অভিরূপ দাস: জন্ম থেকেই হৃদয়ে ফুটো। চিকিৎসা পরিভাষায় যে অসুখের নাম ভেন্ট্রিকুলার সেপ্টাল ডিফেক্ট। হৃদয়ের নিচের দুই প্রকোষ্ঠের মধ্যে কোনও যোগাযোগ ছিল না। গুরুতর অসুস্থ একরত্তিকে নিয়ে দিশেহারা অবস্থা হয়েছিল পরিবারের। সেই শিশুই নতুন জীবন পেল মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে৷
করোনা (Coronavirus) আবহেই দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেন মেদিনীপুরের কেরানিতলার বাসিন্দা। সদ্যোজাতর নাম রাখেন অঞ্জলি। পাঁচ মাস বয়স থেকেই সর্দিকাশি অঞ্জলির। কোনও ওষুধেই তা কমছিল না। স্থানীয় হাসপাতালে দেখিয়েও উপকার মেলেনি। দ্রুত শিশুটিকে নিয়ে আসা হয় দক্ষিণ কলকাতার (South Kolkata) মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে (Medica Super Speciality Hospital)। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন একরত্তির হার্টের সেপ্টাম (পেশী দিয়ে তৈরি দেওয়াল যা হার্টের দুটি চেম্বার কে আলাদা করে) ঠিক ভাবে তৈরি হয়নি।
[আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় দেশে ফের বাড়ল Corona সংক্রমণ, সেপ্টেম্বর থেকেই টিকা পেতে পারে শিশুরা]
ছোট্ট একটা গর্ত রয়েছে হৃদযন্ত্রে। সাধারণত এ অসুখ জন্মগত। চিকিৎসকদের মতে ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে জন্মগত কারণেই এই সমস্যা দেখা যায়। বাচ্চাটিকে যখন প্রথম ওই বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৫ মাস। এত অল্প বয়সে হার্ট মেরামত করার অস্ত্রোপচারে জীবনের ঝুঁকি অনেক। সাধারণত তিন/চার বছর বয়সে অস্ত্রোপচার করাই শ্রেয়। কিন্তু শিশুটির ক্ষেত্রে অত দেরি করলে প্রাণের ঝুঁকি ছিল। গত ২১ জুন করোনা আবহেই জটিল অস্ত্রোপচার করে শিশুর প্রাণ বাঁচালেন চিকিৎসকরা। অস্ত্রোপচার টিমে ছিলেন শিশুদের কার্ডিওলজিস্ট ডা. অনিল কুমার সিংঘি, কার্ডিও থোরাসিক ভাস্কুলার সার্জন ডা. মৃণাল বন্ধু দাস, আইটিইউ টিমের ডা. দীপাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, ডা. অর্পন চক্রবর্তী। আপাতত বিপন্মুক্ত ওই শিশু। তাকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে পেরে খুশি চিকিৎসকরা।