shono
Advertisement

Breaking News

পেট থেকে বের হল রাক্ষুসে টিউমার, এক বছর পর খাবার খেলেন চৈতন্য

শীর্ণকায় রোগীকে OPD-তে দেখে আঁতকেই উঠেছিলেন চিকিৎসকরা। তারপর...
Posted: 11:00 AM Aug 28, 2021Updated: 11:00 AM Aug 28, 2021

অভিরূপ দাস: অসহ্য যন্ত্রণা তলপেটে। শীর্ণকায় রোগীকে OPD-তে দেখে আঁতকেই উঠেছিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের (Calcutta Medical College) চিকিৎসকরা। প্রায় একবছর ধরে কিছুই খেতে পারছিলেন না চৈতন্য সাহা (৪৬)। উত্তর ২৪ পরগণার বীজপুর থানার হালিশহরের বাসিন্দা প্রথমটায় ভেবেছিলেন তাঁর খাবারে অরুচি হয়েছে। একাধিক স্থানীয় ডাক্তারকে দেখান। গাদাগুচ্ছের হজমের ওষুধও খেয়েছিলেন। কিন্তু বছর ঘুরতে চললেও সমাধান হয়নি সমস্যার। না খেয়ে খেয়ে কঙ্কালসার চেহারা হয়েছিল চৈতন্য সাহার। সে সমস্যাই মিটল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। পেট থেকে বেরোল বোল্ডার আকারের মাংসপিণ্ড। ওজন প্রায় সাড়ে পাঁচ কেজি।

Advertisement

OPD-তে রোগীর চেহারা দেখেই সন্দেহ হয়েছিল ডাক্তার ধৃতিমান মৈত্রর। ব্রেস্ট এন্ডোক্রাইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রোগীর তলপেটের সিটি স্ক্যান করানো হয়। করা হয় সিটি গাইডেড নিডল বায়োপসি। চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন পেটের অভ্যন্তরের রাক্ষুসে ওই টিউমার আদতে রেট্রোপেরিটোনিয়াল সারকোমা (Retroperitoneal Sarcoma)। এক ধরণের ক্যানসার! লম্বায় ৪০ সেন্টিমিটার, চওড়ায় ৩৫ সেন্টিমিটার, অতিকায় ওই টিউমার গোটা পেটের সবটুকু জায়গা নিয়ে নিয়েছিল। পিত্তথলি, যকৃৎ, পাকস্থলীকে ঠেলে পাঠিয়ে দিয়েছিল এক কোণায়।

ছবি -প্রতীকী

[আরও পড়ুন: বালিবোঝাই চলন্ত লরিতে আগুন, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ব্যাপক যানজট]

চুপসে যাওয়া পাকস্থলীর কারণেই খেতে পারছিলেন না রোগী। তলপেটের ডানদিকের রেট্রোপেরিটোনিয়াম অংশ থেকে ডালপালা মেলেছিল টিউমারটা। ডা. মৈত্রর জানান, টিউমারটি (Tumor) আকারে এতটাই মারাত্মক তার চাপে নিজের অবস্থান থেকে ডান দিকের কিডনিটিও সরে গিয়েছিল। এত বিশাল একটা টিউমার শরীর থেকে বাদ দিতে গেলে প্রচুর রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা থাকে। সময়ও লাগে ৫ ঘন্টা। দীর্ঘদিন ধরে না খেয়ে থাকা ওই রোগীর শরীর সেই ধকল সহ্য করতে পারবে কি না তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়।

অত্যাধুনিক লিগাসিওর প্রযুক্তি ব্যবহার করে অস্ত্রোপচার করেন ডা. ধৃতিমান মৈত্র। অস্ত্রোপচারে ডা. ধৃতিমান মৈত্রর সঙ্গে ছিলেন ডা. রৌণক নন্দী, ডা. শতক্রতু বর্মন, ডা. হেমাভ সাহা, ডা. অন্বেষ বিশ্বাস, ডা. অন্তরীপ ভট্টাচার্য। লিগাসিওর প্রযুক্তিতে সময় লাগে মাত্র দু’ঘন্টা। এই প্রযুক্তিতে বাইপোলার ইলেকট্রো সার্জিক্যাল ডিভাইস ব্যবহার করা হয়। লো ভোল্টেজে উচ্চ মাত্রায় কারেন্ট দেওয়া হয় ক্যানসারের কোষ ধ্বংস করতে। অস্ত্রোপচারের সময় বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে ধমনীগুলোকে ৪ থেকে ৭ সেকেন্ডের মধ্যে ‘সিল’ করে দেওয়া যায়। এতে আটকানো যায় রক্তক্ষরণ। অস্ত্রোপচারের পর আপাতত সুস্থ রোগী। ডা. মৈত্র জানিয়েছেন, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ জড়িয়ে ছিল টিউমারে। রোগী ভাগ্যবান যে কোনও অঙ্গের গায়েও এতটুকু আঁচড়ও লাগেনি।

[আরও পড়ুন: মাস্ক না পরলে পুজোর বাজারে কেনা-বেচা বন্ধ, জানিয়ে দিলেন Firhad Hakim]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement