স্টাফ রিপোর্টার: ঝেঁপে বৃষ্টি নামলে মহানগরের পঁচাত্তর শতাংশ জল যে নদী দিয়ে বেরোয়, তারই লকগেটে 'লিকেজ'। হাতেনাতে ধরলেন মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিং।
বর্ষায় শহরের খাল কী অবস্থায় আছে। পরিদর্শনে বেরিয়েছিল নিকাশি বিভাগ। সেখানেই মেয়র পারিষদ দেখেন, বিদ্যাধরী নদীর ঘুসিগাটা লক গেটের পাঁচ নম্বর গেটে রয়েছে বড়সড় ফাটল। সেই ফাটল দিয়ে জোয়ারের সময় খালের জল নদীতে যাওয়ার বদলে উলটে চলে আসছে খালে।
তপসিয়া এলাকায় রয়েছে সুদুর বিস্তৃত খাল, যা পুরসভার কাছে স্টর্ম ওয়াটার আউটলেট নামে পরিচিত। এই 'স্টর্ম ওয়াটার আউটলেট' খাল দিয়ে বর্ষার জল বিদ্যাধরী নদীতে পড়ে। কিন্তু ঘুসিগাটা লক গেটের ফাটলের ফলে উলটো পথে জল চলে আসছে খালে। আষাঢ়ের মাঝামাঝি। সামনে ভরা শ্রাবণ। তার আগে এই লকগেট মেরামত না হলে ভেসে যেতে পারে কলকাতা!
[আরও পড়ুন: চোপড়া কাণ্ডে ধৃত আরও ১, ভিডিও ফুটেজ দেখে অভিযুক্তকে শনাক্ত পুলিশের]
এই অবস্থা দেখার পরই লকগেটের মেকানিক্যাল বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের দ্রুত তা ঠিক করার নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র পারিষদ। পনেরো দিনের মধ্যে ফাটল ঠিক করতে হবে নির্দেশ দিয়েছেন তারকবাবু। ফাটল ধরা পড়েছে কেষ্টপুর লক গেটেও। সেখানেও একই অবস্থা। জোয়ারের সময় বিদ্যাধরীর জল উলটো ঢুকছে কেষ্টপুর খালে।
শহরের খালগুলি সেচ দপ্তরের অন্তর্গত। সমস্ত খাল পরিদর্শন করে একটি অডিও ভিজুয়াল প্রেজেন্টশন তৈরি করেছে নিকাশি বিভাগ। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) উপস্থিতিতে তা তুলে দেওয়া হয়েছে সেচ দপ্তরের হাতে। পুরসভা সূত্রে খবর, কুড়ি দফা সমস্যা চিহ্নিত করেছে নিকাশি বিভাগ। তার মধ্যে অন্যতম একাধিক খালের দুপাড়ে জবরদখল। আর যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলার অসুখও বেড়েছে।
দক্ষিণ শহরতলির সন্তোষপুর জোড়াব্রিজে সুতি খাল আর গুনিয়াগাছি খালে জলের স্রোত অত্যন্ত কম। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কথায়, যথেচ্ছ প্লাস্টিকের ব্যবহারের ফলেই বাধা পাচ্ছে জলের স্রোত। দক্ষিণ শহরতলির মুকুন্দপুর দাসপাড়া ব্রিজের কাছেও খালে জলের স্রোত নেই বললেই চলে। এই খালে জলের স্রোত বাড়ানোর জন্য সেচ দপ্তরকে বলেছে নিকাশি বিভাগ।
একাধিক খালে জবরদখল পুরসভার মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্রমশ জবরদখল হতে থাকায় খাল ক্রমশ সরু হয়ে যাচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে পলি তোলার কাজ। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, সেচ দপ্তরের জায়গা দখল করে বাড়ি উঠে গিয়েছে। পলি তুলে বোটে করে পাঁচ কিলোমিটার দূরে গিয়ে ফেলা বিপুল খরচসাপেক্ষ। ফিরহাদ জানিয়েছেন, ঠিক হয়েছে খালের দুপারে স্থায়ী রাস্তা তৈরি করবে পুরসভা। তাহলে ব্ল্যাক টপে জবরদখল করা ঠেকানো যাবে। বেলেঘাটা খাল, সুতি খাল, বেগোর খালে জবর দখল সরাতে অভিযান করার পরিকল্পনা নিয়েছে পুরসভা-সেচ দপ্তর। ফিরহাদ জানিয়েছেন, এর পর খালে ময়লা ফেললে মোটা টাকা জরিমানা নেওয়া হবে।