অর্ণব আইচ: মুখে শিল্ড, শরীরে অ্যাপ্রন। রীতিমতো স্বাস্থ্যকর্মী বা 'কোভিড ওয়ার্কার'-এর ছদ্মবেশে পর পর জামতাড়ার বাড়িগুলিতে হানা দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। তাতেই মিলল সাফল্য। পুলিশের হাতে ধরা পড়ল ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ার সাত 'সাইবারওয়ালা'।
পুলিশ জানিয়েছে, কখনও নিজেদের ব্যাংক কর্মী পরিচয় দিয়ে ওটিপি জেনে, আবার কখনও KYC আপডেট করার নামে জালিয়াতি করত ঝাড়খণ্ডের জামতারা গ্যাংয়ের সদস্যরা। এলাকার বাসিন্দাদের কাছে তারা পরিচিত 'সাইবারওয়ালা' নামে। এদের মধ্যে কেউ বা ফোন করত, আবার কেউ পাঠাত মেসেজ। কেউ নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রাখত জালিয়াতির টাকা।
[আরও পড়ুন: বিশ্বভারতী কাণ্ডে হস্তক্ষেপ কলকাতা হাই কোর্টের, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চাইল আদালত]
কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স-এর এক বাসিন্দা অভিযোগ জানান, ব্যাংক কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে ৬ লক্ষ টাকা তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেয় তারা। এর মধ্যে দেড় লাখ টাকা আটকিয়ে তাঁকে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়েছিল। একই পদ্ধতিতে এক মহিলার কাছ থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল ৪ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা। সেই ক্ষেত্রে আটকানো সম্ভব হয়েছে এক লাখ টাকা। এই বিষয়ে উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।
লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের ব্যাংক জালিয়াতি শাখার আধিকারিকরা বুঝতে পারেন যে এই কীর্তি জামতাড়া গ্যাংয়ের। কিন্তু তাদের শনাক্ত করতে সময় লেগে যায়। এছাড়াও তাদের গ্রেপ্তার করাও সহজ নয়। কারণ, পুলিশ আসার খবর দূর থেকে পেয়ে যায় তারা। সেই কারণেই গোয়েন্দাদের নিতে হয় ছদ্মবেশ। ঝাড়খণ্ডের নেমপ্লেটের গাড়ি নিয়ে দিনদুপুরেই তাঁরা হানা দেন জামতাড়ার কয়েকটি গ্রামে। মুখে মাস্ক ও শিল্ড, শরীরে অ্যাপ্রন পরে স্বাস্থ্যকর্মী সাজেন গোয়েন্দারা। করোনা পরীক্ষার নাম করে বাড়িগুলিতে গিয়ে হাজির হন। একেবারে বাড়ির ভিতরে ঢুকে যান তাঁরা। সেখান থেকে বের করে নিয়ে আসা হয় জালিয়াতদের। এর আগে এই পদ্ধতিতে জামতাড়ার দুই মাথাকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। গত দুই মাসের মধ্যেই গোয়েন্দাদের হাতে জামতাড়ার মোট নয় জালিয়াত গ্রেপ্তার হয়েছে। তাদের জেরা করে বাকিদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।