shono
Advertisement

Breaking News

Tigress Zeenat

৫ টোপ, আট ক্যামেরা! তবু 'জিনাতে'র দেখা নাই! আজ কি নতুন কৌশল?

গুহাতেই নিজেকে আড়াল করছে জিনাত।
Published By: Paramita PaulPosted: 11:20 AM Dec 26, 2024Updated: 01:51 PM Dec 26, 2024

সুমিত বিশ্বাস ও অমিত লাল সিং দেও, পুরুলিয়া: একটা, দুটো নয়। এবার পাঁচ- পাঁচটা ফাঁদ। সেই সঙ্গে জঙ্গলে যেমন ভাবে গবাদি পশু বিচরণ করে থাকে। ঠিক সেই ভাবেই গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয় দুটো মহিষ, একটি ছাগল। আর ঠিক তার পাশেই খাঁচা যুক্ত গাড়িতে শরীরে লতাপাতা জড়িয়ে ক্যামোফ্লাজ হয়ে ঘুমপাড়ানি গুলি করা দুই শুটার। একেবারে তাক করে ছিলেন। সেই সঙ্গে ৮টা ট্র্যাপ ক্যামেরা। বুধবার সেই বেলা ১১টায় শুরু হওয়া বাঘবন্দি অভিযান দুপুর থেকে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত। কিন্তু তাঁর দেখা নাই রে! ফলে আজ বৃহস্পতিবার বান্দোয়ানে বনদপ্তরের অতিথি আবাসে সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রাজ্যের বন বিভাগ বৈঠকে বসে জিনাতকে (Tigress Zeenat) বন্দি করতে নতুন কৌশল ঠিক করতে পারেন।

Advertisement

আসলে জিনাত 'ফুল মিল'-এ আয়েস করে গুহায় বিশ্রাম নিচ্ছে। বুধবার ভোর থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত রিয়েল টাইম মনিটরিং ব্যবস্থাপনায় ওড়িশার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষের হেডকোয়ার্টার বারিপোদা এমন তথ্য-ই জানান দিয়েছে। যা চিন্তায় ফেলে দিয়েছে ওই ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষের আধিকারিকদের। কারণ এই রাইকা পাহাড় যে তার বসতির আদর্শ জায়গা হয়ে উঠেছে। খাবার, জল কোনও কিছুরই অভাব নেই। তার বাসস্থানেরও যোগ্য। কারণ জঙ্গলের সঙ্গে যে 'লাটা ঝোঁপ' রয়েছে। যার নিচের অংশটা ফাঁকা থাকলেও ওপরটা ঢাকা। লুকিয়ে থাকার আদর্শ। তাছাড়া ওড়িশার এই বাঘিনী জিনাতের রেকর্ড বলছে ২৮ নভেম্বর সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে ঘরছাড়া হওয়ার পর আর পেছন ফিরে তাকায়নি সে। নেয়নি কোনও ইউটার্ন। তাহলে কি এখানেই ডেরা বাঁধবে একেবারে নিজের মুডে চলা জিনাত? সেই রবিবার থেকে রাইকা পাহাড়ে ৪ দিন পার হয়ে যাওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে ওই ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষ সহ অরণ্য ভবনের। এদিকে এদিন সন্ধ্যা ছটার পর থেকেই ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়। যা জিনাতের পক্ষে আরও অনুকূল হয়ে বাঘবন্দি অভিযানে প্রতিকূলতার মুখে পড়ে সিমলিপাল ও সুন্দরবন প্রকল্প কর্তৃপক্ষের আধিকারিকরা।

বাঘিনী আতঙ্কে শুনশান ঝাঁড়া-ভাঁড়রি টিলা ও রাইকা পাহাড়ের মাঝে থাকা রাস্তা। বুধবার। ছবি: অমিতলাল সিং দেও।

তবে রাজ্যের মুখ্য বনপাল (দক্ষিণ-পশ্চিম চক্র) বিদ্যুৎ সরকার বলেন, "যখন কোনও কাজে বারবার প্রতিবন্ধকতা আসে তখন কিন্তু সাফল্য দ্রুত আসে। একদিকে খাড়া পাহাড়। দুর্গম এলাকা। শ্যাডো জোন। স্যাটেলাইট ব্যবস্থাপনায় বাঘের গলায় থাকা রেডিও কলারের মাধ্যমে হাই ফ্রিকোয়েন্সি এন্টেনাতেও লোকেশন মিলছে না। এমনকি বারিপোদার হেডকোয়ার্টার থেকে রিয়েল টাইম মনিটরিংও আসছে না সিগন্যাল। একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর যে খবর আসার কথা তা মিলছে না। তারপর আবার বৃষ্টি। আজ নতুন ভাবে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে।" তবে হাল ছাড়েননি সিমলিপাল ও সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিক ও কর্মীরা। সন্ধ্যার পর থেকে ঝিরঝিরে বৃষ্টির মধ্যেও বাঘ বন্দি অভিযান বহাল থাকে। এবং তা চলছে ধারাবাহিকভাবেই।

সিমলিপাল ও সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঘের ফুলমিল বলতে ৭৫ পাউন্ড অর্থাৎ ৩৫ কিলোগ্রাম। এই খাবার তারা একবারে গ্রহণ করতে পারে। যেভাবে মঙ্গলবার ভোর থেকে পাঁচটা ছাগলকে ছিঁড়ে খুবলে খেয়েছে তাতে তার ফুল মিল হয়ে গিয়েছে। ফলে আর নড়ন-চরন নেই। মুখ্য বনপালের কথায়, "এদিন রিয়েল টাইম মনিটরিং ব্যবস্থাপনায় একটি নির্দিষ্ট সময়ে যে সিগন্যাল রিসিভ হয়েছে তার সংখ্যা খুবই কম। এর থেকে আন্দাজ করা যাচ্ছে বাঘিনী এদিন বেশিরভাগ সময়ই গুহাতেই বিশ্রাম নিয়েছে।" কংসাবতী দক্ষিণ বনবিভাগ বলছে, বাঘ সাধারণত এক রাতে ২০ কিমি হাঁটতে পারে। গত ২৮ নভেম্বর জিনাত সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে ঘরছাড়া হওয়ার পর প্রতিদিন রাতে ১২ কিমি পর্যন্ত চলাচল করছিল। কিন্তু তা থমকে গিয়েছে রাইকা পাহাড়ে এসে। এখন ফি দিন তার চলাচল তিন কিমির মধ্যে। তবে মঙ্গলবার ও বুধবার সংখ্যাটা আরও কম। রিয়েল টাইম মনিটরিং-র মাধ্যমে এদিন রাতে রাইকা পাহাড়ে সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষের কাছে এই তথ্য আসার পর বাঘবন্দি অভিযান নিয়ে যেন নতুন করে চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন তারা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ঠিক সেই ভাবেই গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয় দুটো মহিষ, একটি ছাগল।
  • ঠিক তার পাশেই খাঁচা যুক্ত গাড়িতে শরীরে লতাপাতা জড়িয়ে ক্যামোফ্লাজ হয়ে ঘুমপাড়ানি গুলি করা দুই শুটার।
  • সেই সঙ্গে ৮টা ট্র্যাপ ক্যামেরা।
Advertisement