সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ভাবি আমার মুখ দেখাব/ মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’। কলকাতার দুর্গাপুজোয়(Kolkata Durga Puja) কবি শঙ্খ ঘোষের এই পংক্তি বড়ই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। বিজ্ঞাপনে ছয়লাপ পুজোর শহর। যে মণ্ডপের কাছে যত বিজ্ঞাপন, ইঁদুর দৌড়ে তত এগিয়ে সেই মণ্ডপ। আর এই প্রতিযোগিতার গেড়োয় কোথাও যেন হারিয়ে যাচ্ছে বাঙালির প্রাণের পুজো। এবার সেই ভাবনাতেই সাজছে খিদিরপুর সর্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতি।
শহরজুড়ে থিমের লড়াই, একে অপরকে ছাপিয়ে যাওয়ার মরিয়া প্রচেষ্টা। সেই প্রতিযোগিতাতেই পুজো এখন কর্পোরেট রূপ ধারণ করেছে। আর তাতেই বাঙালির ভালোলাগার ও ভালোবাসার পুজো অনেক সময়ই প্রাণহীন হয়ে পড়ছে। ছোটবেলায় পাড়ার ক্লাবে ঠাকুর আসা, অঞ্জলি দেওয়া, ভোগ বিতরণ, ধুনুচি নাচ থেকে সিঁদুর খেলা, সব আচার অনুষ্ঠানের মধ্যেই ছিল আন্তরিকতা। কিন্তু বর্তমানে তাতে লেগেছে কর্পোরেট ছোঁয়া। অন্যকে টপকে যাওয়ার প্রচেষ্টায় বড় করে পুজো করার উদ্যোগ নিচ্ছে ক্লাবগুলো। তার জন্য প্রয়োজন বড় বাজেট। আর সেই অর্থ জোগাচ্ছে কর্পোরেট সংস্থাগুলো। ফলে তাদের নানা চাহিদাও মেটানো প্রয়োজন।
[আরও পড়ুন: দু’কামরার ফ্ল্যাটে মাথা গুঁজেই হরগৌরীর পুজোর প্রস্তুতি চালাচ্ছেন রূপান্তরকামীরা]
আর এই ইঁদুর দৌড়েই যারা দৌড়তে পারছে, তারা এগিয়ে চলেছে দুর্বার গতিতে। যারা পারছে না, তারা নমো নমো করে সারছে পুজো। আড়ম্বরহীন হয়ে পড়ছে সেই পুজো। অর্থাৎ পুজোর আমেজ, আবেগ আর আন্তরিকতাকে ছাপিয়ে গিয়েছে বিজ্ঞাপনের উৎসব। পুজোর মাপকাঠি যেন তৈরি করে দিচ্ছে স্পনসররাই। সেই ভাবনাই খিদিরপুর সর্বজনীনে ফুটিয়ে তুলছেন শিল্পী প্রবীর সাহা। নানা ধরনের বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং, ব্র্যান্ডিং ব্যবহারের মাধ্যমে বিষয়টি বাস্তবায়ন করা হবে। মণ্ডপের আনাচে-কানাচে বিজ্ঞাপনের মেলা। যেখানে দুর্গাই যেন ব্রাত্য, পুজো তো বিজ্ঞাপনের।