মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য: শুনলাম, ইস্টবেঙ্গলের প্র্যাকটিসে নেমে পড়েছে আনোয়ার। ডার্বির (Kolkata Derby) আগে কতটা ফিটা সত্যিই আমি জানি না। একজন কোচ দল তৈরির আগে যেভাবে খুব কাছের থেকে তাঁর প্রত্যেকটি ফুটবলারকে দেখতে পারেন, আমি সেই জায়গায় নেই। ফলে আনোয়ার ডার্বির জন্য কতটা তৈরি, তা সত্যিই আমি বলার জায়গায় নেই। তবে আমোয়ার যদি সত্যিই খেলার মতো জায়গায় থাকে, তাহলে এটুকু অন্তত বলতে পারি আমি যদি ইস্টবেঙ্গলের কোচ হতাম,তাহলে আনোয়ারকে রবিবারের ডার্বিতে খেলাতাম।
বুধবার টিভিতে অলটিন আসারের বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গল ম্যাচটা দেখছিলাম। সত্যি বলতে ডিফেন্স লাইন দেখে আমি হতাশ। কুয়াদ্রাতের সিষ্টেমে ডিফেন্ডাররা দেখলাম পুরো ডিফেন্সলাইনটাকে অনেকটা তুলে নিয়ে খেলছে। এরকম সিষ্টেমে খেলতে হলে ডিফেন্ডারদের অনেক দ্রুত গতির হতে হয়। তাছাড়া প্রতিপক্ষর আক্রমণের সময় দুই উইংব্যাককে দ্রুত গতিতে নেমে দ্রুত কভার করতে হয়। আমি কিন্তু ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্ডারদের মধ্যে এই গুণগুলি সেদিন দেখতে পাইনি। ফলে আনোয়ার যদি খেলার মতো ফিট থাকে, তাহলে নিশ্চিতভাবেই ওকে ডার্বির দিনে প্রথম একাদশে রাখতাম।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অবস্থায় চিন্তিত আইসিসি, মহিলাদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হতে পারে আমিরশাহীতে!]
কোনওরকম রাখা ঢাক না রেখেই বলছি, বর্তমান ভারতীয় ফুটবলে আনোয়ার আলি এক নম্বর ডিফেন্ডার। সেরকম একজন ফুটবলার যদি ম্যাচ খেলার মতো ফিট থাকে, তাহলে তাকে ডার্বিতে মাঠের বাইরে বসিয়ে রাখব, এরকমটা হয় না কি? অনেকে বলছেন, মোহনবাগানের সঙ্গে চুক্তির ঝামেলা কাটিয়ে সবে এসেছে। এই সময় রীতিমতো চাপে থাকবে সে। তাই প্রথম ম্যাচেই ডার্বিতে না খেলানোই ভাল।
সত্যিই আমি বুঝতে পারছি না, আনোয়ার কেন চাপে থাকবে? ও তো খেলা থেকে নির্বাসিত হয়নি। বলেছে, মোহনবাগানে খেলবে না। ইস্টবেঙ্গলে এসেছে। একটা দিনের জন্যও মাঠের বাইরে থাকতে হয়নি। আর এতে যদি সমর্থকদের চাপের জন্য ডার্বি খেলার জায়গায় না থাকে, তাহলে বলব, ইস্টবেঙ্গলের জার্সি পরে খেলার জায়গায় আগে তৈরি হোক, তারপর খেলবে। ইস্টবেঙ্গলের জার্সি পরার মতো খেলার যোগ্য হয়েছে বলেই আনোয়ারকে দলে নেওয়া হয়েছে। দেশের এক নম্বর ডিফেন্ডারের আবার চাপ কী?
বিশ্বাস করুন, ডার্বি খেলতে আমার ভীষণ সহজ মনে হত। অন্য ম্যাচগুলোয় যতটা চাপে থাকতাম, ডার্বিতে অনেক ফুরফুরে মেজাজে খেলতে নামতাম। চারিদিকে এক সমর্থক, ভাল খেলার জন্য আরও উদ্বুদ্ধ হতাম। আমার ধারণা ফিট থাকলে চাপ নয়, ডার্বি খেলার জন্য ছটফট করবে আনোয়ার। ওতো বিদেশ থেকে আসা নতুন বিদেশি নয়। ভারতীয় ফুটবলে এতদিন ধরে খেলছে।
এর আগে ডার্বি খেলেছে। কোচ চেনেন। সব কিছু চেনা পরিবেশ। তাহলে আবার চাপটা কীসের? আর নতুন ফুটবলার নয় বলে কোচও জানেন, আনোয়ার কী ধরণের ফুটবলার। আর আনোয়ার খেলা মানে শুধুই ডিফেন্স শক্তিশালী হওয়া নয়, মাঠের যে কোনও পজিশনে একজন বিদেশি খেলানো সম্ভব হবে। আমি কোচ হলে অন্তত এই সুযোগটা ছাড়তে চাইতাম না। তবে আবার একটা কথা বলছি, ডার্বির আগে সত্যিই জানি না, আনোয়ার খেলার মতো জায়গায় রয়েছে কি না। আমি যা বললাম, আনোয়ার ডার্বি খেলার মতো চূড়ান্ত ফিট রয়েছে এরকমটা ধরেই বললাম।