অর্ণব আইচ: দুজনের পরিচয় হয়েছিল বিবাহের ওয়েসাইটে। তারই জেরে ঘনিষ্ঠতা। নিজেকে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্তা পরিচয় দিয়ে এক বিএড ছাত্রীকে ধর্ষণ। এমনকী, অভিযুক্ত যুবক তার ‘ভাবী স্ত্রী’র অশ্লীল ছবি সোশাল মিডিয়ায় আপলোড করানোর হুমকি দিয়ে ক্রমাগত ব্ল্যাকমেলও করে বলে অভিযোগ। ওই যুবককে গ্রেপ্তার করেছেন উত্তর কলকাতার সিঁথি থানার পুলিশ আধিকারিকরা।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ওই যুবকের নাম দীপাঞ্জন রায়। চার বছর আগে ওই তরুণী ছাত্রী ও ওই যুবক দুজনই একটি বিবাহ সাইটে নিজেদের পরিচয় আপলোড করেন। সেই সূত্র ধরে দীপাঞ্জনের সঙ্গে ছাত্রীর পরিচয় ও যোগাযোগ হয়। দীপাঞ্জন নিজেকে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি দপ্তরের কর্তা বলে পরিচয় দেয়। সিঁথি এলাকার বাসিন্দা ওই ছাত্রীর সঙ্গে কয়েকবার ফোনে কথা বলে খড়গপুরের বাসিন্দা দীপাঞ্জন। সে কলকাতায় এসে ওই তরুণীর সঙ্গে দেখা করে। ক্রমে দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা হয়। দুজন কয়েকটি জায়গায় একসঙ্গে ঘোরাঘুরিও করেন।
[আরও পড়ুন: গভীর রাতে হিরণের আপ্ত সহায়কের বাড়িতে পুলিশি হানা, ‘ষড়যন্ত্র’, দাবি বিজেপি প্রার্থীর]
কয়েক মাস আগেই হঠাৎ ওই তরুণীর পরিবারের লোকেরা কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে খবর নিয়ে জানতে পারেন যে, তাঁদের হবু জামাই আদৌ সরকারি কর্তা বা আধিকারিকও নয়। একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মচারী সে। এই তথ্য যাচাই করার পরই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তরুণীর। তিনি এই ব্যাপারে হবু স্বামীকে প্রশ্ন করতেই সে প্রথমে প্রশ্ন এড়িয়ে যায়। এর পর সে অভব্য আচরণও শুরু করে। দু’জনের মধ্যে সম্পর্কে চিড় ধরে। গত প্রায় চার বছর ধরে ঘনিষ্ঠতা ও বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরির সুযোগ নিয়ে ওই তরুণী ছাত্রীর অশ্লীল কিছু ছবি ও ভিডিও তুলে রেখেছিল ওই যুবক। সরল বিশ্বাসে তরুণীও তখন ‘হবু স্বামী’কে বারণ করেননি। কিন্তু যুবকের আসল পরিচয় জানার পর বিয়েতে নারাজ হন তরুণী। উলটোদিকে, যুবকও বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। যুবতী বেঁকে বসলে তাঁর অশ্লীল ছবি ও ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার নাম করে প্রথমে হুমকি দিতে শুরু করে। এর পর ব্ল্যাকমেল করে টাকা আদায় করতে থাকে।
এই ব্যাপারে তরুণী সিঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। সম্প্রতি তরুণী শিয়ালদহ আদালতে গোপন জবানবন্দি দেন। এর পরই পুলিশ জানতে পারে যে, তরুণী ওই যুবকের যৌন অত্যাচারের শিকার। পুলিশ তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে মামলায় ধারা যোগ করে। খড়গপুরে তল্লাশি চালিয়ে বাড়ি থেকে দীপাঞ্জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতর মোবাইল আটক করে তাকে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।