীরচর্চা না করলে৷

লক্ষণ:

  • তলপেটে ব্যথা, পেলভিস ও বৃহদন্ত্রের শেষ অংশে যন্ত্রণা৷
  • মলের সঙ্গে রক্ত, ঠিকমতো মলত্যাগ না হওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়েরিয়া, অতিরিক্ত পেটে গ্যাস হওয়া, ঘন ঘন পায়খানা৷
  • রক্তাল্পতা (অ্যানিমিয়া), ক্লান্তি, খিদে না পাওয়া, ওজন কমা৷
  • তলপেটে খিঁচ বা লাম্প৷

[যোগীর দাওয়াইয়ে চাঙ্গা পুলিশ, ৩ দিনে উদ্ধার ২৭ নাবালিকা]

পেটের গোলমাল নয়:
কোলন ক্যানসার হলে সাধারণত ঠিকমতো পেট পরিষ্কার হয় না৷ কিংবা ঘন ঘন পায়খানা হয়৷ এসব ক্ষেত্রে অধিকাংশ ব্যক্তিই পেটের গন্ডগোল ভেবে বিষয়টি তেমন গুরুত্ব দেন না৷ অথবা পেটের অসুখ সারানোর চিকিত্‍সা করে অযথা দেরি করেন৷ বেশ কিছুদিন ধরে এমন সমস্যা হলে বুঝতে হবে তা ঠিক করে পেট সাফ না হওয়ার জন্যই হচ্ছে৷ আর কোলনে সমস্যা হলেই পেট পরিষ্কার হতে চায় না৷

কোলনোস্কপি ও চিকিত্‍সা: ক্যানসার কি না নিশ্চিত করতে প্রথমে কোলনোস্কপি করে বায়োপসি করা হয়৷ মলদ্বার দিয়ে ক্যামেরা লাগানো একটি যন্ত্র ঢুকিয়ে দেওয়া হয়৷ কোলনে কোনও অস্বাভাবিক কিছু ধরা পড়লে সেই অংশের বায়োপসি করা হয়৷ রিপোর্টে ক্যানসার ধরা পড়লে সিটি স্ক্যান, পেট স্ক্যান করে দেখা হয় সেটি কোন স্টেজে আছে কিংবা কোথায় কোথায় ছড়িয়েছে৷ ক্যানসার যদি শুধুমাত্র কোলনেই থাকে তাহলে ওপেন বা ল্যাপারোস্কপি করে অপারেশন করতে হবে৷ টিউমারের অবস্থান, রোগীর শারীরিক অবস্থা দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত কোন পদ্ধতিতে অপারেশন হবে৷ প্রথম ও দ্বিতীয় স্টেজের ক্যানসার কোলনেই থাকে৷ অপারেশন ও ওষুধ দিয়ে রোগীর চিকিত্‍সা চলে৷ তৃতীয় স্টেজে ক্যানসার কোলন ও লিম্ফনোডে ছড়ায়৷ এই তিন স্টেজে অপারেশন করা যায়৷ চতুর্থ স্টেজে ক্যানসার ধরা পড়লে সাধারণত তখন তা ছড়িয়ে পড়ে৷ এই স্টেজের রোগীকে পুরোপুরি সারিয়ে তোলা যায় না৷ তবে ক্যানসার কোলন ছাড়াও অন্যত্র ছড়িয়ে গেলে সাধারণত অপারেশন করা হয় না৷ সে ক্ষেত্রে কেমোথেরাপি বা টার্গেটেড থেরাপি করা হয়৷ কেমোথেরাপি ট্যাবলেট ও ইঞ্জেকশন দু’ভাবেই হয়৷ টার্গেটেড থেরাপি হয় ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে৷

[লন্ডনে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের হাতে গ্রেপ্তার বিজয় মালিয়া]

জরুরি স্ক্রিনিং:
আমাদের দেশে সাধারণ মানুষ ক্যানসারের লক্ষণ সম্পর্কে খুব একটা জানেন না৷ সেই কারণেই বেশিরভাগ রোগী তৃতীয় ও চতুর্থ স্টেজে শনাক্ত হন৷ পেটের গোলমাল ভেবে বা মলের সঙ্গে রক্ত পড়লে কোষ্ঠকাঠিন্য ভেবে ফেলে রাখবেন না৷ ৫০ বছর বয়স হলেই একবার কোলনোস্কপি করিয়ে নিন৷ রিপোর্ট নর্মাল হলে দশ বছর অন্তর ফের এই টেস্ট করাতে হবে৷ রিপোর্টে অস্বাভাবিক কিছু স্পট দেখা গেলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখান৷

জিনের জন্য আগাম সতর্কতা:
বাবা, মা, ভাই-বোনের মতো নিকটাত্মীয়ের কোলন ক্যানসার হলে এই ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেশি৷ কারণ, এই ক্যানসার হওয়ার অন্যতম কারণ জিন৷ কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে ৫-১০ শতাংশের পরিবারে কোলন ক্যানসারের ইতিহাস রয়েছে৷ এঁদের জিনেই ক্যানসারের সিন্ড্রোমটি থাকে৷ তাই জিনঘটিত কারণে যে রোগী কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হন তাঁর নিকটাত্মীয়দের আগাম বংশগত কারণে জিনঘটিত ক্যানসার শনাক্ত করা যায় এমন কিছু টেস্ট করিয়ে নেওয়া উচিত৷ সাধারণত কোলন ক্যানসারের চার-পাঁচটি সিন্ড্রোম হয়৷ যেমন, কারও কোলনের সর্বত্র ক্যানসারযুক্ত পলিপে ভরে যায় অথবা কোলনে কোনও ক্যানসারযুক্ত পলিপ নেই অথচ পরিবারে একাধিক সদস্যের এই ক্যানসার হয়েছে৷ তাই ফ্যামিলিয়াল অ্যাডিনোমেটাস পলিপোসিস(এফএপি), হেরিডিটরি ননপলিপোসিস কোলোরেক্টাল ক্যানসার (এইচএনপিসিসি) সিন্ড্রোমের টেস্ট করানো উচিত৷

[প্রেক্ষাগৃহে জাতীয় সংগীত বাজলে আর দাঁড়াতে হবে না প্রতিবন্ধীদের]

খাওয়াদাওয়া

  • সপ্তাহে একদিনের বেশি পাঁঠার মাংস বা অন্য রেড মিট খাওয়া চলবে না৷ মুরগির মাংসে অসুবিধা নেই৷
  • প্রচুর শাক-সবজি খেতে হবে৷
  • মদ্যপান একদম নয়৷
  • মশলাদার খাবার খাওয়ার সঙ্গে কোলন ক্যানসারের সম্পর্ক নেই৷
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত৷

যোগাযোগ: ৮০১৭৭৫৬৭৭৫

[নারদ কাণ্ডে সিবিআই নজরে আরও ১৭ জন]

The post কোলন ক্যানসার কী এবং কেন? এর চিকিত্‍সাই বা হবে কীভাবে? appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement