রুপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: কলকাতার পুরভোট ঘোষণার পর প্রথম রবিবাসরীয় প্রচার সারল শাসক তৃণমূল (TMC)। প্রচারে নেমে পড়েছে বিধানসভা নির্বাচনে একটাও আসন না পাওয়া বাম ও কংগ্রেসও। কিন্তু রবিবারের প্রচারে কলকাতায় ঘাসফুল-লাল-হাতের পতাকা উড়লেও দেখা মিলল না গেরুয়ার। একুশের নির্বাচনে রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল বিজেপির পতাকা নিয়ে কাউকেই দেখা গেল না প্রথম রবিবারের প্রচারে। আসলে কলকাতা পুরভোটে (Kolkata Municipal Election) সবদল প্রার্থী ঘোষণা করে দিলেও বিজেপি তাদের প্রার্থীদের নামই ঘোষণা করতে পারেনি এখনও।
হাতে আর মাত্র দু’টো রবিবার। তারপরই ১৯ ডিসেম্বর কলকাতা পুরসভার হাইভোল্টেজ নির্বাচন। রবিবারের প্রচারে মহানগরের অলিগলিতে যখন তৃণমূল-বাম-কংগ্রেসের (Congress) প্রার্থীরা বেরিয়ে পড়েছে। তখন এদিনও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারল না পদ্মশিবির। দলীয় সূত্রে খবর, বেশ কিছু আসনে এখনও পর্যন্ত নাম চূড়ান্তই করে উঠতে পারা যায়নি। সেই আসনগুলি নিয়ে রবিবার রাত পর্যন্ত ঐক্যমতে পৌঁছতে পারেনি শীর্ষ নেতৃত্ব। সোমবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন দলের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা (Rahul Sinha)। তিনি জানান, “তালিকায় মহিলা ও যুবদের প্রাধান্য থাকছে। এছাড়া, সমাজের সর্বস্তরের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।”
[আরও পড়ুন: Kolkata Civic Polls: প্রস্তুতি তথৈবচ, ত্রিপুরার ফল দেখিয়ে কর্মীদের চাঙ্গা করতে চাইছে বিজেপি]
রাজ্য নেতৃত্বের দাবি, তালিকায় কোনও চমক থাকছে না। চমক দিয়ে বা বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের থেকে কাউকে প্রার্থী করার ঝুঁকি এবার পুরভোটে নিতে চাইছে না বঙ্গ বিজেপি। তাই ভরসা রাখা হয়েছে পুরনো কার্যকর্তাদের উপরই। যদিও দলের একাংশের কথায়, গত বিধানসভা ভোটের ঠিক উলটো ছবি এবার। কোনও সেলিব্রিটি বা চমকদার কেউ পুরভোটে পদ্মশিবিরে প্রার্থী হতেও সেভাবে আগ্রহী নন। রবিবার প্রথম দফায় কিছু ওয়ার্ডে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। সকাল থেকেই দলের নির্বাচনী কার্যালয় হেস্টিংসে তালিকা চূড়ান্ত করতে বৈঠক করেন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের কেন্দ্রীয় নেতা অমিত মালব্য, দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh), রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder)। রাত পর্যন্ত দু’দফায় বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, প্রার্থী তালিকায় ৬০ শতাংশেরও বেশি নতুন মুখ থাকছে। দলের পুরনো কার্যকর্তারাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রার্থী হচ্ছেন। আবার রাজ্য কমিটির নেতারা অনেকেই প্রার্থী হতে রাজী নন। তবে যুব-মহিলা-এসসি, এসটি মোর্চা থেকে প্রার্থী করা হচ্ছে। তালিকায় যুবদের সর্বাধিক প্রাধান্য। প্রায় ৪০ শতাংশের মতো থাকছে মহিলা প্রার্থী।
[আরও পড়ুন: Kolkata Civic Polls: ‘আমি তো তৃণমূলেই আছি’, কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুরবদল বিদায়ী কাউন্সিলরের]
কিন্তু এই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে এত দেরি কেন? দলের অন্দরে এই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। আবার শনিবারের মতো রবিবারের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকেও হাজির ছিলেন না কলকাতা পুর নির্বাচনে দলের অন্যতম পর্যবেক্ষক সাংসদ অর্জুন সিং, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্জুন সিং পারিবারিক কাজে গোয়াতে রয়েছেন বলে খবর। তবে নির্বাচনী কমিটিতে থাকা কয়েকজন রাজ্য নেতার কথায়, তাদের বৈঠকেই ডাকা হচ্ছে না। দলের মধ্যে প্রশ্ন, নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে আইনি জটিলতা থাকলেও সব দলই প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করে রেখেছিল। কিন্তু বিজেপির শীর্ষ নেতারা সেই পথে হাঁটলেন না কেন? দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, কয়েকটি আসনে দ্বিমত আছে। সেজন্য তালিকা ঘোষণা আটকে আছে।