সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আপেল, নাশপাতি থেকে আঙুর, শশা, বেদানা। বেগুন ফুলকপি থেকে বাঁধাকপি, পটল, বিনস, কুমড়ো। লক্ষ্মীপুজোর আগে বাজারে আগুন। কাঁচা সবজি থেকে ফল-ফুল সবকিছুই যেন দামে আগুন ঝরাচ্ছে। ফলে কোজাগরীর আরাধনার জোগাড় করতে গিয়ে পকেট ফাঁকা আমগেরস্তের। কারও বাড়িতে আজ রাতেই, কারও বাড়িতে আবার বৃহস্পতিবার কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। দেবীকে ফল, মিষ্টি, আনাজ-সহ নৈবেদ্য সাজিয়ে দেওয়ার রীতি রয়েছে ঘরে ঘরে। কিন্তু পুজোর আয়োজন করতে গিয়ে কার্যত নাভিশ্বাস বের হওয়ার অবস্থা মধ্যবিত্ত বাঙালির।
অধিকাংশ বাঙালির বাড়িতেই লক্ষ্মীপুজো হয়। নিজেদের সাধ্য মতো কম-বেশি সকলেই এই পুজোর আয়োজন করেন। কিন্তু নানাবিধ কারণে এবার সবকিছুর দাম একটু যেন বেশিই বেশি। দশকর্মার দোকানেও পকেট হালকা হচ্ছে সাধারণ মানুষের। ফলে ধনলক্ষ্মীর ব্রত পালন করতে গিয়ে যে মধ্যবিত্তের ভাঁড়ে মা ভবানী হওয়ার জোগাড়। মঙ্গলবার কলকাতা-সহ শহরতলির বাজারগুলিতে আপেল বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজিতে ২০০ টাকায়, বেদানা ২৫০-৩০০, নাশপাতি ১৫০-২০০, পেয়ারা ও শশা ৬০-৮০। শাঁখ আলু ১০০ টাকা, পানিফল ৬০-৮০, বাতাবি লেবু ২৫-৩০ টাকা কেজিতে। প্রতি পিস নারকেলের দাম ৫০-৬০ টাকা, আনারসের ১০০ টাকা। বড় আকারের আখের দাম ২০-২৫ টাকা, কাঁঠালি কলা ৬০-১০০ টাকা ডজন। ধানের শিষ ১০-২০ টাকা পিস। শিষ ডাব ৪০-৬০ টাকা।
ফলের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে চড়া দাম সবজি বাজারও। এদিন বেগুন বিকিয়েছে ১৫০-১৭০ টাকা কেজিতে, পটল ৮০, কাঁচালঙ্কা ২০০-২৫০, টম্যাটো ১০০-১২০, বিনস ১০০ টাকায়। ফুলকপি, বাঁধাকপি এদিন বিকিয়েছে ৫০-৭০ টাকা প্রতি পিসে। এছাড়া চন্দ্রমুখী আলুর দাম ছিল ৩৬ টাকা কেজি। জ্যোতি ৩০-৩২ টাকা। ফলে বাজারের পরিস্থিতি যা, তাতে ভোগের আয়োজন করতে বেশ বেগ পেতে হবে আমগেরস্তকে। ফল-সবজির মতোই ফুলের দামও ঊর্ধ্বমুখী। মালার আকার অনুযায়ী দামও বেশি। এদিন এক এক পিস পদ্ম বিক্রি হয়েছে ৩০-৪০ টাকায়। গাঁদাফুলের মালার দাম প্রায় ২০-৪০ টাকা। আবার রজনীগন্ধার মালা বিক্রি হচ্ছে ৩০-৬০ টাকায়।
সবজি ব্যবসায়ীদের দাবি, একাধিক জেলায় বন্যার কারণে সবজির চাষে ক্ষতি হয়েছে। প্রচুর জিনিস পচে গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তাই দাম বেড়েছে। তাছাড়া পুজোর সময় থেকে সবজির দাম একটু বেশিই থাকে। লক্ষ্মীপুজোয় তা আরও বাড়ে। পুজো শেষে আবারও কিছুটা কমবে। ফল ব্যবসায়ীদের কথায়, পুজোর সময় থেকেই ফল আনার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হয়। নানা জায়গায় বিধিনিষেধ চলতে থাকায় পণ্য পরিবহণের খরচ বেড়ে যায়। তারই প্রভাব পড়ে জিনিসপত্রে। জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে তৈরি রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে বলেন, ‘‘হাটে জিনিসপত্রের দাম কমছে ধীরে ধীরে। লক্ষ্মীপুজোর পর থেকে দাম অনেকটাই কমবে। এই সময় দামটা একটু বেশি নেয় ব্যবসায়ীরা।’’